
বাংলা সিনেমার প্রখ্যাত ভিলেনদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্দার দুঁদে ভিলেন হলেও, কৌশিক কিন্তু দারুণ ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত ইন্ডাস্ট্রির কাছে। তাঁর মতো মাটির মানুষ নাকি নেই একজনও। শংসাপত্র দিয়েছেন খোদ স্ত্রী অভিনেত্রী লাবণী সরকার। পুত্র সুস্নাত, স্ত্রী লাবণীকে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার। তবে কৌশিকের জীবন একটা সময় সমস্যায় পরিপূর্ণ ছিল। তিনি ছিলেন ‘সিঙ্গল ফাদার’। কিছুদিন আগেই বিশ্বব্যাপী পালিত হয়েছে পিতৃদিবস। কৌশিকের সিঙ্গল ফাদারহুডের কথা রইল এই প্রতিবেদনে।
কয়েক বছর আগে ‘অপুর সংসার’ টক শোতে অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সম্মুখে বসেছিলেন কৌশিক এবং লাবণী। সেই টক শোতেই ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে নানা কথা ব্যক্ত করেছিলেন কৌশিক। জানিয়েছিলেন তাঁর একাকী পিতৃত্বের কথাও। প্রথম স্ত্রী তখন ছিলেন না সঙ্গে। ছোট্ট পুত্রকে একা হাতে মানুষ করছিলেন কৌশিক। জানিয়েছিলেন, তখনই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন মা ছাড়া সন্তান মানুষ করা কতখানি কঠিন কাজ। শুটিংয়ের ফাঁকে বাড়িতে ছুট্টে-ছুট্টে আসতেন কৌশিক। এসে দেখে যেতেন ছোট ছেলেটা তাঁর দুপুরে ঠিকমতো খেয়েছে কি না। কৌশিক বলেছিলেন, “সে সময় আমি বুঝতে পারি, মায়ের অভাব কখনওই কোনও বাবা পূরণ করতে পারেন না। মায়ের কাজ মা-ই করতে পারেন।”
এই টালমাটাল পরিস্থিতিতেই লাবণীর সঙ্গে আলাপ কৌশিকের। তখন লাবণীর জীবনেও ঝড় বইছে। তাঁরও ব্যক্তিগত জীবন টলমান। দুই ভগ্ন হৃদয়ের মানুষের আলাপের পরই গভীর বন্ধুত্ব, প্রেম এবং বিয়ে। কৌশিকের মাতৃস্নেহ বঞ্চিত ছোট্ট ছেলেটিকে নিজের কোলে তুলে নিয়েছিলেন লাবণী। কৌশিক বলেছিলেন, “আমার সন্তানকে লাবণী নিজের করে নিয়েছিল। এই সম্পর্কটা লাখে এক।” মাতৃদিবসে লাবণী TV9 বাংলা ডিজিটালকে বলেছিলেন, “সুস্নাতর সঙ্গে আমার সম্পর্কে নিয়ে বেশি কিছুই বলতে চাই না। বিগত ২৭ বছরে মুখ খুলিনি এই নিয়ে। তাও TV9 বাংলাকে বলতে চাই, এটা আমার কাছে ঈশ্বরের থেকে পাওয়া একটা মূল্যবান সম্পর্ক। এই সম্পর্কটা আমার কাছে প্রাধান্য তালিকায় সবার আগে।” পুত্র সুস্নাত যাতে ফের কোনও নিরাপত্তাহীনতায় না চলে যায়, তাই সন্তানের জন্ম পর্যন্ত দেননি লাবণী-কৌশিক। লাবণী বলেছিলেন, “আমি আর কৌশিক যদি আর এক সন্তানের জন্ম দিতাম, ছেলেটা হয়তো ফের নিরাপত্তাহীনতায় চলে যেত। ওকে আমি সেই যন্ত্রণা দিতে চাইনি। তাই নিজের বায়োলজিক্যাল সন্তানের জন্মও দিইনি।” এখন অনেক বড় হয়ে গিয়েছে সুস্নাত। চাকরি করছেন তিনি।