রবিবার দিনভর চলা তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা-সমালোনার পর অবশেষে তৃণমূল নেতার মদন মিত্রর সঙ্গে দোল খেলা প্রসঙ্গে মুখ খুললেন এ ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্বের বিজেপি প্রার্থী পায়েল সরকার।
সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এক ভিডিয়ো বার্তার মধ্যে দিয়ে পায়েল গতকালের ভাইরাল হওয়া ছবি এবং ভিডিয়োর প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন “গতকাল দোল উৎসবের সময় আমার একটি ছবি নিয়ে আপনারা হয়তো অনেকেই মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন। গত ৭০ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে চলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়েছেন আমার অসংখ্য ভাইবোনেরা। এখানে বিরোধী দলকে নিজের মতপ্রকাশ করতে দেওয়া হয় না। বিজেপি করার অপরাধে খুন হয়েছেন ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ।” এর পরেই পায়েলের মন্তব্য, “৪০ জন শহিদের রক্তের শপথ নিয়ে বলছি তোমাদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না। গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারই হবে আমাদের প্রথম কাজ।” একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ২ মে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে বিজেপি এবং বিরোধী একসঙ্গে মিলে মিশে থাকার বাতাবরণ তৈরি হবে বাংলায়।
রবিবার বিজেপির তিন তারকাপ্রার্থী পায়েল সরকার, তনুশ্রী চক্রবর্তী এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রমোদতরীতে রঙের উৎসবে মেতে ওঠেন তৃণমূল নেতা তথা আসন্ন নির্বাচনে কামারহাটির প্রার্থী মদন মিত্র। ‘মদনদা’র জনপ্রিয় গানের বোল ‘ওহ লাভলি’তে নাচতেও দেখা যায় তাঁদের। মদন মিত্রর ফেসবুক লাইভেও শেয়ার করা হয়েছিল সেই ভিডিয়ো। এর পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ফ্রেমে তিন নায়িকা এবং মদন মিত্রের ছবি ভাইরাল হতেই শুরু হয় বিতর্ক। মিম-ট্রোলে ছয়লাপ হয় সোশ্যাল মিডিয়া।
দেখুন পায়েলের পোস্ট
বাম ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র সেই ছবি শেয়ার করে লেখেন, “বিজেমূলের দোল চলছে বাংলার ক্রাশের সঙ্গে। ভালই… চালিয়ে যান আপনারা’। শুধু যে বিরোধী পক্ষই ট্রোল করেন তা নয়, বিজেপি নেত্রী তথা অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্রও ওই তিন তারকা প্রার্থীর উদ্দেশ্যে TV9বাংলাকে বলেন, “এই সমস্ত রাজনৈতিক ফাঁদে পা দেওয়ার এই মুহূর্তে কোনও প্রয়োজনও ছিল না।” রূপাঞ্জনা আরও যোগ করেন, “আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যেখানে আমরা ১৪০ জন বিজেপি কর্মী হারিয়েছি সেখানে দাঁড়িয়ে এই ফুটেজ একেবারেই দৃষ্টি নন্দন ছিল না।” এর পরেই এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় পায়েলের এই ভিডিয়ো। যদিও সেই ভিডিয়োর কমেন্ট বক্সেও এসেছে নানা নেতিবাচক মন্তব্য।
পায়েল ভিডিয়ো শেয়ার করে আরও একবার তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে সাধারণকে স্পষ্ট ধারণা দিলেও রবিবারই TV9 বাংলাকে মদন মিত্র বলেছিলেন, “আমাকে ডেকেছিল একটা এজেন্সি। দক্ষিণেশ্বরের ঘাটে অনুষ্ঠান করছে। আমি গিয়েছিলাম। দেবাংশু গিয়েছিল। ওখানে দোলের দিন গান তো হবেই। গান হল, নাচ হল, দোল খেলা হল। এটাই তো পশ্চিমবঙ্গের মানুষের হওয়া উচিৎ। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। দোল, দোলের জায়গায়।”
প্রসঙ্গত, পায়েল তাঁর প্রতিক্রিয়া জানালেও এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেননি বিজেপির অন্য দুই তারকা প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় এবং তনুশ্রী চক্রবর্তী।