
মুম্বই: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে অস্থিরতা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গতকালই মার্কিন ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রার দাম ১৬ পয়সা কমেছে। এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া(আরবিআই) রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল। ফলে রেপো রেট ৫.৫ শতাংশই থাকছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কাঘাতের প্রভাব ভারতীয় অর্থনীতিতে পড়বে কি না, তাও জানাল আরবিআই।
বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার আর্থিক নীতি কমিটির(MPC) বৈঠক হয়। সেখানেই রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন আরবিআইয়ের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা।
প্রসঙ্গত, প্রতি ২ মাস অন্তর এমপিসি বৈঠক হয়। এর আগে জুন মাসের বৈঠকে রেপো রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আরবিআই। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সুদের হারে ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়, তাকে রেপো রেট বলে। আরবিআইয়ের রেপো রেটের উপর নির্ভর করেই ব্যাঙ্কগুলি গ্রাহকদের বিভিন্ন ঋণের উপর সুদের হার ঠিক করে। আরবিআই রেপো রেট বাড়ালে ব্যাঙ্কগুলিও গ্রাহকদের ঋণে সুদের হার সাধারণত বাড়ায়। অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া রেপো রেট বাড়ালে বাড়ি, গাড়ি ঋণে সুদের হার বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। এদিন আরবিআই রেপো রেট না বাড়ানোয় স্বস্তি পেলেন বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ঋণগ্রহীতারাও। রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের পর উৎসবের মরশুমে গৃহঋণের চাহিদা বাড়বে।
এদিন এমপিসি-র বৈঠকের পর আরবিআই গভর্নর বলেন, শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা জারি রয়েছে। বিষয়টির উপর নজর রাখছে এমপিসি। ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা এড়ানো গেলেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এখন চ্যালেঞ্জের মুখে বলে সঞ্জয় মালহোত্রা মন্তব্য করেন। তবে তাঁর মতে, ভারতীয় অর্থনীতির সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তিনি বলেন, “ভারতীয় অর্থনীতিতে মার্কিন শুল্কের বড় কোনও প্রভাব পড়বে বলে আমাদের মনে হয় না।”
চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশ থাকবে বলে আরবিআইয়ের অনুমান। যা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সত্ত্বেও ভারতীয় অর্থনীতির ধারাবাহিক বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে প্রতিফলিত করে। তার মধ্যে প্রথম কোয়ার্টারে সেই হার ৬.৫ শতাংশ, দ্বিতীয় কোয়ার্টারে তা ৬.৭ শতাংশ। তৃতীয় ও চতুর্থ কোয়ার্টারে তা যথাক্রমে ৬.৬ শতাংশ ও ৬.৩ শতাংশ থাকবে বলে অনুমান। সঞ্জয় মালহোত্রা বলেন, “ভারতের ডিজিপি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরবিআই।” চলতি অর্থবর্ষের চতুর্থ কোয়ার্টারে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি ৪ শতাংশের সামান্য উপরে থাকতে পারেও বলে তিনি মন্তব্য করেন।