Ahona Dutta Love Life: ১৪ বছরের বড় প্রেমিকের সঙ্গে ‘দেসি রোম্যান্স’-এর সাক্ষী রইল খলনায়িকার ফটোশুট, প্রেমকাহিনি শুনল TV9 বাংলা

Sneha Sengupta |

Nov 14, 2023 | 2:41 PM

২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'শুদ্ধ দেসি রোম্যান্স' ছবিতে 'তেরে মেরে বিচ মে' গানের একটি দৃশ্যে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় পরিণীতি চোপড়ার পেটে দু’পা রেখে তাঁকে ঠেলে উপরে তুলে দিতে দেখা গিয়েছিল প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতকে। সে রকমই একটি 'অতিবাস্তব' ছবি পোস্ট করেছেন বাংলা সিরিয়ালের দাপুটে ভিলেন 'মিশকা', থুড়ি অভিনেত্রী অহনা দত্ত। তবে সিনেমা নয়। বাস্তবে নিজের প্রেমিক দীপঙ্কর রায়ের সঙ্গে ছবিটি শুট করেছেন অহনা 'মিশকা' দত্ত এবং লাইমলাইটও কেড়ে নিয়েছেন মুহূর্তে।

Ahona Dutta Love Life: ১৪ বছরের বড় প্রেমিকের সঙ্গে ‘দেসি রোম্যান্স’-এর সাক্ষী রইল খলনায়িকার ফটোশুট, প্রেমকাহিনি শুনল TV9 বাংলা
অহনা দত্ত।

Follow Us

 

স্নেহা সেনগুপ্ত

টিআরপি তালিকায় জ্বলজ্বল করতে থাকা ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকের শুটিংয়ে ব্যস্ত অভিনেত্রী অহনা দত্ত মেকআপ রুম থেকে খানিক বিরতি নিয়ে বেরিয়ে এলেন। খোশ গল্প করলেন TV9 বাংলার সঙ্গে। মেকআপ রুমে উপস্থিত তাঁর প্রেমিক মিটমিট করে হাসছেন তখন। অহনা বেরিয়ে এলেন মেকআপ সমেত। তাঁর প্রেমিক পেশায় একজন রূপসজ্জা শিল্পী। ১৪ বছর বয়স থেকে বাংলা সিরিয়ালের দুনিয়ায় কাজ করছেন তিনি। ১৪-র চমক রয়েছে অহনার প্রেমজীবনেও। অহনার প্রেমিক তাঁর থেকে ১৪ বছরের বড়। অনেক অভিনেত্রীকেই সাজিয়েছেন অহনার সেই প্রেমিক তথা রূপসজ্জা শিল্পী। তাঁর সঙ্গেই চুটিয়ে প্রেম করছেন অহনা। মেকআপ রুম থেকে বেরিয়ে অভিনেত্রী মিষ্টি হেসে বললেন, “আসলে আমরা ‘শুধ দেসি রোম্যান্স’ করি তো!” তারপর শুরু করলেন দীপঙ্করের সঙ্গে তাঁর ‘দেসি’ রোম্যান্সের কাহন…

‘শুধ দেসি রোম্যান্স’ এবং লিভ-ইন:

অহনার বয়স ২০। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ই তাঁর কেরিয়ারের প্রথম সিরিয়াল। প্রথম সিরিয়ালেই ডানাকাটা সুন্দরী অহনাকে গায়ে জ্বালা-ধরানো ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে দেওয়া হয়েছে ‘মিশকা’র চরিত্রে। সে হয়ে উঠেছে সক্কলের চক্ষুশূল। প্রচণ্ড শয়তানি করে সে। সেই পর্দার ‘শয়তান’কে জীবনের প্রেয়সী করেছেন তাঁর চেয়ে ১৪ বছরের বড় দীপঙ্কর। শুধু তাই-ই নয়, প্রেম এতটাই মাখোমাখো যে, একসঙ্গে থাকেনও তাঁরা। আলাদা থাকতে পারেন না। লিভ-ইন করেন তাঁদের টালিগঞ্জের ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে। সেই অ্যাপার্টমেন্টেরই একটি ছোট্ট দেওয়াল সাজানোর জন্য এই ফটোশুট করেছেন অহনা এবং দীপঙ্কর। অহনার বক্তব্য, “এর জন্য আমার একটা নির্দিষ্ট থিমের দরকার ছিল। তবে আমাকে পা দিয়ে তুলতে ওর অসুবিধা হয়নি, যেটা সকলে মনে করছেন (হাসি)। আমার একটা ড্রিমি ব্যাপার দরকার ছিল। আশা করি সেটা করতে পেরেছি।”

আন-ফিল্টার্ড প্রেম!

তাঁর এবং দীপঙ্করের প্রেম কাহিনির বর্ণনা দিতে গিয়ে মেকআপ রুম থেকে বেরিয়ে আসেন অহনা। তারপর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে থাকেন রোম্যান্টিক স্বরে তাঁর ও দীপঙ্করের ভালবাসার গল্প। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ সিরিয়ালে অভিনয় করতে গিয়েই দীপঙ্করের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল অহনার। প্রথমে বন্ধুই ছিলেন তাঁরা। অহনা একদিন হঠাৎ জানতে পারেন, দীপঙ্কর তাঁর চেয়ে বয়সে অনেকটাই বড়। প্রায় ১৪ বছরের বড়। বলেন, “আমার বয়স ২০, দীপঙ্করের ৩৪। কিন্তু তাতে কী? আমরা বন্ধু হিসেবে খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলাম অল্পদিনের মাথায়। শুটিং শেষে সেটের সকলে মিলে মেকআপ রুমে আড্ডা দিতাম। ভাইবস (vives) দেখে বুঝেছিলাম, আমার উপর বেশ আগ্রহী ও… তবে হুট করে তো ২০ বছরের একটা মেয়ে ৩৪ বছরের একটা ছেলের প্রেমে পড়বে না, তাই না! আমার মানুষটাকে খুব রিয়েল লেগেছিল। মনে হয়েছিল, খাঁটি। কোনও ন্যাকামি নেই। ভণিতা নেই। কোনও ফিল্টার নেই। সেটাই আমাকে ট্রিগার করেছিল…”

বাবার ছায়া ছাড়াই মানুষ অহনার পিতৃসুলভ প্রেমিক…

“অনেকটা পিতৃসুলভ প্রেমিক আমার বয়ফ্রেন্ড। বাবার মতো শাসন করে, আবার ভালওবাসে। বাবার মতো আশ্রয় দান করে। এটা আমি চেয়েছিলাম খুব করে”, জানিয়েছেন অভিনেত্রী। অহনার বাবা তাঁর সঙ্গে থাকেননি। ছোট বয়সেই তাঁকে এবং তাঁর মাকে পরিত্যাগ করেছিলেন। বাবার ছায়া ছাড়াই মানুষ হয়েছেন অহনা। তাই দীপঙ্করের মধ্যে না পাওয়া ‘পিতৃসুলভ’ মমতা পেয়ে তাঁকে খানিক আঁকড়ে ধরেছেন। বললেন, “ওর কিন্তু রাগ আছে। যখন-তখন বকুনি দেয়। ওই আমাকে একদিন সোজাসুজি এসে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। সরাসরি বলেছিল, আমাকে ভালবাসে। চোখে-চোখ রেখে…”

ডিভোর্সি তো কী!

বয়সে বড় প্রেমিকের সঙ্গে লিভ-ইন করেন অহনা। সেই প্রেমিকের পূর্বে বিয়ে হয়েছিল। ডিভোর্সও হয়েছে। সম্পর্কে যাওয়ার আগে সবটাই জানতেন অভিনেত্রী। দীপঙ্কর তাঁর থেকে কোনও কিছুই লুকিয়ে রাখেননি। বলেছিলেন, “আমাকে তো শুরুতেই সব বলে দিয়েছিল ও। কিছুই লুকোয়নি। প্রেমটা আগেই হয়েছিল কিন্তু সম্পর্কে যাওয়ার ক্ষেত্রে দু’জনেই অনেক চিন্তাভাবনা করেছিলাম। তারপর শুরু হল আমাদের যুগল চলা।” প্রেমিকের আগেও বিয়ে হয়েছিল। অহনার বয়স ২০ হলে কী হবে, তিনি বেশ ম্যাচিওর। বললেন, “একজন মানুষের যদি ডিভোর্স হয়, সে বাতিলের তালিকায় পড়ে যায় না। তারও নতুন করে জীবন শুরু করার অধিকার আছে। সমাজ তাঁদের ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ বলে দাগিয়ে দেয়। আমি অত বিশ্রীভাবে ভাবতেই পারি না। আমার প্রেমিকের পাস্ট নিয়ে আমার কোনও মাথাব্য়থা নেই। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবি। সম্পর্কে যাওয়ার আগেই জানতাম কী প্রতিক্রিয়া পেতে হবে আমাকে। সেটা ভেবেই এগিয়েছি। জীবন ওলটপালট হয়েছে। কিন্তু কোনও না-কোনও সময় লড়াই তো করতেই হয় প্রত্যেককে।”

বিয়ে কবে?

সম্পর্ক নিয়ে অহনার পরিবারে সমস্যা তৈরি হলেও, দীপঙ্করের পরিবার তাঁকে সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছে। বিয়ে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে লজ্জায় লাল হলেন অভিনেত্রী। বললেন, “এটা একটা মজার প্রশ্ন। কিন্তু এখনও সত্যি কিচ্ছু ভাবিনি। কিন্তু আমরা বিয়ে করব। আমাদের নিজেদেরকে আর নতুন করে দেখার নেই কিংবা এক্সপ্লোর করার নেই। আমাদের সমাজে লিভ-ইনকে পরিণতি হিসেবে ধরা হয় না। আমার আবার মন হয়, বিয়ে করা মানে সেক্স করার আইনি ছাড়পত্র। এছাড়া আর কিচ্ছু না…

হিংসে নেই, রাগ নেই

রূপসজ্জা শিল্পীদের অনেক অভিনেত্রীদেরকেই সাজাতে হয়। দীপঙ্করও তেমনই; অহনা বাদেও অন্য অনেক অভিনেত্রীকেই সাজান। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র হিংসে নেই অহনার। তিনি বলেছেন, “আমি জানি আমার চেয়ে সুন্দর ওর চোখে আর কেউই নেই। আমিই সব সময় ওর চোখে লেগে থাকি…”

Next Article