রাজনীতি ছাড়লেন রূপা, দিলীপের বিরুদ্ধে উগরে দিলেন ক্ষোভ

এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, "রাজনীতি ছাড়লাম। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলেই জয়েন করছি না। মানুষের ভালোর জন্য ন্যায্য কথা বলব। ভাল কাজকে সমর্থন করব। খারাপের প্রতিবাদ করব।"

রাজনীতি ছাড়লেন রূপা, দিলীপের বিরুদ্ধে উগরে দিলেন ক্ষোভ
দিলীপ-রূপা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 19, 2021 | 9:00 AM

 

রাজনীতিতে আর নেই অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য। বিজেপি তো নয়ই, এমনকি সিপিএম-এর সঙ্গেও যে তিনি প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত হচ্ছেন না সে কথা সাফ জানিয়ে দিলেন এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে।

দিন দুয়েক আগেই টলিপাড়ার দুই অভিনেতা ও বিজেপি কর্মী রূপা ভট্টাচার্য ও অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যাদবপুরে সিপিএম-র শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছিল। তোলপাড় হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনিন্দ্য-রূপাকে নিজের দলের মিছিলে অংশ নিতে দেখে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দুই বাম সমর্থক অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রীলেখা মিত্র। পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্যে সরগরম ছিল সোশ্যাল মিডিয়া। বিজেপি ছেড়ে রূপা কি এ বার স্থায়ীভাবে সিপিএমের সে প্রশ্নও উঠছিল বারংবার… অবশেষে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিলেন অভিনেত্রী নিজেই। জানিয়ে দিলেন রাজনীতি ছাড়ছেন তিনি।

এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “রাজনীতি ছাড়লাম। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলেই জয়েন করছি না। মানুষের ভালোর জন্য ন্যায্য কথা বলব। ভাল কাজকে সমর্থন করব। খারাপের প্রতিবাদ করব।” রূপার ওই সিদ্ধান্তকে যেমন সমর্থন করেছেন নেটিজেনদের একটা বড় অংশ। ঠিক তেমনি তিনি সমর্থন পেয়েছেন বিজেপি নেত্রী কাঞ্চনা মৈত্রর তরফেও। ওই পোস্টের কমেন্ট বক্সে কাঞ্চনা লেখেন, “যাই করবে তুমি তোমার সেরা টা দেবে। কারণ দিনের শেষে তুমি সেই হতাশাগ্রস্ত, আমিত্বে ভরা মানুষ নও। তুমি একজন ভাল মনে মানুষ।”

তবে রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্তের ঠিক আগে আরও একটি পোস্ট করেছিলেন রূপা। সেই পোস্টে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় তাঁকে। দিলীপের শিল্পীদের ‘রগড়ে দেওয়া’ মন্তব্য থেকে বিজেপি’র অন্দরে ‘লবিবাজি’– এ সব সিনেই সরব হন রূপা। রূপা লেখেন, “… আমরা মুকুল রায়ের মাধ্যমে এসেছি তাই আপনার (দিলীপ ঘোষ) লবি নাকি আমাদের অ্যান্টি। ওরে বাবা তারপর দু বছর এই লবির জন্য ভয়ঙ্কর নাকানি চোবানি খেলাম সবাই। এর সাথে গেলে ও রাগ করে করে । এ ডাকলে ও বলে রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করে দেব…।”

প্রসঙ্গত, অনিন্দ্য-রূপার সিপিএমের কর্মসূচীতে যোগদানের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন রাহুল। রূপা-অনিন্দ্যর এই হঠাৎ আগমনকে কটাক্ষ করে রাহুল লেখেন, “আমি কোনো প্রলোভন বা ক্ষমতার কারণে রাজনীতি করিনা|আমার রাজনীতি একান্তই আদর্শগত| সিপিএমের মঞ্চে যদি টিকিট না পাওয়া হতাশ বিজেপি জায়গা পায় তাহলে আমি আজ এই মুহূর্ত থেকে এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম” অন্যদিকে অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও রাহুলের কথার সমর্থনে নিজের প্রোফাইল থেকে পোস্টে লেখেন,”… আমরা লিবারাল এই মর্মে যদি ‘মানুষের জন্য কাজ করতে চাওয়ার দল’ যারা বিজেপিতে যোগদান করেছিল তাঁদের সিপিএমের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে দেখা যায় তবে অনেক অপমান আর কষ্ট নিয়ে বলছি সিপিএমের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করছি।” বিধানসভা নির্বাচনের সময় যেভাবে তাঁর নামকে বিকৃত করে ‘ছিলেখা’ ‘ছিপিএম’ বলা হয়েছে তা নিয়েও সরব হয়ে অভিনেত্রী বলেন, “ওঁদের সঙ্গে একই মঞ্চ শেয়ার করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।”

কেন হঠাৎ বিজেপি ছেড়ে সিপিএমের মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন রূপা-অনিন্দ্য। টিভিনাইন বাংলাকে অনিন্দ্য বলেছিলেন, “সিপিএমই একমাত্র বিকল্প। যে কাজটা এরা করেছে ঠিক জায়গায় ঘা টা দিয়েছে। বুদ্ধিভিত্তিক যুদ্ধের নিয়ম হচ্ছে সব সময় শত্রুপক্ষের শক্ত জায়গায় ঘা দিতে হয়।” পাশাপাশি তাঁর মুখে রেড ভলেন্টিয়ারসদের প্রশংসায় শোনা যায়। অন্যদিকে রূপা বলেন, ” কোভিড-লকডাউনের সময় প্রত্যেক মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার যে চেষ্টা সেটিকে আমি কোনও রাজনৈতিক রঙে মেপে দেওয়ার ভীষণ বিরোধী। যারা এই অন্নটা তুলে দিচ্ছেন তাঁরা কি ভাত দেওয়ার সময় জিজ্ঞাসা করেছেন আপনাকে ভাতটা দিচ্ছি, আমাকে কি ভোটটা দিয়েছেন? বিধানসভায় আসনসংখ্যা শূন্য হয়ে যাওয়ার পরেও যে স্পিরিটে ওঁরা কাজ করেছে সেই কাজকে কেউ সমর্থন জানাবে না এমন মানুষ বোধহয় নেই। সেই কারণেই এসেছি।” ফেসবুক পোস্টেও রূপা জানালেন সে কথাই। রাজনীতির বাইরে গিয়ে আপাতত ভাল কাজকে সমর্থন করতে চান তিনি।

আরও পড়ুন- সিপিএম-এ বিজেপির রূপা, অনিন্দ্য!… ক্ষোভ উগরে দিয়ে দল ত্যাগের কথা রাহুল-শ্রীলেখার মুখে