SIR in Bengal: বিএলও-দের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হল BLO অধিকার মঞ্চের নেত্রীকে
BLO: বিএলও অধিকার মঞ্চের নেত্রী সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "যেখানে নির্বাচন কমিশন আমাদের ভরসা দিচ্ছে, সেখানে জেলার আধিকারিকরা আমাদের বিভিন্নভাবে চাপে ফেলছেন। এখানে অনেক বিএলও ভয়ে আছেন, হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের ভয় কাটানোর জন্যই মেসেজটি আমি গ্রুপে শেয়ার করেছিলাম।"

পুরুলিয়া: একাধিক দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বিএলও-দের বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সিইও-র সঙ্গে বিএলও-দের প্রতিনিধি দলের অন্যতম মুখ তিনি। বিএলও অধিকার মঞ্চের সেই নেত্রী সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বিএলও-দের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ দেওয়া হল। এই নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের ১৯৬ নম্বর বুথের এই বিএলও।
কোনও আগাম বার্তা ছাড়াই বিএলও-দের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিএলও অধিকার মঞ্চের নেত্রী সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর অভিযোগ, কোনও নোটিস ছাড়াই তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এই কারণ জানতে ফোন করলেও প্রথমে ফোন ধরেননি এইআরও থেকে ইআরও। পরে ফোন ধরে বলা হয়, নিয়ম না মানার জন্যই তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার। বিএলও অধিকার মঞ্চের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও ধরনা দেন বিএলও অধিকার মঞ্চের নেতা নেত্রীরা। সেই আন্দোলনে ছিলেন পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের ১৯৬ নম্বর বুথের বিএলও সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শুক্রবার CEO দফতরে দাবি-দাওয়া জানানোর পর রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দিব্যেন্দু দাস হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা পাঠান। সেই পোস্টটি পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিএলও-দের গ্রুপে সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায় পোস্ট করেন। তারপরই সোমবার তাঁকে আচমকা বিএলও-দের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এরপরই বিএলও অধিকার মঞ্চের এই নেত্রী পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের কাজে যুক্ত বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। বাদ দেওয়ার সঠিক কারণ জানতে পারেননি। তারপর তিনি ইআরও (সদর মহকুমাশাসক)-র সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, তাঁর ফোন প্রথমে ধরেননি ইআরও। পরে ফোন করে জানানো হয়, তিনি নিয়ম মানছেন না। তাই তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিএলও-দের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ার জন্য সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকা ইআরও তথা সদর মহকুমাশাসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, “যেখানে নির্বাচন কমিশন আমাদের ভরসা দিচ্ছেন। সেখানে জেলার আধিকারিকরা আমাদের বিভিন্নভাবে চাপে ফেলছেন। এখানে অনেক বিএলও ভয়ে আছেন। হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের ভয় কাটানোর জন্যই ওই মেসেজটি আমি গ্রুপে শেয়ার করেছিলাম। এতেই নাকি আমি নিয়ম ভঙ্গ করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “জেলার আধিকারিকরা চাপ দিচ্ছে বলেই আজকে এই অবস্থা হয়েছে। আমি আন্দোলন করছি বলেই কি উনি ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে বাদ দিয়েছেন? আমি বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। সিইও দফতর থেকে আমাদের এক রকম বলা হচ্ছে, আর জেলার আধিকারিকরা আমাদের সম্পূর্ণভাবে চাপে ফেলে হেনস্থা করছে। এর জন্যই বিএলও-রা মারা গিয়েছেন। এমনকি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এই পরিস্থিতি চললে আগামিদিনে আমার কী হবে আমি জানি না।”
তিনি আরও বলেন, “গত দু’দিন আগে একটি অ্যাপে একটি রিভেরিফাই-র অপশন দেওয়া হয়। সেখানে নামের অসঙ্গতি থাকলে সেগুলো রিভেরিফাই করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সারাদিন ধরে আধিকারিকরা কিছুই বলতে পারেননি। সন্ধের পর বলেন, ‘নো একশন রিকোয়ার্ড’ করে দিন। যদি কোনও সমস্য হয়, এর জন্য পুরো দায় বিএলও-দের উপর চাপানো হচ্ছে। প্রচণ্ডভাবে মানসিক চাপ দেওয়া হচ্ছে আমাদের উপর। বিএলও-দের স্বার্থে আন্দোলন করছি বলেই আমাকে রিমুভ করা হল গ্রুপ থেকে। ওঁরা কি চান না আমরা আন্দোলন করি?”
সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ নিয়ে পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের ইআরওকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, এই বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।
