Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মেরুদণ্ড না বিক্রি করা শিল্পীদের অপমান করার অধিকার দিলীপদারও নেই: রূপাঞ্জনা মিত্র

দিলীপ ঘোষের ‘শিল্পীদের রগড়ানো নিয়ে’ প্রশ্ন করা হল ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী-শিল্পী রুদ্রনীল ঘোষকে। তিনি জানান, দিলীপ ঘোষ সবসময় মাঠে-ময়দানে-প্রচারে চাঁচাছোলা ভাষাতে কথা বলেন।

মেরুদণ্ড না বিক্রি করা শিল্পীদের অপমান করার অধিকার দিলীপদারও নেই: রূপাঞ্জনা মিত্র
দিলীপ-রূপাঞ্জনা।
Follow Us:
| Updated on: Apr 04, 2021 | 8:20 PM

বিজেপি রাজ্য সভাপতি এবং মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদে দিলীপ ঘোষের এক বক্তব্যে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। এক সংবাদ মাধ্যমে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হয়, বেশ কিছু শিল্পীদের গাওয়া ‘আমরা এই দেশেতেই থাকবো’ গানটি তাঁর কেমন লেগেছে। প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে দিলীপের সাফ কথা, “শিল্পীদের এটা শোভা পায় না। রাজনীতিটা আমাদের করতে দিন। না হলে রগড়ে দেব। আর শিল্পীরা জানেন, আমি কীভাবে রগড়াই।”

‘রগড়ে’ দেওয়া শব্দটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। বিরোধীরা পোস্টে রীতিমতো তুলোধনা করছেন বিজেপিকে। আবির চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী নন্দিনী চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে লেখেন, ‘বাংলা চলচ্চিত্র ও মিউজিক ফ্র্যাটারনিটির বিজেপি দলের সদস্য এবং সমর্থকরা, দয়া করে আপনার শ্রদ্ধেয় নেতা শ্রী দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যটি ব্যাখ্যা করতে পারেন ?’ পোস্টের নিচে কমেন্ট করেচেন একের পর এক সেলিব্রিটি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপি কর্মী এবং সমর্থক রূপাঞ্জনা মিত্র লেখেন, ‘ইন্টারভিউটা শুনছি’।

 

আরও পড়ুন ‘ঔদ্ধত্য, অপসংস্কৃতি এবং অশ্লীল আচরণ’, দিলীপের ‘রগড়ানো’ বক্তব্যে বিঁধলেন আবির-জায়া

 

ইন্টারভিউয়ের গোটাটি তিন-তিনবার শোনেন এবং পড়েন রূপাঞ্জনা। এবং তারপর নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আজ শিল্পী হয়ে নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে। রং মাখি বলে আমাদের এভাবে অপমান করা হবে? ‘রগড়ে’ দেওয়া হবে আমাদের পরিশ্রম। আমাদের নিজেদের কাজের প্রতি সততা নিষ্ঠাকে অসম্মান করা হবে? না ন্যাকামি করছি না। আমার বিজেপি কর্মী-শিল্পীদেরও বলছি, কাপুরুষ হবেন না। সবকিছুর সীমা রয়েছে! আমি এইরকম অসম্মানজনক আচরণকে সমর্থন করি না।’

রূপাঞ্জনা মিত্র বরাবরই ঠোঁটাকাটা। বারবার তিনি শাসকদলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। কিন্তু এই প্রথম একেবারে ‘ফোরফ্রন্টে’ নেমে একজন বিজেপি কর্মী হয়ে রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। তাঁকে ফোনে ধরা হলে, প্রশ্ন করা হয় আপনি কাকে উদ্দেশ্য করে এই পোস্টটি করেছেন? তখন প্রথমেই রূপাঞ্জনা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন দিলীপ ঘোষের একটি সাক্ষাৎকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি এ পোস্টটি করেছেন পাশাপাশি তিনি এও জানান ‘দিলীপদা’র প্রতি তাঁর অগাধ শ্রদ্ধা। তবে কোথাও ‘রগড়ে দেব’ কথাতে তাঁর আপত্তি রয়েছে। তিনি বলেন, “কেউ নিরপেক্ষভাবে প্রতিবাদ করতেই পারেন তবে সমগ্র শিল্পীমহলকে এভাবে ছোট করার কোনও রাজনৈতিক দলের নেই।”

 

 

 

দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যে ‘শিল্পী’ রূপাঞ্জনা মিত্র ভীত? এই প্রশ্নের উত্তরে রূপাঞ্জনার সাফ কথা, “আমি দিলীপদার লড়াইকে সম্মান করি কিন্তু দলে থেকেই যাঁরা নিজেদের মেরুদণ্ড না বিক্রি করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাকে ছোট করার অধিকার কারওর নেই। একজন ছুঁতোর মিস্ত্রিরও নেই, একজন শিল্পীর নেই, দিলীপদারও নেই। ভোটের জন্য আমরা যেন মানসিক ভারসাম্য না হারিয়ে ফেলি। কাগজ দেখানো নিয়ে ভিডিয়োতে যা বলা হয়েছে, তা ভুল। কাগজ কারওর কাছে চাওয়া হয়নি। দিলীপদা-ই তো পারতেন সে-ই ভুল শুধরে দিতে, ‘রগড়ানি’ বলা ঠিক হয়নি।”

দিলীপ ঘোষের ‘শিল্পীদের রগড়ানো নিয়ে’ প্রশ্ন করা হল ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী-শিল্পী রুদ্রনীল ঘোষকে। তিনি জানান,
দিলীপ ঘোষ সবসময় মাঠে-ময়দানে-প্রচারে চাঁচাছোলা ভাষাতে কথা বলেন। রেখেঢেকে নয়, মেঠো ভাষাতেই তিনি প্রতিপক্ষকে পাল্টা দেন, এটাই ‘রগড়ানি’। যে গান নিয়ে কথা হচ্ছে, সেখানে অনেক কাগজ-টাগজ ছেঁড়া হচ্ছে। অন্য দেশে যাব না বলে ধেইধেই করে নাচছেন। সেই শিল্পীদের কাছে রূদ্রনীলের প্রশ্ন, “আপনাদের কে কোন দেশে যেতে বলেছে? পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে বিজেপিকে ফ্যাসিস্ট বলে সংযুক্ত মোর্চার প্রচার করছেন।”

বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়াস্বরূপ বলেন, “আমি শুনেছি তবে দিলীপ দা’র সঙ্গে কথা বলা হয়নি। হয়তো ঠিক ব্যাখ্যা হচ্ছে না। ফেক কিনা জানি না। আমাদের এখানে শিল্পী কলাকুশলীদের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। আগামী ৭ তারিখ বেশ কয়েকজন যোগ করবে। তাই এই প্রচার ঠিক নয়।”