সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম এই বিখ্যাত নায়িকা, তাই সম্পর্ক ভাঙলেন নায়ক, তারপরের ঘটনা আরও দুঃখের
শিশমহলের কোণায় কোণায় আনারকালি ওরফে মধুবালার সৌন্দর্যের ছটা। আর বার বার উচ্চারিত হচ্ছে, সেই ঐতিহাসিক প্রেমের স্লোগান। পেয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া… পেয়ার কিয়া কোয়ি চোরি নেহি কি… মুঘল-এ-আজম ছবিতে নিজের প্রেমের ডঙ্কা বাজিয়ে ছিলেন মধুবালা।

সিনেপর্দায় সেই ঐতিহাসিক প্রেমের গান। শিশমহলের কোণায় কোণায় আনারকালি ওরফে মধুবালার সৌন্দর্যের ছটা। আর বার বার উচ্চারিত হচ্ছে, সেই ঐতিহাসিক প্রেমের স্লোগান। পেয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া… পেয়ার কিয়া কোয়ি চোরি নেহি কি… মুঘল-এ-আজম ছবিতে নিজের প্রেমের ডঙ্কা বাজিয়ে ছিলেন মধুবালা। উলটে বাবার ভয়ে চুপ করে ছিলেন দিলীপ কুমার। সিনেমার পর্দায় ১৯৬০ সালে এমনটা ঘটলেও, বাস্তবে কিন্তু অন্য ঘটনাই ঘটে। বাস্তবে দিলীপ নয়, বরং বাবার ভয়ে দিলীপের প্রেম অস্বীকার করেন মধুবালা। হ্য়াঁ, বলিউডের গুঞ্জনে রটেছিল এমনটাই। কিন্তু এই গল্পের রয়েছে আরেকটি দিকও। যা কিনা কম মানুষই জানেন। মধুবালার পরিবর্তে দিলীপ কুমারই নাকি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন। আর এর নেপথ্যের কারণ হল, মধুবালা সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম হওয়ায়!
কয়েকদিন আগেই জনপ্রিয় ফিল্ম সাংবাদিক ভিকি লালওয়ানিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মধুবালার বোন মুমতাজ জানান, ইন্ডাস্ট্রিতে রটে গিয়েছিল মধুবালাই আসলে দিলীপ কুমারের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙেন। কিন্তু এটা সত্যি নয়।
এই সাক্ষাৎকারে মুমতাজ আরও বলেন, আসলে আমার দিদি খুবই অসুস্থ ছিলেন। সেই সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন, মধুবালা কখনও মা হতে পারবেন না। এই কথা শোনা মাত্রই দিদিকে ছেড়ে দিয়েছিলেন দিলীপ কুমার। পরে অবশ্য অভিনেত্রী সায়রা বানুকে বিয়ে করেন। সায়রা খুবই ভালবাসেন। নিয়তি দেখুন, দিলীপ কুমার ও সায়রারও কোনও সন্তান নেই!

একদিকে ভাঙা হৃদয় ও আরেক দিকে কঠিন রোগ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন মধুবালা। চিকিৎসার পাশাপাশি, অভিনয় করছিলেন চুটিয়ে। কাউকে বুঝতে দেননি তাঁর অসুস্থতার কথা। ঠিক এই সময়ই মধুবালা সই করেন ‘চলতি কা নাম গাড়ি’ ছবিটি। তাঁর বিপরীতে কিশোর কুমার। এই জুটির ‘এক লড়কি ভিগি ভাগি সি’ গান তো এখনও বলিউডের অন্যতম প্রেমের গান। আর সেই গানের মতো কিশোর কুমারের প্রেমে পড়লেন মধুবালা।
তারপর হঠাৎ একদিন মধুবালার অসুস্থতা গুরুতর হয়ে উঠল। রোজই রক্ত বমি হতে শুরু করল তাঁর। বাবার সঙ্গে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে উড়ে গেলেন মধুবালা। কয়েকদিন বাদে কিশোর কুমারও গিয়েছিলেন সেখানে। ডাক্তার স্পষ্ট মধুবালাকে বলেছিলেন, সব ছেড়ে এখন বিশ্রাম নিন। এমনকী, মধুবালাকে লুকিয়ে কিশোরকে ডাক্তার বলেছিলেন, অভিনেত্রী আর বেশিদিন বাঁচবেন না। তাই যতদিন আছেন, ততদিন মধুবালাকে খুশি রাখার চেষ্টা করুন।
১৯৬০ সালে সব কিছু জেনেই মধুবালাকে বিয়ে করেন কিশোর কুমার। অভিনেত্রীর ভালবাসাকে সম্মান দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিয়তি অন্য কাহিনিই লিখেছিল মধুবালার কপালে। শেষ জীবনে মধুবালা একেবারেই বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে যান। নিজেকে ঘরবন্দি করে নেন। শুধু পাশে ছিলেন একমাত্র কিশোর কুমারই।
