আচমকা বন্ধ শুটিং, এবার কি ‘রোষের’ মুখে পরিচালক সুদেষ্ণা রায়?
দীর্ঘ ২০ বছরের পুরনো প্রোডাকশন ম্যানেজার শুটিং শুরু হওয়ার মাত্র ছ’দিন আগে কোনও কারণ না জানিয়েই আচমকা কাজ ছেড়ে দেন। প্রোডাকশন ম্যানেজার যে গিল্ডের সদস্য, সেই গিল্ড ও ফেডারেশনকে তিনি ইমেল মারফত গোটা বিষয়টি বিস্তারিত জানান।

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, শ্রীজিৎ রায়ের পর এবার ফেডারেশনের রোষের মুখে পরিচালক সুদেষ্ণা রায়? বুধবার, ১৬ এপ্রিল, উত্তর কলকাতার একটি বাড়ি থেকে ফেসবুক লাইভে এসে সবটা সামনে আনলেন পরিচালক। নিজেই জানালেন তাঁর নতুন ছবির শুটিং ঘিরে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কথা।
সুদেষ্ণা জানান, তাঁর দীর্ঘ ২০ বছরের পুরোনো প্রোডাকশন ম্যানেজার শুটিং শুরু হওয়ার মাত্র ছ’দিন আগে কোনও কারণ না জানিয়েই আচমকা কাজ ছেড়ে দেন। প্রোডাকশন ম্যানেজার যে গিল্ডের সদস্য, সেই গিল্ড ও ফেডারেশনকে সুদেষ্ণা ইমেল মারফত গোটা বিষয়টি বিস্তারিত জানান।
কিন্তু সেই ইমেল আদানপ্রদানের মধ্যেই একে-একে ছবির সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট বাকি টেকনিশিয়ানরাও কাজ ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ পরিচালকের। পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার থেকে ছবির শুটিং শুরুর কথা ছিল। ছবির নাম স্বপ্ন হলেও সত্যি। পরিচালনার দায়িত্বে অভিজিত্ গুহ আর সুদেষ্ণা রায়। ছবির অন্যতম প্রধান মুখ অপরাজিতা আঢ্য। কিন্তু শুটিং স্পট থেকেই সুদেষ্ণা ফেসবুক লাইভে এসে অসহায়ভাবে জানান, টেকনিশিয়ানদের অসহযোগিতার কারণে তাঁদের পক্ষে শুটিং শুরু করা সম্ভব হয়নি। সুদেষ্ণা এদিন বলেন, ”আদালত যে রায় দিয়েছে তা মানা হলো না। আমি কষ্ট পেয়েছি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আমাদের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এরকম আর কারও সঙ্গে হোক, সেটা চাই না।”
প্রসঙ্গত, সুদেষ্ণা রায় ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (D.A.E.I)-র সম্পাদিকা। শিল্পী ও পরিচালকদের স্বার্থ রক্ষায় তিনি যেভাবে একাধিকবার সরব হয়েছেন, তা কি এবার ফেডারেশনের চোখে পড়ল? শিল্পীমহলে এই নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে এবার কি তবে সুদেষ্ণার পালা! এই পরিস্থিতিতে টলিউডে ফের নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে ‘ফেডারেশন বনাম পরিচালক’ বিতর্কে। এখন দেখার এই পরিস্থিতির সমাধান সূত্র কোথায়?
টলিপাড়ায় ফেডারেশন ভার্সেস পরিচালকদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে শেষ কিছু মাস ধরে। সম্প্রতি আদালতে রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি সচিবকে এই সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হলো। পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। পরবর্তী শুনানি মে মাসের ১৯ তারিখ। তার আগে এই রিপোর্ট জমা করতে হবে। অভিযুক্ত ইউনিয়ন কোনও মামলাকারির কাজে, পেশায় কোনওভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, সেই নির্দেশ ছিল। হেলথ ইনশিওরেন্স কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে ফেডারেশনের কোনও ভূমিকা থাকছে না। ইউনিক কার্ড না পেলেও পরিচালকরা কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। কারণ ফেডারেশনের কোর্ড অফ কনডাক্ট প্রযোজ্য নয়, তেমন নির্দেশ ছিল আদালতের তরফে। তা-ও কী করে শুটিং বন্ধ হলো, সেটা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ”আমি কিছুই জানি না এখনও। আপনাদের মুখে ফেসবুক লাইভের কথা শুনলাম। তা হলে ওটা দেখে নিই। এখনই কিছু বলতে পারছি না।”





