মুম্বই: বয়স ৭০। ব্যাংককে পড়াশোনা করার পর বিবাহ সূত্রে মুম্বইতেই দীর্ঘদিনের বাস। স্বামীর অফিসের আর সন্তানের স্কুলের টিফিন বানানোতেই সীমাবদ্ধ ছিল জীবন। সংসারের বাইরে আর কিছু করার ইচ্ছে থাকলেও সময় করে উঠতে পারেননি কোনও দিন। তবে ইচ্ছেটা ছিল। ম্বইয়ের বাসিন্দা প্রতিভা কানোই ভাবতেন, ‘কত মহিলা মাসে অন্তত ১০ হাজার টাকা রোজগার করছে, আমি তো শুধুই বসে বসে খাচ্ছি।’ বছর কয়েক আগে স্বামীর মৃত্যুতে সেই সংসারটাও অর্থহীন হয়ে যায় প্রতিভার কাছে। তবে জীবন যে এভাবে মোড় নেবে তা ভাবেননি তিনি। ৬৭ বছর বয়সে শুরু করলেন নিজের ব্যবসা। আর ৭০-এ কোটি টাকার ব্য়বসার মালিক তিনি।
৪ সন্তানের মা প্রতিভা কানোই বরাবরই রান্নার ব্যাপারে শৌখিন ছিলেন। কিন্তু তিনি কখনই ভাবেননি যে তাঁর হাতে তৈরি পিৎজাগুলি এতটা জনপ্রিয়তা পেতে পারে। কোভিডের সময় হঠাৎই মোড় ঘুরে যায় প্রতিভা দেবীর জীবনে। ওই সময় সবাই তাঁর পরিবারের সবাই ঠিক করেছিলেন বাইরে থেকে কিনে কিছু খাওয়া হবে না। এরই মধ্যে পুত্রবধূর জন্মদিন উপলক্ষে সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের জন্য তিনি বাড়িতে তৈরি করেছিলেন পিৎজা।
সেগুলি এতই সুস্বাদু ছিল যে তাঁর সন্তানেরা তাঁকে ব্যবসা শুরু করার পরামর্শ দেন। এরপর কার্যত স্বপ্ন সত্যি হয়। ২০২০ সালের মে মাসে তৈরি হয় ‘মমি’জ কিচেন’। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহর বাড়ে ব্যবসার, ক্রেতার সংখ্যাও বাড়ে। অর্ডার এত বেশি আসতে থাকে যে প্রতিভা দেবীকে একটি টিম তৈরি করতে হয়। এক সাক্ষাৎকারে প্রতিভা কানোই জানিয়েছেন, রান্নার সময় পরিচ্ছন্নতার দিকে খুব যত্ন নেন তিনি।
প্রথমদিকে তিনি তার গ্রাহকদের এক দিন আগে প্রি-অর্ডার করতে বলতেন। কিন্তু এখন তিনি চাহিদা অনুযায়ী অর্ডার নেওয়া শুরু করেছেন। মার্গারিটা, ফুংহি, ডায়েট পিৎজা- সবরকমই আছে তাঁদের মেনুতে। তিনি ময়দা এবং সস সহ সবটাই নিজের হাতে তৈরি করেন। তাঁর ক্রেতার তালিকায় শুধু বচ্চন পরিবারই নয়, রয়েছে মুম্বইয়ের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি। দেবেন্দ্র ফড়নবিস, প্রফুল প্যাটেল, সোনালি বেন্দ্রে, মধুর ভান্ডারকরের মতো ব্যক্তিরাও প্রতিভা দেবীর পিৎজার ভক্ত। বর্তমানে মুম্বই ছাড়াও কলকাতা ও বেঙ্গালুরুতেও আউটলেট আছে তাঁদের। প্রতিভা দেবী জানিয়েছেন, মাত্র ৪-৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। আর আজ তাঁর সংস্থার টার্ন ওভার প্রায় দেড় কোটি টাকা।