অন্তরায় ভুলে ‘জীবনের উদযাপনে’ ফের মঞ্চে নান্দীকার নাট্য উৎসব

বাংলার নাট্যচর্চায় কি আগ্রহ হারাচ্ছে আম-বাঙালি? নান্দীকারের পরিসংখ্য়ান বলছে, গত ১ বছরে প্রায় ৯৩জন নতুন নাট্যশিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে তাঁদের দলে।

অন্তরায় ভুলে ‘জীবনের উদযাপনে’ ফের মঞ্চে নান্দীকার নাট্য উৎসব
মঞ্চে সোহিনী সেনগুপ্ত।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 04, 2020 | 8:48 AM

কলকাতা: করোনাকালে জীবন সংশয় হয়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষের দিননামচা। আর্থিক সংকট থেকে শুরু করে ভাইরাসের থাবা- জোড়া ফলায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল বঙ্গজীবন। লকডাউনের পর গতি ফিরেেছে বাংলার। তিলোত্তমার। কিন্তু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে কি? বুক ঠুকে তো বলা যায় না সেকথা। নিউ নরম্যালকে আপন করে জীবন ছুটছে। গলি থেকে হাইওয়েতে প্রবেশের চেষ্টায় আম আদমি।

আর এই মাস্ক-স্যানিটাইজারে মোড়া নতুন দৈনন্দিনে মানুষ যেভাবে নিজেকে অভিযোজিত করছে, সেই জীবনের উদযাপনকে ত্বরাণ্বিত করতেই অনুঘটক হিসেবে অবতীর্ণ হচ্ছে নান্দীকারের নাট্যউৎসব। ৩৭তম নাট্যউৎসবের থিমকে এক কথায় বলা যায়, জীবনের জয়গান।

আরও পড়ুন, দার্জিলিংয়ের জমজমাটে সৌরসেনী ও কোং

আগামি ১৯ ও ২০ তারিখ দুদিন ব্যাপী হবে নান্দীকারের নাট্যউৎসব। অন্যান্য বছর উৎসব হত ১০ দিন ব্যাপী। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য দিন কমানোর সিদ্ধান্ত। তার উপর ‘সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং’-য়ের কথা মাথায় রেখে এখন অ্যাকাডেমির ৩৫ শতাংশ আসনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। সংখ্যার হিসেবে, ৭০০-র বেশি আসনের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২৭০টি। আসন কমলেও, টিকিটের দাম একলাফে অনেকটা বাড়ানো হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন নান্দীকারের অন্যতম মুখ সোহিনী সেনগুপ্ত। কারন অবশ্যই বর্তমানে মানুষের পরিস্থিতি। দিনে দুটি করে শো। একটি বিকেল ৩টে থেকে। অন্যটি সন্ধে সাড়ে ৬টা থেকে।

Nandikar

এক নজরে দেখে নিন কোন কোন নাটক থাকবে চলতি বছরের উৎসবে।

নান্দীকার উৎসবেের সূচি

২৭০টি আসনের টিকিট বিক্রি করে কি নাট্য উৎসবের খরচটুকু ওঠা সম্ভব? সোহিনী সেনগুপ্ত-র জবাব, খরচ ওঠা দূরের কথা, আর্থিক লোকসানই হবে। শুধু টিকিট সংখ্যা কমই নয়। করোনাকালে নাট্যউৎসবের জন্য মেলেনি স্পনসরও।চলতি বছর অষ্টমীর সন্ধেয় অ্যাকাডেমিতে মঞ্্চস্থ হয়েছিল পাঞ্চজন্য। বিক্রি হয়েছিল ২৭০টি আসনেরই টিকিঠ। সেবারও লাভের মুখ দেখেনি নান্দীকার। তবে জীবনের জয়গান যাঁদের নাট্যউৎসবের ‘থিম সং’, তাঁদের কাছে আর্থিক লোকসানের বিষয়টি মুখ্য যে নয়, তা সোহিনীর কথাতেই স্পষ্ট।

নাট্যউৎসবে উৎসর্গ করা হবে প্রয়াত ব্যক্তিত্বদের

বাংলার নাট্যচর্চায় কি আগ্রহ হারাচ্ছে আম-বাঙালি? নান্দীকারের পরিসংখ্য়ান বলছে, গত ১ বছরে প্রায় ৯৩জন নতুন নাট্যশিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে তাঁদের দলে। যাঁরা করোনাকালেও স্রেফ নাটককে ভালবেসে রিহার্সালে যোগ দিয়েছেন নিয়মিত। সেই ‘উইল পাওয়ার’-টাই তাঁদের দলের শক্তি। তারও যে উদযাপনের মঞ্চ হতে চলেছে এই নাট্যউৎসব।

আরও পড়ুন, কেন সিনেমাহলে দেখবেন ‘এইট্টি থ্রি’? জানালেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী

নাট্যউৎসবে উপস্থিত থাকবেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত ও স্বাতীলেখা সেনগুপ্তও। এবছরই ৮৫ বছরে পা দিয়েছেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত। ৭০য়ে স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। নাট্যউৎসব জুড়ে স্মরণ করা হবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে উষা গঙ্গোপাধ্যায়ের মত ব্যক্তিত্বকে। শুধু তাই নয়, তাঁদের এবারের নাট্য উৎসব উৎসর্গ করা হচ্ছে এই করোনাকালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাঁদের হারিয়েছি আমরা, তাঁদের সবাইকে।