Swarnadipta Ghosh: সবার থেকে লুকিয়ে গাড়িতে প্রেম নিবেদন ‘খলনায়িকা’কে, তারপর যা হল স্বর্ণদীপ্তর রিয়েল লাইফে

Sneha Sengupta |

Nov 04, 2023 | 7:08 PM

Swarnadipta-Arpita: হিন্দি সিরিয়াল দুনিয়ার হিতেন তেজওয়ানি-গৌরী প্রধান তেজওয়ানি থেকে শুরু করে বেশ কিছু উদাহরণ আছে, যেখানে পর্দার স্বামী-স্ত্রী পরবর্তীতে বিয়ে করে রিয়েল লাইফেও স্বামী-স্ত্রী হয়েছেন। বাংলা সিরিয়ালেও সে রকমই একটি জুটি স্বর্ণদীপ্ত-অর্পিতা। 'লক্ষ্মীকাকিমা সুপারস্টার' ধারাবাহিকে লক্ষ্মী কাকিমা, অর্থাৎ অপরাজিতা আঢ্যর বড় ছেলে দেবার চরিত্রে স্বর্ণদীপ্ত এবং তাঁর স্ত্রী সোনার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। সিরিয়ালে স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করতে-করতে বাস্তবেও একে-অপরকে ভালবেসে ফেলেছেন এই নায়ক-নায়িকা। এবং সামনেই তাঁদের বিয়ে। নভেম্বরের ২৫ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান পালিত হবে। সোনা, থুড়ি অর্পিতার, প্রথম সিরিয়াল ছিল মা সারদার চরিত্রে অভিনয়ের সূত্র ধরে—অনেক বছর আগে। তারপর ইমেজ ভাঙতে একের পর-এক ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে 'লক্ষ্মীকাকিমা সুপারস্টার'-এ এমন এক বাড়ির বউ সেজেছেন যে, আদতে ভিলেন-ভিলেন হলেও ভীষণ বোকা। হবু স্ত্রী সম্পর্কে নানা মজার কথা TV9 বাংলার সঙ্গে শেয়ার করলেন স্বর্ণদীপ্ত।

Swarnadipta Ghosh: সবার থেকে লুকিয়ে গাড়িতে প্রেম নিবেদন ‘খলনায়িকা’কে, তারপর যা হল স্বর্ণদীপ্তর রিয়েল লাইফে
স্বর্ণদীপ্ত ঘোষ।

Follow Us

 

 

 

 

স্নেহা সেনগুপ্ত

‘কে প্রথম কাছে’ এসেছে এবং প্রথম ডেট:

প্রথমে বন্ধু ছিলেন স্বর্ণদীপ্ত-অর্পিতা। তবে শুরু থেকেই একে-অপরের প্রতি আকর্ষণ ছিল তাঁদের। প্রথম স্বর্ণদীপ্তই মনের কথা ব্যক্ত করেছিলেন। ‘লক্ষ্মীকাকিমা সুপারস্টার’ সিরিয়াল করতে-করতে পা ভেঙে গিয়েছিল স্বর্ণদীপ্তর। বাড়িতে বসে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। সেই সময় একে-অপরকে খুব মিস করতেন তাঁরা। মুখে কিছু বলতেন না। স্বর্ণদীপ্তর কথায়, “শুটিং শুরু হল যখন দেখলাম অর্পিতা খুব খুশি। একদিন শুটিংয়ের ফাঁকে একটা চায়ের জংশনে আমার উল্টো দিকের টেবিলে বসেছিল ও। টেক্সট করে অর্পিতা আমাকে অন্য কোথাও দেখা করতে বলে। আমি রাজি হয়ে চলে যাই। লুকিয়ে-লুকিয়ে একটা ক্যাফেতে গেলাম। আড্ডা দিলাম। অফিশিয়াল ডেট ছিল না সেটা। কিন্তু আমরা মনে করি, ওটাই আমাদের প্রথম ডেট। ২০২২ সালের মে মাসের শেষের দিকের ঘটনা সেটা। তারপর আবারও মিট করেছি আমরা।”

প্রেম প্রস্তাব পর্ব:

একদিন শুটিং শেষে স্বর্ণদীপ্ত অর্পিতাকে নিয়ে বেরোতে চেয়েছিলেন। লং ড্রাইভে যাওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। রাজারহাটের দিকে সারারাত কিছু ক্যাফে খোলা থাকে। সেরকমই একটি ক্যাফেতে যেতে চেয়েছিলেন স্বর্ণদীপ্ত-অর্পিতা। স্বর্ণদীপ্ত বলেছেন, “সেদিন আর ক্যাফেতে ঢুকিনি। সারাক্ষণ গাড়িতেই বসেছিলাম। দিনটা ছিল ৩ জুন, ২০২২। সে দিনই গাড়িতে ওকে প্রেমের কথা বলেছিলাম। পুরো ব্যাপারটাই আমরা সকলের থেকে চেপে গিয়েছিলাম।” কিন্তু লুকিয়েও কোনও লাভ হয়নি। পোস্ট এবং ভাইভ দেখে সকলেই বুঝেছিলেন সম্পর্ক আর বন্ধুত্বে আটকে নেই। ফোনের ওপাশ থেকে রোম্য়ান্টিক শোনায় স্বর্ণদীপ্তর গলা, “আমরা অন্যের সম্পর্ক দেখে ধরে ফেলি, কিন্তু এতটাই প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম যে, বুঝতেই পারছিলাম না, বাকিরা আমাদের ধরে ফেলেছে।”

একান্ত সময় কাটাচ্ছেন স্বর্ণদীপ্ত-অর্পিতা।

খলনায়িকাকে বিয়ে:

মা সারদা করার পর ইমেজ ভাঙতে চেয়েছিলেন অর্পিতা। পরপর ভিলেনের পাঠ করেছিলেন। লক্ষ্মীকাকিমাতেও তাই। কিন্তু তিনি ট্রেডমার্ক ভিলেন ছিলেন না। এমন-এমন কাজ করতেন, যা দেখে দর্শকের রাগ হত। খানিক ‘বোকা’ ছিল সেই চরিত্র। স্বর্ণদীপ্ত বলেছেন, “লক্ষ্মীকাকিমায় খানিক লোভী, ধান্দাবাজ মেয়ে ছিল সোনা (অর্পিতা)। কিন্তু যে শয়তানিগুলো করত, সেগুলো ছিল বোকামি। অন্যান্য সিরিয়ালে শয়তানি করেছে। কিন্তু সেই খলনায়িকাকে তো আমি বিয়ে করছি না। বাস্তবে অর্পিতা একজন মিষ্টি মেয়ে।”

বাস্তবে কতখানি ‘বোকা’ অর্পিতা?

স্বর্ণদীপ্ত বলছেন, “অনেক বিষয়েই অর্পিতা খুব স্মার্ট। বাস্তবে যদিও ছোট-ছোট বোকামি করে।” সেই বোকামিগুলোও খুব সরল। স্বর্ণদীপ্তর কথায়, “টেকনোলজিক্যালি চ্য়ালেঞ্জড। সেটা নিয়ে খুব চর্চাও করে না। আমার উপর নির্ভরশীল। সেই নির্ভরশীলতাই ও চায়। তাই আমিও কিছু বলি না।” ‘টেকনোলজিক্যালি’ দুর্বল অর্পিতাকে বিয়ের উপহার হিসেবে আইফোন ১৪ উপহার দিয়েছেন স্বর্ণদীপ্ত। তা হলে কি হবু স্ত্রীকে শিখিয়ে-পড়িয়ে নিতে চাইছেন? এক্কেবারেই না। বলেছেন, “দু’টো কারণে আইফোন দিয়েছি ওকে। এক, ক্যামেরা ভাল। দুই, শো-অফ, যে আমার কাছেও আছে মহামূল্যবান ফোন। ইনস্টা, রিলস এসব করবে। এর বাইরে কিছুই চায় না ও।”

স্বর্ণদীপ্ত-অর্পিতার আইবুড়ো ভাত পর্বও শুরু হয়েছে।

অর্পিতার তিনটে গুণ:

প্রশ্নের জবাব দিতে এক ফোঁটাও দেরি করেননি স্বর্ণদীপ্ত। বলেছেন, “প্রথম বিষয়, খুবই স্বাধীন একজন মানুষ আমার অর্পিতা। কারও উপর নির্ভর করে ও জীবন চালায় না। দ্বিতীয় বিষয়, প্রচণ্ড কেরায়িং একজন মানুষ। প্রত্যেকের জন্য খুবই চিন্তাভাবনা করে। আত্মকেন্দ্রিক এক্কেবারেই নয়। পরিবারের সবাইকে নিয়ে চলতে পারে। আমি যেহেতু পরিবারকেন্দ্রিক মানুষ, সেরকম মেয়েকেই বিয়ে করতে চেয়েছিলাম যে পরিবারকে ভালবাসে। তৃতীয় বিষয়, খুবই আন্ডারস্ট্যান্ডিং। আমি কী করতে চাই বা বলতে চাই, একবারেই বুঝে যায়…”

(সিরিয়ালে কিছু উল্লেখযোগ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্বর্ণদীপ্ত ঘোষ। ‘ভক্তের ভগবান শ্রী কৃষ্ণ’ ধারাবাহিকে ভীমের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ‘নেতাজি’ ধারাবাহিকে বাঘা যতীনের চরিত্রে অভিনয় করে লাইমলাইটে এসেছিলেন। যে বাঘা যতীনকে মানুষ কিছুতেই সরিয়ে ফেলতে পারে না স্মৃতি থেকে। ১৫-১৬টি সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন তিনি।)

Next Article