‘ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত, ওকে ফাঁসানো হচ্ছে’, কোন দিকে নিশানা অরিন্দম সঙ্গী শুক্লার?
Arindam Sil Controversy: আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সরগরম গোটা বাংলা। এরই মাঝে ঝড় টলিপাড়ার অন্দরেও। পরিচালক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা অভিযোগ আনেন টলিপাড়ার এক অভিনেত্রী। সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে মহিলা কমিশনে ডাক পড়েছিল সেই নায়িকা এবং পরিচালকের। কমিশনের সদস্যদের উপস্থিতিতে দীর্ঘক্ষণ এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়। এই পরিস্থিতিতে মুখ খুললেন অরিন্দম সঙ্গী শুক্লা।
আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সরগরম গোটা বাংলা। এরই মাঝে ঝড় টলিপাড়ার অন্দরেও। পরিচালক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন টলিপাড়ার এক অভিনেত্রী। সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে মহিলা কমিশনে ডাক পড়েছিল সেই নায়িকা এবং পরিচালকের। কমিশনের সদস্যদের উপস্থিতিতে দীর্ঘক্ষণ এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়। পরিশেষে চিঠি লিখে অভিনেত্রীর কাছে ক্ষমা চান অরিন্দম। এমনকি মঙ্গলবার সরাসরি পরিচালকের বিরুদ্ধে দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিষ্ণুপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেন অভিনেত্রী। এই পরিস্থিতিতে পরিচালক নিজের বক্তব্য রেখেছেন। তিনি জানিয়েছেন ঠিক কী ঘটেছিল। এই বিতর্কিত পরিস্থিতিতে কী বলছেন অরিন্দমের সঙ্গী শুক্লা দাস? TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে। কী বক্তব্য শুক্লার?
বিতর্কিত পরিস্থিতিতে অরিন্দম প্রসঙ্গে শুক্লার বয়ান…
আমি অরিন্দমকে চিনি ১৯৯২ সাল থেকে। আর আমরা সম্পর্কে রয়েছি ২৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে। ছবি তৈরি এবং অভিনয়ের প্রতি প্রথম থেকেই ওর একটা ভালবাসা ছিল। ১৯৯৯ সালের আগে অরিন্দম একটি বড় সংস্থায় চাকরিও করতেন। তার পর আমিই বলি দুই নৌকায় পা দিয়ে চলা যায় না। বলেছিলাম আমি চাকরি করি, সামলে নিতে পারব। সুতরাং ঝুঁকি নেওয়ার আত্মবিশ্বাস ছিল। এত বছরে অনেক বড় বড় ছবির সঙ্গে নাম জড়িয়েছে অরিন্দমের। আমি সবাইকে স্পষ্ট করে দিতে চাই যে ও যখন অভিনয় করত তখনও আমি অরিন্দমের ফ্লোরে যেতাম। আর এখন পরিচালক অরিন্দমের ফ্লোরেও আমি যাই। আমি জানি ও কী করে কাজ করে। চিত্রনাট্য তৈরির সময় থেকে ওর (অরিন্দম) ছবির সঙ্গে যুক্ত থাকি। আমি জানি ও যে কোনও ছবির দৃশ্য কী করে অভিনয় করে দেখায়। ঘনিষ্ঠ দৃশ্য থেকে যে কোনও দৃশ্য নিজে অভিনয় করে দেখায়। অনেক সময় নবীন অভিনেতাদের অভিনয় করে দেখিয়ে দিতে হয়। শুধু তাই নয় এমনকি অনেক অভিজ্ঞ অভিনেতারাও অরিন্দমকে বলেন দৃশ্যটা অভিনয় করে দেখিয়ে দিতে। আমি এমন অনেক ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের শুটিং, রিহার্সালের সাক্ষী থেকেছি। আর অরিন্দম যে শুধু নায়িকাদের অভিনয় করে দেখান তেমনটা নয়। পুরুষ অভিনেতাদের ক্ষেত্রেও ও (অরিন্দম) একই ভাবে বুঝিয়ে দেয় কী ভাবে অভিনয় করতে হবে সেই নির্দিষ্ট দৃশ্যটি।
এই যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এত অভিযোগ, সে দিন ঠিক ফ্লোরে কী হয়েছে আমি না উপস্থিত থাকলেও সবটা আমার জানা। কারণ, ও সব সময় সিন, বিহাইন্ড দ্য সিনের ভিডিয়ো আমার সঙ্গে শেয়ার করতে থাকে। আমি সবটা জানি সে দিন কী হয়েছিল। হতে পারে সেই অভিনেত্রী নতুন। এত বড় বাজেটের ছবিতে অভিনয় করছেন, তাই হয়তো ভয় পেয়েছেন। সেই জন্য ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। অস্বস্তি বোধ করেছিলেন। কিন্তু যখন চিত্রনাট্য তিনি শুনেছিলেন তখনই তাঁর বোঝা উচিত ছিল,তাঁকে ঠিক কী করতে হবে। ওই দৃশ্যে লেখাই ছিল ‘গভীর চুম্বন’। উনি অস্বস্তি বোধ করতেই পারেন। ৩ এপ্রিলে ঘটেছে যে ঘটনা সেই অভিযোগ এত দিন পরে কেন জানালেন নায়িকা? আমিও অনেক বড় সংস্থায় কাজ করেছি। আমি জানি ঠিক কী কী ঘটতে পারে। আমি সত্যিই জানি না ঠিক কী কারণে ওই অভিনেত্রী এমনটা করেছেন। কেউ ওকে প্রভাবিত করেছেন এমনটাও হতে পারে। আমি জোর গলায় বলতে পারি, অরিন্দমের ৩৫ বছরের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার উদ্দেশ্যেই এটা করা হয়েছে। অরিন্দমের সব নায়িকাদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। একটা ভিত্তিহীন ঘটনার নিরিখে ওর দিকে প্রশ্ন তোলা কখনও উচিত নয়। ওকে ফাঁসানো হচ্ছে। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় একদিকে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। অন্য দিকে আবার প্রযোজক এবং পরিচালকও। তাঁরই সিরিয়ালে অভিনয় করেন ওই নায়িকা। কোথাও গিয়ে মনে হচ্ছে না যে স্বার্থের সংঘাত হয়েছে! মনে হয় না তিনি পক্ষপাতদুষ্ট হবেন। এই দিকটা তো কেউ ভেবেই দেখেননি।
আমার তো মনে হয় অরিন্দমের ছবির সব নায়িকা , জয়া আহসান থেকে কোয়েল মল্লিক সবার সঙ্গে কথা বলা উচিত। এর আগে কোনও নায়িকা তো এমন কোনও অভিযোগ আনেননি। মহিলা কমিশনে যখন অরিন্দমকে ডাকা হয় নিয়ম অনুযায়ী সেই কথাবার্তার পরে সেই Proceedings এর রেকর্ডে সবার সই করার কথা। কিন্তু সেটা তো হয়নি। বরং, শুধুমাত্র অরিন্দমের উপর চাপ সৃষ্টি করে চিঠিতে সই করানো হয়েছে মহিলা কমিশনের তরফে। ওকে জালে ফাঁসিয়ে ওই সই করা চিঠি পাঠানো হয় ডিরেক্টর্স গিল্ডে। পুরো ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত লাগছে।
অরিন্দম তো ভাল মানুষ। জোর করাতেই মেনে নেয়। আমি অবাক কেন এমন হচ্ছে। আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছা হচ্ছে ওর (লীনা গঙ্গোপাধ্যায়) কোন প্রযুক্তিগত যোগ্যতায় এমন গুরুত্বপূর্ণ পদটি পেয়েছেন? অরিন্দম পরিস্থিতির শিকার। আমি বলে দিচ্ছি, ও ভাল মানুষ বলে সরি বলেছে। কারণ, ওর মনে হয়েছে বিতর্ক বাড়িয়ে কোনও লাভ নেই। অরিন্দম মহিলাদের সম্মান করতে জানে। আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না কীসের ভিত্তিতে এই ঘটনা ঘটল!