ED Raids: অভিনয় জীবনের শুরুতে কেমন ছিলেন অর্পিতা? মুখ খুললেন তাঁর ৩টি ছবির পরিচালক
Arpita Mukherjee: শিল্পমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ তথা একদা বেলঘরিয়ার বাসিন্দা এহেন অর্পিতার একসময় টলিউড যোগ ছিল প্রবল।
বিহঙ্গী বিশ্বাস
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি-র হাতে তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের বর্তমান শিল্পমন্ত্রী ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির চেয়েও যেন এই মুহূর্তে বেশি চর্চিত তিনি: অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। কারণ বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এই অর্পিতার বিলাসবহুল ফ্ল্য়াটে তল্লাশি চালিয়েই নগদ ২১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। দু’দফায় এক-এক করে মোট ৪০টি ট্রাঙ্কে শুক্রবার দুপুরে সেই টাকা অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে বের করে ট্রাকবন্দি করেছে ইডি। শিল্পমন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ তথা একদা বেলঘরিয়ার বাসিন্দা এহেন অর্পিতার একসময় টলিউড যোগ ছিল প্রবল।
ধারাবাহিক থেকে শুরু করে বাংলা অথবা দক্ষিণী বা ওড়িয়া ছবি… অর্পিতা কাজ করেছেন বিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যমে, বিভিন্ন ভাষায় (সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়োয় ২০১৯ সালে নাকতলা উদয়ন সংঘ-এর পুজোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে অর্পিতার উদ্দেশে বলতে শোনা গিয়েছে: ‘‘ওড়িশায় কাজ করো? ভাল করে করো’’)। ২১ জুলাই ধর্মতলায় শহিদ দিবসের সভায় প্রথম সারিতে বসে-থাকা অর্পিতার সঙ্গে যদিও বিগত বেশ কিছু বছর ধরে টলিউডের আর তেমন কোনও সম্পর্ক নেই। কেমন ছিলেন অর্পিতা তাঁর অভিনয়ের কেরিয়ারের একদম শুরুর দিকে? TV9 বাংলার কাছে তা নিয়েই মুখ খুললেন অর্পিতার তিন-তিনটি ছবির পরিচালক অনুপ সেনগুপ্ত, যিনি প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা টলি-নায়ক বনি সেনগুপ্তর বাবাও।
View this post on Instagram
অনুপবাবুর সঙ্গে অর্পিতা কাজ করেন ‘মামা-ভাগ্নে’ বলে একটি ছবিতে। ছবিতে দেখা গিয়েছিল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়কে। অনন্যার এক বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। পরিচালকের কথায়, ‘‘এমনিতে তো বেশ ভালই মনে হত। অনেক দূর থেকে শুটিংয়ে আসত। মন দিয়ে শুটিং করত। তারপর চলে যেত। ব্যক্তিগত ভাবে তো চিনতাম না, তবে শুটিং করার সময় আমার কাছে ভীষণ বকাও খেয়েছে। ভুল হলে তো বকা দেবই।’’ ‘মামা-ভাগ্নে’ মুক্তি পায় ২০০৯ সালে। শুটিং অবশ্য তারও আগে। এর পরেও আরও দু’টি ছবিতে অর্পিতাকে কাস্ট করেছিলেন অনুপ।
পরিচালক যোগ করলেন, ‘‘এরপর ‘বাংলা বাঁচাও’ বলে একটি ছবি করি। ওই ছবিতে প্রসেনজিৎ-পাওলি ছিল। আর র্পিতা আর সাহেব (ভট্টাচার্য) একটা জুটি ছিল ওই ছবিতে। সেখানেও বেশ মন দিয়েই অভিনয় করতে দেখতাম ওকে।’’ ২০১১ সালে মুক্তি পায় সেই ছবিট। অনুপের সঙ্গে অর্পিতার শেষ কাজ ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ বলে এক ছবিতে। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছিল ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, রাহুল অরুণোদয়ের মতো অভিনেতাদের। তবে অনুপ জানান, সেই ছবিতে একটি ডান্স নম্বর শুটের জন্যই জায়গা হয়েছিল অর্পিতার। আর এর পরেই কেমন যেন উধাও হয়ে যান অর্পিতা। দক্ষিণী ও ওড়িয়া ছবিতে কাজ করলেও জনপ্রিয়তা তিনি ছুঁতে পারেননি (২০০৯ সালে ওড়িয়া ছবি ‘প্রেমরোগী’ ও পরের বছর ২০১০ সালে ওড়িয়া ছবি ‘তোরা মোরা জোড়ি সুন্দরা’ ছবিতে নায়িকার ভূমিকায় এবং ২০১৭ সালে ‘চিন্নামা লাভ’ নামে একটি তামিল ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা)।
অর্পিতার সঙ্গে আউটডোরেও শুটিং করেছে অনুপ ও তাঁর টিম। কোনওদিনও সেই অর্থে ঝামেলা চোখে পড়েনি পরিচালকের। তিনি বলেন, ‘‘আসত, কাজ করত, চলে যেত।’’ এহেন অর্পিতার বাড়ি থেকেই যখন উদ্ধার হয়েছে নগদ ২১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা, ৫০ লক্ষ টাকার গয়না ও ২০টি মোবাইল ফোন, তখন কিছুটা হতাশ পরিচালক নিজেও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যখন ওকে প্রথম দেখি, তখন বয়স আন্দাজ ২০-২২ হবে। আমার ছেলে (বনি)-র থেকে একটু বড়ই ছিল। ভালই কাজ করছিল। তারপর কাল থেকে এইসব শুনে কিছুই মেলাতে পারছি না।’’ অর্পিতার পাড়া-প্রতিবেশীরাও বেশ অবাক। মায়ের মনও ভারাক্রান্ত। সরকারি চাকুরে বাবার সংসারে বেড়ে ওঠা মেয়েটার কাছেই যে লুকিয়ে ছিল ‘কুবেরের ধন’, তা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা অর্পিতার মায়ের।
View this post on Instagram