Anirban Bhattacharya: ‘রবীন্দ্রসদন মঞ্চে আমায় এসে মেরে যান’, শাসকদলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অনির্বাণ
Anirban Bhattacharya : নাট্যকর্মী তথা অভিনেতা অমিত সাহাকে মারধর ও কুৎসিত ব্যবহারের প্রতিবাদে শাসকদলের বিরুদ্ধে শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছেন প্রতিবাদ সভা। সরাসরি শাসকদলের উদ্দেশে আঙুল তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যও।
নাট্যকর্মী তথা অভিনেতা অমিত সাহাকে মারধর ও কুৎসিত ব্যবহারের প্রতিবাদে শাসকদলের বিরুদ্ধে শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছেন প্রতিবাদ সভা। সরাসরি শাসকদলের উদ্দেশে আঙুল তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যও। বেলেঘাটা পার্টি অফিসে নাট্যোৎসব করা জন্য আবেদন জমা দিতে গিয়ে ‘বিদূষক নাট্যমণ্ডলী’র নাট্য পরিচালক অমিত ও তাঁর সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় তৃনমূল নেতার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনারই পরিপ্রেক্ষিতে অনির্বাণের বক্তব্য, “আমি প্রতিবাদ করছি, আরো অনেকের সঙ্গে, এটা জেনেই, যে এই প্রতিবাদ ব্যর্থ হবে। যার গায়ে হাত উঠেছে, তার গায়ে আবার হাত উঠতে পারে শীঘ্রই, এবং যিনি হাত তুলেছে, তিনি তার সাহসে বলীয়ান হয়ে বাংলা মায়ের সুযোগ্য সন্তানের অনেকগুলো সার্টিফিকেট ঘরে বাঁধিয়ে রাখবেন। কে জানে হয়তো কালের অদ্ভুত নিয়মে একদিন বাংলার সংস্কৃতি মন্ত্রীও হয়ে যেতে পারেন, দল বদলালে হয়তো ভারতেরও। এটা বা এরকম কিছুই হয়তো হবে। আমি এই ঘটনাকে বুঝে নিতে চাইছি রাজনৈতিক বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে।”
অনির্বাণের এই প্রতিবাদ চিঠিতে উঠে এসেছে সদ্য অনুষ্ঠিত কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাকস্বাধীনতার স্বপক্ষে অমিতাভ বচ্চনের বক্তৃতা, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃণাবাহিনীকে শাহরুখের একহাত নেওয়ার প্রসঙ্গও। তিনি যোগ করেন, “তার কিছুদিন পরেই অমিত সাহা ও অরূপ খাঁড়া মার খেয়ে গেলেন, নাট্য উৎসব আয়োজন করার জন্য।একই রাজ্যে! কেন? কারণ অমিত সাহা ও অরূপ খাঁড়া পশ্চিমবঙ্গের বোধ করি একটি ভোটকেও ডিস্টার্ব বা পেট্রনাইজ করতে পারেন না। অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ খান পারেন। তাই, চলুন, আমরা নাটক ছেড়ে একটা মার খাওয়ার উৎসবের দিকে এগিয়ে যাই। আমরা রাজনৈতিক বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়াই। প্রতিটি অঞ্চলের পার্টি অফিসে আমরা আবেদন পত্র জমা দিই আমাদের নাটক অভিনয়ের দিন ও স্থান সমেত, আমাদের যেন এসে বেদম মার দেওয়া হয়, যেন বুঝিয়ে দেওয়া হয় হাড়ে হাড়ে যে ভোটকেন্দ্রিক গণতন্ত্রে অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ খান না হলে বেশি লাফাতে নেই। সারা ভারতবর্ষের সিনেমা ও থিয়েটার অভিনেতারা যেন জানতে পারেন, পশ্চিমবঙ্গে এক অভূতপূর্ব আনন্দযজ্ঞ শুরু হয়েছে, ভোট রাজনীতিতে কাজে আসে না, এমন শিল্পীদের মেরে ঠান্ডা করে দেওয়া হচ্ছে।” এই প্রথম রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ করতে গেল দেখা গেল অনির্বাণকে। তাঁর প্রতিবাদের ভাষা ধারালো, তীক্ষ্ণ। এখানেই কিন্তু থেমে যাননি তিনি। মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁর আগামী শো ১৫ই জানুয়ারি রবীন্দ্র সদন মঞ্চে। তাঁর বক্তব্য, “আমি অনির্বাণ। আমার এর পরের অভিনয় ১৫ই জানুয়ারি রবীন্দ্র সদন মঞ্চে। এসে মেরে যান। কারণ এই দিন এর অভিনয়ে ভোট রাজনীতির কোনো মুনাফা নেই, এমন ফালতু ঘটনা রাজ্যে প্লিজ একটাও ঘটতে দেবেন না, অনুরোধ।”
শুধু অনির্বাণই নয়, ফুলবাগানের ওই প্রতিবাদ সভায় সরাসরি হাজির না হয়েও প্রতিবাদ জানিয়েছেন, ঋদ্ধি সেনসহ অন্যান্য নাট্যকর্মীও। কেন নাট্যোৎসব করতে চেয়ে মার খেতে হবে? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সাম্প্রতিক অতীতে গোটা দেশ জুড়েই সংস্কৃতির সঙ্গে যেন বারেবারেই জুড়ে যাচ্ছে রাজনীতি। কখনও শাহরুখ খানের ছবি ‘পাঠান বিতর্ক’ আবার কখনও অরিজিৎ সিংয়ের শো’এর জায়গা বাতিল আবার কখনও বা নাট্যকর্মীকে হেনস্থার অভিযোগ— শিরোনামে জায়গা করে নিচ্ছে বারংবার। এর শেষ কোথায়? প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলেও।