TV9 বাংলা ডিজিটাল : পরিচালক অর্জুন দত্তের দ্বিতীয় ছবি ‘গুলদস্তা’ মানবিক সম্পর্কের গল্প বলে।মনের অলি–গলিতে আলো ফেলেছে এই ছবি।সম্পর্কের গল্প বলতে ভালবাসেন তরুণ পরিচালক অর্জুন দত্ত। পরিচালক আগের ছবি ‘অব্যক্ত’ তে মা–ছেলের গল্প বলেছিলেন।সম্পর্কের চড়াই–উতরাই ছিল।গুলদস্তাও তার ব্যতিক্রম নয়।তবে এই ছবিতে মনস্তাত্তিক বিশ্লেষণ যতটা না বেশি, তার চেয়ে অনেক বেশি ঘটনার ঘনঘটা।
এই ছবিতে তিনি এনেছেন তিন নারী চরিত্র। শ্রীরূপা (অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়), রেণু(দেবযানী চট্টোপাধ্যায়) ও অবাঙালি সেলস গার্ল ডলি (স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়)। প্রথম দু’জন উচ্চবিত্ত পরিবারের বউ, কিন্তু মনে তাদের সুখ নেই। শ্রীরূপার স্বামী অর্ণব পরকীয়াতে ব্যস্ত। অফিস কলিগের সঙ্গে তার প্রেম।শারীরিক ভাবে নিয়মিত মিলিত হয় তারা। স্বাভাবিকভাবেই শ্রীরূপার মনে সুখ নেই। রেণুর স্বামী বাইরে থাকেন, অসুস্থ শাশুড়ি আর উঠতি বয়সের ছেলের বিপথগামী হবার কারণে তার অশান্তি। এদের মধ্যে এসে পড়েন প্রসাধনী ‘রূপকেয়ার’ এর সেলস লেডি ডলি। ডলি উচ্ছল,হাসিখুশি।শুধু নিজের কোম্পানির প্রসাধনী বিক্রি নয়, ডলি বাড়তি উপহার দেন সমবেদনা, ভালবাসা, সহানুভূতি, বিশ্বাস ও ভরসা। এটা দিয়েই ডলি মন জয় করে নেন দুই মহিলার। ঠিক এই সময়েই আকাশ ভেঙে বাজটা পড়ে।একদিন হঠাৎ বেপাত্তা হন ডলি। ঘটনাক্রমে শ্রীরূপার ঘর থেকে একটি দামী গয়নারও হদিশ মেলে না। তাহলে কি ডলি গয়না চুরি করল? সন্দেহ দানা বাঁধে শ্রীরূপার মনে।খোঁজ খবর করতে গিয়ে দুই মহিলা আবিষ্কার করেন ডলির অন্য এক জীবন। সেটা জানতে হলে সিনেমাটা দেখতে হবে। ছবির সমাপ্তি দৃশ্যটি সত্যিই মনে রাখার মতো।
ডলির আগমন নিয়ে কিঞ্চিৎ ‘নাটক’ থাকলেও, তাঁকে অতি বিশ্বাস করে ফেলাটা খুবই তাড়াতাড়ি ঘটে যায়। ডলির ওষুধে ওরা প্রত্যেকেই সেরে ওঠেন– এটাও কিঞ্চিৎ কাকতালীয় মনে হয়। অফিস প্রেমিকার সঙ্গে বিরোধ, তার নতুন পুরুষ বন্ধু জোগাড় হওয়া, বেপথু তরুণের হঠাৎই মায়ের অসুস্থ হয়ে পড়ায় হৃদয়ের পরিবর্তন— সবকিছুই যেন বড় তাড়াতাড়ি ঘটে যায়।এবং ঘটনাগুলো খুবই সাজানো মনে হয়। তবে অভিনয়ে অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় কোনো খামতি রাখেননি। রেণুর ভূমিকায় খুবই সংযত ও স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেছেন দেবযানী এবং অনেকটাই পেরেছেন তিনি। তবে এই ছবির মধ্যমণি স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।স্বস্তিকা আবার নিজের জাত চেনালেন।কী সাবলীল তাঁর অভিনয়।তবে এই ছবির সঙ্গীত খুব একটা মনে দাগ কাটেনি।কিন্তু ক্যামেরার কাজ বেশ ভাল।সম্পর্কের গল্প বললেও প্রথম ছবি থেকে অনেকটাই আলাদা গুলদস্তা।এ–কথা ঠিক, অর্জুন নিজেকে ভেঙেছেন এই ছবিতে।