কটা চোখের ভিলেন সুমিত ক্ষমা করেননি, বলেন, ‘কলার তুলে দেওয়ালে ঠেসে দিয়েছিলাম ইপির…’

Sumit Ganguly: পর্দায় তাঁর উপস্থিতি হাড় হিম করে দিয়েছে দর্শকের। কিন্তু বাস্তব জীবনে মানুষটি সেরকম নন। টলি ইন্ডাস্ট্রির লোকজনই সেই কথাই বলেন তাঁর সম্পর্কে। তিনি হলেন মাটির মানুষ। রাগ-দুঃখ পুষে রাখেন না মনে। সকলকে ক্ষমা-ঘেন্না করে চলেন। সেই সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়েরও রয়েছে ক্ষমা করতে পারিনি মুহূর্ত। শুনে নিল TV9 বাংলা ডিজিটাল।

কটা চোখের ভিলেন সুমিত ক্ষমা করেননি, বলেন, কলার তুলে দেওয়ালে ঠেসে দিয়েছিলাম ইপির...
সুমিতা গঙ্গোপাধ্যায়।

|

Jul 01, 2024 | 5:17 PM

ক্ষমা করা মহৎ কাজ। ছোটবেলায় এমন কথাই শেখানো হয় বাচ্চাদের। কিন্তু সব সময় কি ক্ষমা করা সম্ভব? এমন অনেক ঘটনাই ঘটা যা ক্ষমারও অযোগ্য। খ্যাতনামীদের জীবনেও সেরকম ঘটনা আছে ভূরি-ভূরি। TV9 বাংলা ডিজিটাল কথা বলল সেই সমস্ত বিখ্যাতদের সঙ্গে, যাঁরা ক্ষমা করতে পারেননি। আজ মনের ঝাঁপি খুললেন অভিনেতা সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলা ফিল্ম জগতে তাঁর পরিচয় এক ভয়ানক ভিলেন হিসেবে। নীলচে চোখের ভয়ানক ভিলেন। ‘কেঁচো খুড়তে কেউটে’,  ‘যুদ্ধ’, ‘ঘাতক’, ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’-এর মতো ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর পর্দায় উপস্থিতি হাড় হিম করে দিয়েছে দর্শকের। কিন্তু বাস্তব জীবনে মানুষটি সেরকম নন। টলি ইন্ডাস্ট্রির লোকজন সেই কথাই বলেন তাঁর সম্পর্কে। তিনি হলেন মাটির মানুষ। রাগ-দুঃখ পুষে রাখেন না মনে। সকলকে ক্ষমা-ঘেন্না করে চলেন। সেই সুমিতেরও রয়েছে ‘ক্ষমা করতে পারিনি ‘মুহূর্ত। শুনে নিল TV9 বাংলা ডিজিটাল।

যা বললেন সুমিত:

“একটি বড় হাউজ়ের হয়ে পরপর ছবি করছিলাম আমি। রামোজি ফিল্ম সিটিতেই হত অধিকাংশ শুটিং। রামোজির তারা হোটেলে কখনও আমি, খরাজ মুখোপাধ্যায়, কখনও আমি রজতাভ দত্ত রুম পার্টনার হয়ে ঘর শেয়ার করতাম। সিনিয়র হওয়ার পর আমাকে একটি গোটা ঘরই দেওয়া হত থাকার জন্য। আমার আবার রামোজি ফিল্ম সিটির শান্তিনিকেতন বিল্ডিংটা প্রিয় ছিল। খোলামেলা, সুন্দর। সেখানে থাকলে আমার জন্য সবসময়ই নির্দিষ্ট ঘর রাখা থাকত।

ভালই চলত সবকিছু। ২০১৭ সালে একটা খারাপ ঘটনা ঘটে যায়। একটা ছবির শুটিং করতে গিয়েছিলাম রামোজিতে। ৬-৭দিনের কাজ ছিল। তিনদিন কেটে গিয়েছিল, আমি শান্তিনিকেতনের একটা রুমে ছিলাম। শুটিং সেরে বিকেলবেলায় ফিরে এসে দেখি প্রায় জুনিয়র এক শিল্পী (নাম বলতে অনিচ্ছুক), যিনি ছোটখাটো কমেডি চরিত্রে পাঠ করতেন, তিনি সেই ছবিতে ১-২দিনের অভিনয় করতে এসেছেন এবং তাঁকে আমার রুমে রাখা হয়েছে। তিনি গামছা-টামছা মেলে দিয়েছেন ঘরে। খাটে লম্বা হয়ে শুয়ে আছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “তুই এই ঘরের মধ্যে কী করছিস?” তিনি বললেন, “আমাকে এই ঘরেই থাকতে দিয়েছে।”

আমি সেই ছবির এগজ়িকিউটিভ প্রোডিউসার (ইপি)কে ফোন করি। তিনি আমাকে বললেন, “ওনাকে আপনার ঘরে থাকতে দেওয়া হয়েছে। আমি বলেছিলাম, “কেন আমি তো একা থাকি?” ইপি বললেন, “কবে থেকে তুমি একা থাকো?” তিনি আমাকে জোরাজুরি করতে থাকেন, রুম পার্টনার নিতেই হবে। আমি বলেছিলাম, “তা হলে আমাকে আপনি আমার সমগোত্রীয় কারও সঙ্গে রুম দিন। জুনিয়র আর্টিস্টের সঙ্গে কীভাবে থাকব। আমার তো একটা প্রাইভেসি আছে। আমি ফোনেটোনে কথা বলব।” ইপি আমার সঙ্গে তর্ক করেন। আমাকে বলেন, “সম্ভব না। আপনাকে ওর সঙ্গেই থাকতে হবে।” সেই ইপি আমাকে ঝাঁঝিয়ে বলেন, “বেশি কথা বলবেন না।” তারপর আমাকে গালিগালাজ করেন। বলেন, “কে চেনে আপনাকে?” আমি তখন যেখানে দাঁড়াই ভিড় জমে যায়। কথাগুলো খুব গায়ে লাগে আমার। হজম করতে পারিনি।

আমার মুখ দিয়ে তখন খারাপ কথা বেরিয়ে আসে। ছবির পরিচালকও উপস্থিত ছিলেন সেই সময়। সটান বলেছিলাম, “এমন মারব না, মুখটুখ ফাটিয়ে দেব।” আমাকে তুইতাকারি করে সেই ইপি বলেন, “তুই আমার গায়ে হাত দিবি?” ফের গালাগালি করেন। আমি তাঁর কলার তুলে দেওয়ালে ঠেসে দিই। তারপর থেকে সেই হাউজ়ে আমি আর কোনওদিনও কাজ করিনি। সেই ইপিকে আমি ক্ষমা করতে পারিনি, পারবও না।