
‘ব্যাটল অফ গালওয়ান’ ছবির টিজার মুক্তি পাওয়ার তিন দিনের মাথায় এই বলিউড প্রজেক্ট নিয়ে তোপ দাগল চিনা সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’। বেজিংয়ের সরকারি মুখপত্র হিসেবে পরিচিত এই সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০২০ সালের জুনে গালওয়ান উপত্যকার ঘটনাকে ছবিতে ‘বিকৃত’ করে দেখানো হচ্ছে। এমনকী, জানা গিয়েছে, চিনের সোশাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা সলমন ও সলমনের এই নতুন ছবি নিয়ে নানা কুৎসাও রটাতে শুরু করেছেন।
গ্লোবাল টাইমস-এ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘তথ্য বিকৃতির জেরে বিতর্কে বলিউড ছবি ব্যাটল অফ গালওয়ান; কোনো অতিরঞ্জিত নাটক কোনও দেশের পবিত্র ভূখণ্ডে প্রভাব ফেলতে পারে না’। চিনা বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সলমন খান অভিনীত এই ছবিতে দেখানো ঘটনাপ্রবাহ বাস্তবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
প্রতিবেদনটিতে অত্যন্ত বিতর্কিতভাবে গালওয়ান সংঘর্ষে ভারতীয় সেনার শহীদ কর্নেল বিক্কুমল্লা সন্তোষ বাবুর আত্মত্যাগ ও বীরত্বকে ‘তথাকথিত কেন্দ্রীয় চরিত্র’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি দাবি করা হয়েছে, ছবিটির টিজার চিনা নেটনাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। তাঁরা এই ছবিকে ‘অতিরঞ্জিত’ এবং ‘নাটকীয়’ বলে বর্ণনা করেছে।
চিনা সংবাদপত্রের পক্ষ থেকে ২০২০ সালের ১৫ জুনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্য সম্পূর্ণভাবে ভারতকে দায়ী করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) লঙ্ঘন করে ভারতীয় সেনাই গালওয়ান উপত্যকায় ‘ইচ্ছাকৃতভাবে উস্কানি’ দিয়েছিল। এতে চিনা কর্মীদের জীবন বিপন্ন হয়েছিল এবং সীমান্ত স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়েছিল বলেও দাবি করেছে বেজিংয়ের এই সংবাদপত্র।
গালওয়ান সংঘর্ষে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ জন বীর জওয়ানকে হারানোর কথা জানিয়েছিল। কিন্তু গ্লোবাল টাইমস-এর দাবি, তৎকালীন চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল রেন গুয়োকিয়াং-এর বয়ান অনুযায়ী, ভারত নাকি হতাহতের সংখ্যা বাড়িয়ে বলেছে এবং আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করে চিনা সামরিক বাহিনীকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। বলিউডের এই যুদ্ধভিত্তিক ছবি মুক্তির আগেই চিনের এই আক্রমণাত্মক অবস্থান দুই দেশের কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উত্তাপকে যে আরও বাড়িয়ে দিল, তা বলাই বাহুল্য।