‘ক্ষমতা থাকলে আমাদের টাচ করে দেখাক’, ‘ভাইজানের’ বুক ফোলানো ভাষণের পর ভাঙড়ে ধুন্ধুমার
ওই সভা থেকেই সুর চড়িয়ে আব্বাস বলেন, ‘কারুর ক্ষমতা থাকলে টাচ করে দেখাক, বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করবেন। পুলিশ প্রশাসনকে বলছি আপনারা নিরাপত্তা না দিতে পারলে এলাকা ছেড়ে চলে যান, আমরা আমাদের মা-বোনেদের নিরাপত্তা দেব।’
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভোটে গরম বাংলায় সংযুক্ত মোর্চার তরফে ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান সেকুল্যার ফ্রন্ট (ISF) নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddiqui) গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, ব্রিগেডের ময়দান থেকে ‘ভিক্ষার’ বদলে ‘ভাগিদারী’ও দাবি করেছেন। মোদী-দিদির বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই খড়গহস্ত আব্বাস। এ বার বুধবার ভঙড়ের চন্দনেশ্বরের সভা থেকে ফের একবার বিজেপি ও তৃণমূলকে তীব্র ভাষায় বিদ্ধ করেন ভাইজান (Abbas Siddiqui)। নাম না করে ক্যানিং পূর্বের বিদায়ী বিধায়ক তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী শওকত মোল্লাকে মস্তান, মাফিয়া, সন্ত্রাসী বলেও তোপ দাগেন আব্বাস সিদ্দিকি।
আব্বাসের এই সভা শেষের পরেই খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় তৃণমূল (TMC) ও আইএসএফ (ISF) সমর্থকদের মধ্যে। ভাঙচুর করা হয় আইএসএফ (ISF) সমর্থকদের একাধিক বাড়ি। ঘটনার জেরে আহত হন দুই দলেরই একাধিক কর্মী। ভাঙচুর ও বিক্ষোভের ঘটনায় দুই পক্ষই ভাঙড় থানায় অভিযোগ দায়ের করে। আইএসএফ অনুগামীদের অভিযোগ, শাসক শিবির আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বাড়ি বাড়ি হামলা করে, ঘরদোর ভাঙচুর করে হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক কর্মীর মাথা।
তৃণমূলের (TMC) আবার পাল্টা দাবি, সহানুভূতি পেতে ইচ্ছে করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে পীরজাদার দল। বুধবার, দলীয় মিটিং থেকে ফেরার পথে অতর্কিতে আব্বাসের অনুগামীরা তৃণমূল কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলার জেরে আহত হন বেশ কিছু তৃণমূলকর্মী।
এ দিন, ভাঙড়ের বোদরা, বুড়ানগর, হরিশপুর-সহ একাধিক জায়গায় এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও আইএসএফ কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধ চলে। তৃণমূলের অভিযোগ, চন্দনেশ্বেরের সভায় আব্বাসের ‘নরম গরম’ বক্তৃতা শুনেই এলাকা দখল করতে উঠে পড়ে লাগে পীরজাদার দল। হামলা করতেও তারা পিছপা হয়নি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভাইজান অনুগামীরা।
বুধবার, চন্দনেশ্বরের সভা থেকে আব্বাস ঘোষণা করেন, কম সময়ের মধ্যে প্রতীক না মেলায় নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিস পার্টির খাম চিহ্নেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে আইএসএফ। এ দিন, সভা থেকে আব্বাস বলেন, ‘শাহিবুদ্দিন সিরাজি ক্যানিং পূর্বের প্রার্থী নন। প্রার্থী আব্বাস সিদ্দিকি। আমাকে দেখে ওকে ভোট দেবেন। আর ভাঙড়ের মানুষ চেয়েছেন বলেই আমার ভাই নৌশাদকে প্রার্থী করেছি।’
ওই সভা থেকেই সুর চড়িয়ে আব্বাস বলেন, ‘কারও ক্ষমতা থাকলে টাচ করে দেখাক, বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করবেন। পুলিশ প্রশাসনকে বলছি, আপনারা নিরাপত্তা না দিতে পারলে এলাকা ছেড়ে চলে যান, আমরা আমাদের মা-বোনেদের নিরাপত্তা দেব।’ এখানেই থামেননি ‘ভাইজান’। আগামী ২৮ মার্চ শওকাত মোল্লার খাসতালুক জীবনতলায় সভা করার কথা ঘোষণা করে আব্বাসের হুঁশিয়ারি, ‘কারও ক্ষমতা থাকলে আমাদের বাধা দিয়ে দেখাক। আমাদের ছেলেদের গায়ে হাত পড়লে পুলিশকে অনুরোধ করব ব্যবস্থা নেওয়ার।’
আরও পড়ুন: দিনহাটায় ৬ হেভিওয়েট নেতাকে শোকজ করল তৃণমূল