KMC Election 2021: ‘বৃদ্ধতন্ত্রের’ তকমা সরিয়ে বিলীন বামেদের তুরুপের তাস কনিষ্ঠ দুই ‘লাল সেবক’, চেনেন কি?

CPIM: ২ নম্বর ওয়ার্ডের দেবলীনা সরকার, ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের তনুশ্রী মণ্ডল, ৯৫ নম্বরে অন্বেষা ভৌমিক, ৮৩ নম্বরে অর্করঞ্জন ভট্টাচার্য। এঁরা সকলেই ভলান্টিয়ার্স, সকলেই এবার পুরভোটের প্রার্থী।

KMC Election 2021: 'বৃদ্ধতন্ত্রের' তকমা সরিয়ে বিলীন বামেদের তুরুপের তাস কনিষ্ঠ দুই 'লাল সেবক', চেনেন কি?
প্রচারে দুই নবীন সিপিএম প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 28, 2021 | 7:47 PM

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: তাঁরা এখনও পড়াশোনা করছেন। ছাত্র রাজনীতির গন্ধ এখনও গায়ে মাখা। তার মাঝেই মূল ধারার রাজনীতিতে পা দিয়েছেন। আবার তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আনতে দলও তাঁদের প্রার্থী করেছে। হাতে সময় কম। পৌঁছতে হবে আমনাগরিকের কাছে। তাই পড়াশোনা আর প্রচারের সময় ম্যানেজ করতে হচ্ছে সিপিএমের (CPIM) দুই প্রার্থী উপনীতা পাণ্ডে (Upanita Pandey) আর অন্বেষা দাসকে (Anyesha Das)। একুশের পুরভোটে নবীন এই দুই প্রার্থী লড়ছেন যথাক্রমে ৪৯ নম্বর এবং ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে।

উল্লেখ্য, একুশের কলকাতা পুরভোটের ময়দানে এমন ৪৩ জনকে প্রার্থী করেছে নামাল সিপিএম (CPIM)। যাঁদের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে। এঁদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ উপনীতা। যিনি এবার সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যেও কনিষ্ঠতম পুরপ্রার্থী।

কে এই উপনীতা?

কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী উপনীতা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী। পুরভোটের প্রচার যেমন চলছে সমানতালে চলছে পড়াশোনাও। কারণ, এখন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল পরীক্ষা! চলছে তার প্রস্তুতি, আবার পরীক্ষার মধ্যেই তিনি চুটিয়ে করছেন ভোট প্রচারও। ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের অলিগলি চষে ফেলছেন উপনীতা।

পড়াশোনার মধ্যে কেমন সামলাচ্ছেন প্রাচার? শিক্ষাই সমাজ বদলের বীজ বপন করে। তাই তাকে ব্যতি রেখে রাজনীতি করা যায় না বলেই বিশ্বাস করেন শিয়ালদহ বৈঠকখানা রোডের বাসিন্দা। ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়ের এই প্রাক্তনী বিশ্বাস করেন, তাঁর বয়সী ছাত্রছাত্রীরা সব ‘ম্যানেজ’ করতে পারে। তাই পরীক্ষার পড়ার ব্যস্ততার সঙ্গে ভোট প্রচারের সময় বের করতে তাঁর কোনও অসুবিধা হয় না। ‘পড়াশোনায় ব্যস্ত আছি’- এই অজুহাতে সময় না দিলে এলাকার মানুষ তো আস্থাই দেখাতেই পারবে না। তাই নিজের জন্য সময় কমিয়েই বামের দিকে স্টিয়ারিং ঘোরানোর সংকল্পে নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন বাম রাজনীতির পরিবারে বেড়ে ওঠা এই তরুণী।

প্রচারের মাঝে সময় পেলেই বইর জগতে ডুব অন্বেষার:

আর ডানপন্থী প্রভাবিত পাশের ওয়ার্ড ৪৮ নম্বরেও পক্ককেশ সরিয়ে সিপিএম আস্থা রেখেছে আরেক ছটফটে, ডাকাবুকো তরুণীর উপর। তিনি অন্বেষা দাস। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিউম্যান রাইটস নিয়ে গবেষণারত বউবাজার ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মোড়ের বাসিন্দা এই তরুণী রেড ভলান্টিয়ার্সের অংশ হয়ে করোনার কঠিন সময়ে অক্সিজেন নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন অসুস্থ মানুষদের বাড়িতে।

প্রথমে ডায়েশসন স্কুল থেকে পড়াশোনা। তার পরে ইঞ্জিনিয়ারিং। তাল মিলিয়ে চলত ছাত্র রাজনীতি। তার সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে মূল ধারার রাজনীতি। দুইয়ের মিশেলের সঙ্গে তাঁর ওয়ার্ডে থাকা ১৬ হাজার ভোটারের কাছেই যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা নেত্রী অন্বেষা। তাতে তো পড়াশোনায় ছেদ পড়ছে! বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে গরহাজির হতে হচ্ছে! ক্লাস কামাই করলেও পড়ায় খামতি নেই। প্রচারের ফাঁকে ফাঁকে সময় বের করে বসে পড়ছেন বই নিয়ে। সেটা এক ঘণ্টার জন্য হলেও।

আর এসব সম্ভব হচ্ছে কমরেডদের সহযোগিতাতেই, অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা ঝরে পড়ে অন্বেষার গলায়। কারণ, তিনি পৌঁছতে না পারলে এলাকার সহকর্মীরাই পৌঁছে যাচ্ছেন অন্বেষার বার্তা নিয়ে। আর সে বার্তায় মানুষ ভরসা রাখবেন, আশাবাদী বছরের পঁচিশের অন্বেষা। এছাড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের দেবলীনা সরকার, ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের তনুশ্রী মণ্ডল, ৯৫ নম্বরে অন্বেষা ভৌমিক, ৮৩ নম্বরে অর্করঞ্জন ভট্টাচার্য। এঁরা সকলেই ভলান্টিয়ার্স, সকলেই এবার পুরভোটের প্রার্থী।

আরও পড়ুন: Kmc Election 2021: পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন আছে? হাইকোর্টে জানাতে হবে কমিশনকে