মানালি-অভিমন্যুর নয়া উদ্যোগ, যৌনকর্মীদের জন্য ক্রাউড ফান্ডিং দম্পতির

স্বরলিপি ভট্টাচার্য |

May 31, 2021 | 4:35 PM

মানালির কথায়, “পুরোটাই অন প্রসেস। এই পরিকল্পনায় অনেকে রয়েছেন। আমরা একটা নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে ওঁদের কাছে যাব। যা প্রয়োজন দিয়ে আসব।”

মানালি-অভিমন্যুর নয়া উদ্যোগ, যৌনকর্মীদের জন্য ক্রাউড ফান্ডিং দম্পতির
দম্পতি। ছবি: ফেসবুক থেকে গৃহীত।

Follow Us

করোনা আতঙ্ক এবং তার জেরে লকডাউনে বিপর্যস্ত গোটা দেশ। একদিকে করোনা রোগীর চিকিৎসা, অন্যদিকে বিভিন্ন পেশার মানুষের পেশাগত দিক থেকে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। এই দুঃসময়ে বহু শিল্পী সাধারণের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন বিভিন্ন ভাবে। ব্যতিক্রম নন অভিনেত্রী মানালি মনীষা দে (Manali Manisha Dey) এবং তাঁর স্বামী পেশায় পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। যৌনকর্মীদের পাশে থাকার জন্য নয়া উদ্যোগ নিলেন দম্পতি।

কেমন সেই উদ্যোগ? অভিমন্যু বললেন, “অনেকেই নানা ভাবে চেষ্টা করছেন। যৌনকর্মীদের জন্যও অনেকে চেষ্টা করছেন। ওঁদের প্রফেশন অন্যদের মতো নয়। কোভিডে ওঁদের প্রফেশন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। সেটাই হয়েছে। ‘দুর্বার’ (যৌনকর্মীদের সংগঠন) এর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের এক বন্ধু অন্বেষা ‘দুর্বার’ এর সঙ্গে যুক্ত। ও সাহায্য করছে। ‘দুর্বার’-এর সঙ্গে অনেক এনজিও জড়িত। অনেক অর্গানাইজড। ফলে রেশনের সমস্যা হয়তো হচ্ছে না। কিন্তু অনেকের বাড়িতে পাঠানোর টাকা নেই। ছোট রেড লাইট এলাকা গুলোতে সমস্যা বেশি। সেখানে হয়তো রেশনও লাগবে। আবার ওঁদের সন্তানরাও রয়েছে। ফলে আমরা ক্রাউড ফান্ডিং করে ওঁদের হাতে কিছু ক্যাশ টাকা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রয়োজন হলে রেশনের ব্যবস্থাও করব। বাচ্চাদের দিয়েও শুরু করতে পারি।”

মানালির কথায়, “পুরোটাই অন প্রসেস। এই পরিকল্পনায় অনেকে রয়েছেন। আমরা একটা নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে ওঁদের কাছে যাব। যা প্রয়োজন দিয়ে আসব।”

এই পরিকল্পনায় প্রথম থেকে রয়েছেন পেশায় চিত্রনাট্যকার অর্কদীপ নাথ। তিনি জানালেন, গত বছর লকডাউনের সময় থেকেই যৌনকর্মীদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করেছেন। আর এ বছর সঙ্গে পেয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেক বন্ধুকে। তাঁর কথায়, “ওঁদের খাবার বিভিন্ন জায়গা থেকে হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ যৌনকর্মী সংসার চালান। বাচ্চাদের জামাকাপড় কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আগে বেশ কিছু কালেকশন করে দিয়ে এসেছিলাম। সোনাগাছি অরগানাইজড। ৬০ শতাংশের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স আছে। কিন্তু যাঁরা স্ট্রিট হুকার, ছোট ডান্স বারে কাজ করেন, তাঁদের প্রয়োজন বেশি। খুব বড় পরিসরে নয়। তবে কলকাতার বাইরে শান্তিপুর, টিটাগড়ের গিয়েছিলাম এই কাজেই। এ কাজে ডেটাবেস তৈরি করাই কষ্টসাধ্য। আরও একটা বিষয়, সোনাগাছির বাইরেও যাঁরা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত সকলকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ানোর চেষ্টা চলছে।”

অর্কদীপের মতোই, সঠিক ডেটাবেসের বিষয় উঠে এল অভিমন্যুর কথাতেও। যাঁদের সত্যিই প্রয়োজন, সেই তালিকা তৈরি করে তাঁদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে বলে জানালেন। যাঁরা এই উদ্যোগে সাহায্য করছেন, তাঁদের কাছে আর্থিক লেনদের বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হবে বলে দাবি পরিচালকের। অর্থাৎ যে অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে হবে, সেখানে আগে কত টাকা ছিল, ক্রাউড ফান্ডিংয়ে কত টাকা জমা পড়েছে, যৌনকর্মীদের হাতে কত টাকা তুলে দেওয়া হল, বিশদে জানিয়ে দেওয়া হবে।

অভিমন্যুর কথায়, “নামপ্রকাশে ইচ্ছুক হলে কে কত টাকা দিচ্ছেন, সেটাও প্রকাশ করা হবে স্বচ্ছতার খাতিরেই। আর যে দিন আমরা যাব, সে দিন সকলেই স্বাগত। যিনি কনট্রিবিউট করতে পারবেন না, তিনিও ইচ্ছে করলে আমাদের সঙ্গে যেতে পারেন। অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।”

আরও পড়ুন, অন্য রকমের জন্মদিন, ১৮০জনের দৈনিক খাবারের ব্যবস্থা করছেন সৌগত

Next Article