বাংলা সাংস্কৃতিক জগৎকে সমৃদ্ধ করেছে ঠাকুর পরিবার। সেই পরিবারের প্রদীপ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর অবদান চিরটাকাল মনে রেখে দেবে দুনিয়াবাসী। বাংলার গণ্ডি, ভারতের গণ্ডি টপকে সারা বিশ্বকে উদ্বুদ্ধ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর লেখা গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাসকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছেন হাজার-হাজার মানুষ। তিনি এশিয়া মহাদেশের প্রথম নোবলজয়ী। তিনি প্রতিবাদীও। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যা কাণ্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকারকে ফিরিয়েছিলেন নাইট উপাধী। কিন্তু জানেন কি, রবীন্দ্রনাথের আসল পদবী ঠাকুর নয়। অন্য কিছু। কী সেটা?
১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজও তেমনই একটি ২৫শে বৈশাখ। ১৬১তম জন্মদিন কবিগুরুর। জোড়াসাঁকো, শান্তিনিকেতনে তো বটেই, রাজ্যের স্কুল-কলেজ-সাংস্কৃতিক পীঠস্থানে পালিত হবে ‘এসো হে বৈশাখ’ (রবিঠাকুরের লেখা)। আজকের দিনে চলুন জেনে নিই ঠাকুর পরিবারের এক্কেবারে অজানা একটা দিক।
ঠাকুর পরিবার ছিল ব্রাহ্মণ। পরবর্তীকালে ব্রাহ্ম হয়েছিল। ব্রাহ্মণ থাকাকালীন এক প্রাণীর মাংসের গন্ধ শুঁকেছিলেন পরিবারের চার ভাই। তাঁদের সমাজ একঘরে করে দিয়ে সেই ‘অপরাধ’-এ। সেই সময় ঠাকুর পরিবারের পদবী ঠাকুর ছিল না। ছিল কুশারী। রবীন্দ্রনাথের পদবী তা হলে ছিল রবীন্দ্রনাথ কুশারী। একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন ঠাকুর, থুড়ি কুশারী বংশের চার জমিদার ভাই রতিদেব কুশারী, কামদেব কুশারী, শুকদেব কুশারী এবং জয়দেব কুশারী। তাঁদের চলে আসতে হয় সুন্দরবনে। এই কুশারীরা দরিদ্রসেবা করতেন খুব। সুন্দরবনের গোবিন্দপুরের গরিবদের অনেক কিছু দান করেছিলেন এবং হয়ে উঠেছিলেন এলাকার ত্রাতা, ঈশ্বর। তাঁদের সকলে ‘ঠাকুর’ সম্বোধন করতেন। সেই ঠাকুরকেই পরবর্তীকালে পদবী হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষেরা।