
নয়া দিল্লি: আদানির ভিঝিনজাম বন্দরে পৌঁছল বিশ্বের সবথেকে বড় পরিবেশ-বান্ধব কন্টেনার জাহাজ। বুধবার কেরলে আদানি পোর্ট পরিচালিত ওই আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরে গিয়ে পৌঁছেছে MSC T rkiye নামে ওই জাহাজটি। এই প্রথমবার ওই বিশালাকার জাহাজটি ভারতের উপকূলে পৌঁছল।
ভারতের নৌবাণিজ্যের ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ভিঝিনজাম বন্দর ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে। বিশ্বের যে কোনও জায়গা থেকে এসে এই বন্দরে বড় আকারের কন্টেনার ভেসেল ভিড়তে পারে। সেই কারণেই এই বন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
MSC T rkiye নামে ওই জাহাজটি চালায় ‘মেডিটেরিয়ান শিপিং কোম্পানি’। এই জাহাজের দৈর্ঘ্য ৩৯৯.৯ মিটার, প্রস্থ ৬১.৩ মিটার আর গভীরতা ৩৩.৫ মিটার। ২৪,৩৪৬ ইউনিট পণ্য পরিবহন করতে পারে এটি। শুধুমাত্র আকারে বড় তাই নয়, MSC T rkiye-এর আর একটি বিশেষত্ব হল, এটি পরিবেশ-বান্ধব। যাতে জ্বালানি বেশি না পোড়ে, পরিবেশে যাতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সে সব কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই জাহাজে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে কার্বণ নিঃসরণও হয় অনেক কম। এটিতে রয়েছে লাইবেরিয়ার পতাকা। ২০১৫ সালে ভিঝিনজাম বন্দর চালু হয়। এই বিশালাকার জাহাজ পৌঁছনোয় এই বন্দর তার লক্ষ্যের পথে আরও কিছুটা এগোল।
APSEZ পরিচালিত গভীর সমুদ্র বন্দরটি ভারতের প্রথম মেগা ট্রান্সশিপমেন্ট কন্টেনার টার্মিনাল। এটি আন্তর্জাতিক শিপিং রুটের সবথেকে কাছে অবস্থিত এবং ভারতীয় উপকূলরেখার একেবারে মাঝামাঝি অবস্থান করছে। ইউরোপ, পারস্য উপসাগর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পশ্চিমের দেশগুলির সঙ্গে সংযোগকারী এই বন্দর পূর্ব-পশ্চিম শিপিং চ্যানেল থেকে মাত্র ১০ নটিক্যাল মাইল (১৯ কিমি) দূরে অবস্থিত।
২০ মিটার গভীরতা সম্পন্ন এই বন্দরটিতে খুব কম ড্রেজিং-এর প্রয়োজন হয়। ভিঝিনজাম বন্দর মেগাম্যাক্স কন্টেনার জাহাজ রাখতে পারে। প্রথম ধাপে এর ধারণক্ষমতা রয়েছে ১০ লক্ষ টিইইউ, পরবর্তী ধাপে আরও ৪.৫ লক্ষ টিইইউ যোগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
ভিঝিনজাম বন্দরের উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য আদানি গ্রুপের সঙ্গে কেরলা সরকারের একটি ৪০ বছরের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৮ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা সেই চুক্তি। সম্পূর্ণভাবে চালু হয়ে গেলে, এটি ভারতের কন্টেনার ট্রান্সশিপমেন্ট চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ করতে পারবে। ফলে দুবাই, কলম্বো এবং সিঙ্গাপুরের মতো সমুদ্র বন্দরের উপর নির্ভরতা কমবে ভারতের।