Bengali Serial: বিয়ে দেওরকে, প্রেম ভাসুরের সঙ্গে! বাংলা ধারাবাহিকের খলনায়িকাদের নিয়ে কী বললেন দুই নির্মাতা?
Bengali Serial: বিয়ে দেওরকে, প্রেম ভাশুরের সঙ্গে! এই ধরনের বিষয়বস্তু সমাজে কী বার্তা দিচ্ছে? TV9 বাংলা কথা বলে দুটি ধারাবাহিকের নির্মাতাদের সঙ্গে।
একটি ছেলে একটি মেয়েকে ভালবাসে। মেয়েটি সাদাসিধে মাটির মানুষ, সৎ ও পরোপকারী। সেই মেয়েটির একটি দুর্দান্ত শত্রু আছে, যে তার ক্ষতি করতে চায়। কারণ, সেই ‘ভ্যাম্প’ বা খলনায়িকা নায়ককে নিজের করে পেতে চায়। কিছুতেই মেনে নিতে পারে না তাঁর মতো সুন্দরীকে ছেড়ে নায়ক এই বোকাসোকা ‘সাধারণ’ মেয়েটাকে ভালবাসতে পারে। নায়ক-নায়িকার প্রেমে সে নানাভাবে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সফল হয় না কিছুতেই। এদিকে কোনও এক দৈবিক উপায়ে নায়ক-নায়িকার বিয়ে হয়ে যায়। তারপর থেকেই শুরু হয় আসল খেলা। খলনায়িকা চেষ্টা চালাতে থাকে কী করে নায়ককে কাছে পাওয়া যায়। এর জন্য অন্য কোনও উপায় না পেয়ে বলির পাঠা হতে হয় নায়কের ছোট ভাইকে। সে বেচারা নিরীহ। তাঁকে দুম করে বিয়ে করে নায়কের বাড়িতে প্রবেশ করে খলনায়িকা। ভাবছেন এটা কীসের গল্প? আপনাদের তো এই গল্প চেনা। বাংলায় সম্প্রচারিত দুটি সিরিয়ালের এটাই তো গল্প। একটি স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘অনুরাগের ছোঁয়া’, অন্যটি জ়ি বাংলার ‘উমা’। এই দুটি ধারাবাহিকেই ভাসুরকে (পড়ুন নায়ক) পেতে খলনায়িকা ছোটভাইকে বিয়ে করা। বিষয়টা এমন—বিয়ে দেওরকে, প্রেম ভাসুরের সঙ্গে! এই ধরনের বিষয়বস্তু সমাজে কী বার্তা দিচ্ছে? TV9 বাংলা কথা বলে এই দুটি ধারাবাহিকের নির্মাতাদের সঙ্গে।
‘উমা’ ধারাবাহিকের প্রযোজক সুশান্ত দাস যা বললেন:
সুশান্ত বলেছেন, “গল্পটা শুরুই হয়েছি এই ভাবে—আলিয়া অভিমন্যুকে পছন্দ করত। অভিকে বিয়ে করতে চেয়েছিল সে। বিয়ের মণ্ডপ পর্যন্ত পৌঁছেও গিয়েছিল আলিয়া। মাঝখান থেকে বিয়েটা আটকে যায় এবং অভি উমাকে বিয়ে করে। হার মানে না আলিয়া। অন্যত্র যায় না সে। অভির ভাইকেই বিয়ে করে উমাকে সরাতে চায় ও অভির জীবনে ফিরে আসতে চায়। ‘উমা’ সিরিয়ালের ক্ষেত্রে সেই অপশন ছিল—গল্পটাকে সেই দিকে নিয়ে যাওয়ার। তাই আমরা নিয়ে গিয়েছি। অভি সত্যিই এখন আলিয়ার সম্পর্কে ভাসুরই হয়। এর একটা দিক আছে। গল্পটা পরিবারের মধ্যেই আমরা রাখতে পারি।
মানুষের মনে একটা প্রশ্ন বারবারই উঁকি দেয়। সেটা হল বাস্তবের সঙ্গে সিরিয়ালের গল্পের মিল আছে কি না? আমি আপনাদের বলছি, বাস্তবে কিন্তু এর চেয়েও মারাত্মক সমস্ত ঘটনা ঘটে। প্রেমে পড়ে মানুষ কি না কী করতে পারে, তা নিয়ে তো সংবাদ মাধ্যমে অনেক কিছুই বের হয়। সে সব আমরা দেখতে পাই। একটি ছেলে থানায় যায়, সেখানে দেখা যায় প্রেমিকার দু’জন স্বামী এসে উপস্থিত। অদ্ভুত-অদ্ভুত ঘটনা তো ঘটেই চারপাশে।
সংবাদ মাধ্যমের খবর কি কখনও সিরিয়ালের গল্প বুঁনতে সহায়ক? সুশান্ত বলেন, “সিরিয়ালের বিষয়বস্তু নিয়ে অনেক মানুষ অনেক মন্তব্যই করে থাকেন। কিন্তু বাস্তব জীবনে তো আরও অনেক বিষয় ঘটে। পরিবারের মধ্যে দেখা যায় জামাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক, শ্বশুরের সঙ্গে সম্পর্ক। এগুলো সংবাদের শিরোনামেই উঠে আসে প্রতিদিন। একটা সময় লীনাদিকে (পড়ুন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়) নিয়ে কত আলোচনা হয়েছে। তিনি ত্রিকোণ প্রেম দেখান বলে। কিন্তু তিনিও বলতেন, “এটা কি খুব অস্বাভাবিক বিষয়!” বাস্তবে ঘটে তো এমন ঘটনা। তাই নয় কী।”
‘অনুরাগের ছোঁয়া’ সিরিয়ালের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর অদিতি রায় যা বললেন:
অদিতি বলেছেন, “এটা নিয়ে কথা বলতে গেলে আগেই বলব যে, ‘ট্রুথ ইজ় স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন’… (কল্পনার চেয়েও বাস্তব অদ্ভুত)। আমরা গল্প বলি অনেককিছু থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। সিরিয়ালের ট্র্যাকে আমরা বারবারই দেখানোর চেষ্টা করি ‘গুড ভার্সেস ইভল’—ভাল-মন্দের দ্বন্দ্ব! সেখানে কীভাবে ভালর জয় হয়, সেটাই আমরা টেলিভিশনের পর্দায় দেখানোর চেষ্টা করি। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’য় আমরা যখনই গল্পটা দেখানোর চেষ্টা করি, মনে হয় যে এরকম কোনও ঘটনা দেখাচ্ছি, সঙ্গে-সঙ্গে এটাও দেখাই যে, কীভাবে সেই পরিস্থিতি থেকে সেই চরিত্রটা বেরিয়ে এসে অন্য ভাল পথে যাচ্ছে। আমাদের এখানেও কিন্তু গল্পের মোড় ঘুরে যাচ্ছ…”