বলিউড, ভারতীয় ছবির ইতিহাসে একের পর এক হিট, কোটি কোটি টাকার ব্যবসা মূলত এই ইন্ডাস্ট্রিই দিয়ে এসেছে। সুপারস্টার, লাইমলাইট, মায়ানগরী সব বিশেষণই যেন বলিউডের পরিপূরক। তবে দিন দিন সেই সমীকরণ পাল্টাতে দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে ভারতীয় সিনেপ্রেমীদের মন দখল করে রয়েছে দক্ষিণী ছবি। গত কয়েকবছরে ভারত তথা গোটা বিশ্বের দরবারে বারবার প্রশংসিত দক্ষিণী সিনেপাড়া। কোন সমীকরণে দর্শকদের মন এভাবে জয় করছে এই ইন্ডাস্ট্রি?
সিনেবিশেষজ্ঞদের মত, এই ইন্ডাস্ট্রির সাফল্যের পিছনে লুকিয়ে বেশ কয়েকটি কারণ। যার মধ্যে অন্যতম হল মাটির গল্প। সাউথ অ্যাকশন, উপস্থাপনা, গ্রাফিক্সে সকলের মন জয় করলেও গল্পের ক্ষেত্রে কখনই নিজেদের মূল থেকে সরে যায় না। যেখানে দাঁড়িয়ে বলিউড মানেই হোয়াইট টেলিফনিক মুভি। যেখানে স্টারদের ছোঁয়া যায় না। সবাই স্বপ্নের মতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাস্তবের ছবি সরে যায় থেকে অনেকটাই দূরে। দক্ষিণী দুনিয়া নিজেদের চিত্রনাট্যে সেই রসদটা দিতে ভোলে না। যেমন পুষ্পা, ছবির চরিত্রকে বৃহৎ আকারে উপস্থাপনা করা হলেও, এই গল্পের পা স্পর্শ করে রয়েছে মাটি।
অন্যদিকে বলিউডে সূর্যবংশী কিংবা সিম্বা, যেখানে অভিনেতাদের স্টার পাওয়ারের ওপর বেশি নজর দেওয়া হয়েছে। গাড়ির সমাহার, অ্যাকশন, ফাইটের পাশাপাশি গল্পতেও নজর দেওয়া হয়েছে, তবে কোথাও গিয়ে যেন দর্শকদের কাছে বিষয়টা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে ওটিটি মাধ্যমের এক বিশেষ ভূমিকা তো থেকেই যায়। দর্শক এখন বিদেশের ছবিও দেখছে। নানা ধরনের গল্পের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। পরিচালনার স্বাদ বদল ঘটছে। কোরিয়ার ড্রামা, থ্রিলার, সবটাই সকলের হাতের মুঠোয়। ফলত পুরোনো পন্থা বদলে ফেলার সময় এসেছে।
এখানেই বর্তমানে জিতে যাচ্ছে দক্ষিণী ছবি। সৌজন্যে চিত্রনাট্য। এদের ছবি কখনও মূল গল্প থেকে সরে যায় না। তামিল, তেলুগু ছবির ক্ষেত্রে এটা ভীষণভাবে লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে ঝুঁকিও থেকে যায়, তবে কোথাও গিয়ে যেন ছবিক গল্পের প্রতিটা পদে পদে জড়িয়ে থাকা অনুভূতি দর্শকদের স্পর্শ করে যায়। আর এখানেই বারবার জিতে যাচ্ছে দক্ষিণী ছবি। এক কথায় বলতে গেলে দক্ষিণী ছবি গড়ে ওঠে মূলত চিত্রনাট্যকে কেন্দ্র করে, বলিউড ছবি গড়ে ওঠে স্টারকে কেন্দ্র করে। ফারাক এখানেই।