TV9 বাংলা ডিজিটাল : প্রথম ছবি ‘রেনবো জেলি’তে অভিনব বিষয় ও প্রয়োগ ভাবনার প্রমাণ রেখেছিলেন তরুণ পরিচালক সৌকর্য ঘোষাল।‘রক্তরহস্য’তে ভালবাসা এবং মাতৃত্ব, দু’টি চিরন্তন আবেগকে সৌকর্য ছবির চিত্রনাট্যের মেরুদণ্ড করেও অতিনাটকীয় এবং গদগদে করে তোলেননি। এক ধরনের পরিচ্ছন্নতা ও পরিশীলিত মুড প্রায় সারাক্ষণ বজায় রেখেছেন।গল্পের আইডিয়া বিদেশী ছবির ছোঁয়ায়। সৌকর্য সেটিকে খাঁটি বাঙালিয়ানায় সাজিয়েছেন। ছবির গল্প স্বর্ণজাকে (কোয়েল মল্লিক) ঘিরে। পেশায় স্বর্ণজা একজন রেডিও জকি। মানুষের জন্য তার মন কাঁদে। কারো কষ্ট দেখলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তবে স্বর্ণজার ‘গোল্ডেন ব্লাড।‘ বিরল রক্তের অধিকারী সে। স্বর্ণজা তাঁর পারিবারিক ডাক্তারের পরামর্শে যোগের ক্লাসে ভর্তি হয়। সেখানে সাম্য (চন্দন রায় সান্যাল) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয় তার। প্রেমে পড়ে স্বর্ণজা। কিন্তু পরে জানতে পারে সে বিবাহিত। প্রথমটায় একটু নারাজ হলেও পরে সাম্যের স্ত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায় তার। স্বর্ণজা জানতে পারে, মেয়েটি কোনওদিন মা হতে পারবে না। স্বর্ণজার মনটা হু হু করে ওঠে।তাকে সাহায্য করতে সারোগেট মাদার হবার সিদ্ধান্ত নেয় স্বর্ণজা। বাচ্চাকে একটু বড় করার পর সাম্য আর স্ত্রী (বাসবদত্তা) বাচ্চাটিকে নিয়ে চলে যায়। এরপর একদিন টিভিতে একটি শিশু পাচার চক্রের খবর চোখে পড়ে স্বর্ণজার। তারপর? ছবির প্লটে এখানে এসে ঢুকে পড়ে থ্রিলার।তাই দেখতে হলে, পৌঁছতে হবে সিনেমাহলে।
তবে এমন ছবি, যেখানে ঘটনার ঘনঘটা নেহাত কম নয়, তার চিত্রনাট্যের বুনোট আরও শক্ত হওয়া প্রয়োজন। একটি জায়গা হাস্যকর ঠেকেছে, ভিলেনের সঙ্গে পুলিশের ‘চোর পুলিশ’ খেলার দৃশ্যটি।
সৌকর্যর সাবলীল পরিচালনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিটি শিল্পীই স্বচ্ছন্দে স্বাভাবিক অভিনয়ে করেছেন।কোয়েল মল্লিক নো– মেকআপ লুকে খুবই স্বাভাবিক। তাঁর প্রতিবাদী ও লড়াকু মেজাজটাও স্বচ্ছন্দ। ভাইয়ার চরিত্রে ঋতব্রত, ছোট্ট চরিত্রে লিলি চক্রবর্তী, কাঞ্চনা মৈত্রও ভাল কাজই করেছেন। তবে বাসবদত্তা ও চন্দন রায় সান্যাল দর্শকের নজর কাড়েন তাঁদের স্বাভাবিক ও সহজ অভিনয়ের গুণে।