স্নেহা সেনগুপ্ত
তিনি ইডির হাতে গ্রেফতার-হওয়া রাজ্যের শাসক দলের মহাসচিব তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’। তার বিলাসবহুন আবাসন থেকে ২১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করার পর সেই ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করেছে ইডি। এহেন অর্পিতার মুখ বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে টেলিভিশনের পর্দায় দেখার পর বিস্ময়ে হতবাক টলিউডের একাংশ। কারণ, বর্তমানোো শিক্ষামন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ এই তরুণী তার কেরিয়ার শুরু করেছিলেন অভিনয় জগতে পা রেখে। অভিনয় করেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, জিৎ, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে খবর, কেরিয়ারের শুরুতে নিতান্ত সাধারণ ছিলেন অর্পিতা। যদিও বরাবরই ভীষণ উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন তিনি। তিনি কাজ করেছিলেন বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি প্রেসিডেন্ট তথা একদা পরিচালক সংঘমিত্রা চৌধুরীর সঙ্গে। সংঘমিত্রার একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি ও একটি ডকু-ফিচারে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। TV9 বাংলার তরফে শনিবার যোগাযোগ করা হয় সংঘমিত্রার সঙ্গে।
TV9 বাংলাকে সংঘমিত্রা বলেছেন, ‘‘২০১৩-র আগে আমার একটি ফটো-ফিচার ‘বিদেহীর খোঁজে রবীন্দ্রনাথ’-এ ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিল অর্পিতা। অত্যন্ত সাদাসিধে, মিষ্টি দেখতে সাধারণ একটা মেয়ে ছিল অর্পিতা। ওর কাছে তখন গাড়িও ছিল না। বলত, ডানলপ ব্রিজের কাছে ওর বাড়ি। সেখান থেকে হলুদ ট্যাক্সি চেপে স্টুডিয়ো পাড়ায় আসত ও। খুবই সাধারণ জীবনযাত্রা ছিল মেয়েটার। তার যে এই রকম পরিণতি হবে, ভাবতেই পারছি না।’’ অর্পিতা প্রসঙ্গে সংঘমিত্রার আরও সংযোজন, ‘‘মেয়েটার মধ্যে প্রতিভা ছিল। কিছু দক্ষিণী, ওড়িয়া ছবিতেও অভিনয় করেছিল অর্পিতা। মনে হয়েছিল, ভাল করে শেখালে ওর অভিনয়টা হবে। কিন্তু বরাবরই মনে হয়েছিল অর্পিতা ভীষণই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। যদিও উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকা খারাপ নয়। কিন্তু বারবরাই মনে হত সিঁড়ি দিয়ে না-উঠে একেবারে এসকেলটরে চড়ে উপরে ওঠার প্রবণতা অর্পিতার মধ্যে ছিল শুরু থেকেই।’’
২০১১-য় ‘বিদেহীর খোঁজে রবীন্দ্রনাথ’-এ অভিনয় করার পর সংঘমিত্রার একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবিরও নায়িকা ছিলেন অর্পিতা। সেই ছবির নাম ‘ভূত’। মুখ্য চরিত্র অর্থাৎ ভূতের চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। বৃহস্পতিবার সন্ধের পর অর্পিতাকে টিভির পর্দায় দেখে আক্ষরিক অর্থেই ভূত দেখার মতো চমকে উঠেছেন তার ঘনিষ্ঠ তথা টলিপাড়ার একাংশ। সংঘমিত্রা আরও বলেছেন, ‘‘পুরোটা টিভির পর্দায় দেখার পর সত্যিই আমার অর্পিতার জন্য কষ্ট হচ্ছে। এই পরিণতি কারও হতে পারে? আমার তো ওকে দেখে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল।’’
একসময় চুটিয়ে ছবি পরিচালনা করেছেন সংঘমিত্রা। রাজনীতিতে আসার পর তিনি বিনোদন জগৎ থেকে সরে আসেন। এক দশক আগে তিনি যখন বিজেপিতে যুক্ত হন, তার অল্প দিন পর থেকেই সংঘমিত্রার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন অর্পিতা। একটা সময় পর আর কোনও যোগাযোগই করেননি। তাঁকেও আর ফোন করেননি তিনি, ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি প্রেসিডেন্ট সংঘমিত্রা।
২০০৯ সালে ওড়িয়া ছবি ‘প্রেমরোগী’র নায়িকা ছিলেন অর্পিতা। পরের বছর ২০১০ সালে ওড়িয়া ছবি ‘তোরা মোরা জোড়ি সুন্দরা’ ছবিতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। ২০১৭ সালে ‘চিন্নামা লাভ’ নামে একটি তামিল ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। জিৎ-স্বস্তিকা অভিনীত ‘পার্টনার’ ছবিতে অর্পিতা ছিলেন সহ-শিল্পী। আবার অনুপ সেনগুপ্ত পরিচালিত, প্রসেনজিৎঅভিনীত ছবি ‘মামা-ভাগ্নে’তেও অভিনয় করেছেন অর্পিতা। এ ছাড়াও অভিনয় করেছেন ‘জোর যার মুলুক তার’ ছবিতে।
আর্থিক কেলেঙ্কারিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি ইডির গ্রেফতার হয়েছেন অর্পিতাও। সংঘমিত্রা বলেছেন, ‘‘২০১৩-র পর থেকে পুরোপুরিই ছবি থেকে সরে আসে অর্পিতা। ছবির দিকে আর কোনও মনোযোগই ছিল না ওর। নিতান্ত সাধারণ জীবনযাত্রার মেয়েটা ধীরে-ধীরে পার্টিতে যাওয়া শুরু করল। শুধুই যেন সোশ্যালাইজ়িংয়ের উপর জোর দিল। তারপর তো এই খবর জানতে পারলাম। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী যে কাণ্ডে যুক্ত হয়েছেন, সেই কাণ্ডে ওর নাম জ্বলজ্বল করছে। এখন সকলে ভাবছে পার্থর টাকা মানে ওরই টাকা। মেয়েটার কেরিয়ারটা ধ্বংস হয়ে গেল।’’
ঘটনাচক্রে এ দিন TV9 বাংলার তরফে বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা অর্পিতার মায়ের কাছে যাওয়া হয়। অর্পিতার মা জানান, মেয়ে সিরিয়ালে, সিনেমায়, প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করত। আর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা? সে ব্যাপারে বেশি কিছু জানতেন না অর্পিতার মা।
স্নেহা সেনগুপ্ত
তিনি ইডির হাতে গ্রেফতার-হওয়া রাজ্যের শাসক দলের মহাসচিব তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’। তার বিলাসবহুন আবাসন থেকে ২১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করার পর সেই ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করেছে ইডি। এহেন অর্পিতার মুখ বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে টেলিভিশনের পর্দায় দেখার পর বিস্ময়ে হতবাক টলিউডের একাংশ। কারণ, বর্তমানোো শিক্ষামন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ এই তরুণী তার কেরিয়ার শুরু করেছিলেন অভিনয় জগতে পা রেখে। অভিনয় করেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, জিৎ, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে খবর, কেরিয়ারের শুরুতে নিতান্ত সাধারণ ছিলেন অর্পিতা। যদিও বরাবরই ভীষণ উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন তিনি। তিনি কাজ করেছিলেন বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি প্রেসিডেন্ট তথা একদা পরিচালক সংঘমিত্রা চৌধুরীর সঙ্গে। সংঘমিত্রার একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি ও একটি ডকু-ফিচারে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। TV9 বাংলার তরফে শনিবার যোগাযোগ করা হয় সংঘমিত্রার সঙ্গে।
TV9 বাংলাকে সংঘমিত্রা বলেছেন, ‘‘২০১৩-র আগে আমার একটি ফটো-ফিচার ‘বিদেহীর খোঁজে রবীন্দ্রনাথ’-এ ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিল অর্পিতা। অত্যন্ত সাদাসিধে, মিষ্টি দেখতে সাধারণ একটা মেয়ে ছিল অর্পিতা। ওর কাছে তখন গাড়িও ছিল না। বলত, ডানলপ ব্রিজের কাছে ওর বাড়ি। সেখান থেকে হলুদ ট্যাক্সি চেপে স্টুডিয়ো পাড়ায় আসত ও। খুবই সাধারণ জীবনযাত্রা ছিল মেয়েটার। তার যে এই রকম পরিণতি হবে, ভাবতেই পারছি না।’’ অর্পিতা প্রসঙ্গে সংঘমিত্রার আরও সংযোজন, ‘‘মেয়েটার মধ্যে প্রতিভা ছিল। কিছু দক্ষিণী, ওড়িয়া ছবিতেও অভিনয় করেছিল অর্পিতা। মনে হয়েছিল, ভাল করে শেখালে ওর অভিনয়টা হবে। কিন্তু বরাবরই মনে হয়েছিল অর্পিতা ভীষণই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। যদিও উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকা খারাপ নয়। কিন্তু বারবরাই মনে হত সিঁড়ি দিয়ে না-উঠে একেবারে এসকেলটরে চড়ে উপরে ওঠার প্রবণতা অর্পিতার মধ্যে ছিল শুরু থেকেই।’’
২০১১-য় ‘বিদেহীর খোঁজে রবীন্দ্রনাথ’-এ অভিনয় করার পর সংঘমিত্রার একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবিরও নায়িকা ছিলেন অর্পিতা। সেই ছবির নাম ‘ভূত’। মুখ্য চরিত্র অর্থাৎ ভূতের চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। বৃহস্পতিবার সন্ধের পর অর্পিতাকে টিভির পর্দায় দেখে আক্ষরিক অর্থেই ভূত দেখার মতো চমকে উঠেছেন তার ঘনিষ্ঠ তথা টলিপাড়ার একাংশ। সংঘমিত্রা আরও বলেছেন, ‘‘পুরোটা টিভির পর্দায় দেখার পর সত্যিই আমার অর্পিতার জন্য কষ্ট হচ্ছে। এই পরিণতি কারও হতে পারে? আমার তো ওকে দেখে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল।’’
একসময় চুটিয়ে ছবি পরিচালনা করেছেন সংঘমিত্রা। রাজনীতিতে আসার পর তিনি বিনোদন জগৎ থেকে সরে আসেন। এক দশক আগে তিনি যখন বিজেপিতে যুক্ত হন, তার অল্প দিন পর থেকেই সংঘমিত্রার সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন অর্পিতা। একটা সময় পর আর কোনও যোগাযোগই করেননি। তাঁকেও আর ফোন করেননি তিনি, ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি প্রেসিডেন্ট সংঘমিত্রা।
২০০৯ সালে ওড়িয়া ছবি ‘প্রেমরোগী’র নায়িকা ছিলেন অর্পিতা। পরের বছর ২০১০ সালে ওড়িয়া ছবি ‘তোরা মোরা জোড়ি সুন্দরা’ ছবিতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। ২০১৭ সালে ‘চিন্নামা লাভ’ নামে একটি তামিল ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। জিৎ-স্বস্তিকা অভিনীত ‘পার্টনার’ ছবিতে অর্পিতা ছিলেন সহ-শিল্পী। আবার অনুপ সেনগুপ্ত পরিচালিত, প্রসেনজিৎঅভিনীত ছবি ‘মামা-ভাগ্নে’তেও অভিনয় করেছেন অর্পিতা। এ ছাড়াও অভিনয় করেছেন ‘জোর যার মুলুক তার’ ছবিতে।
আর্থিক কেলেঙ্কারিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি ইডির গ্রেফতার হয়েছেন অর্পিতাও। সংঘমিত্রা বলেছেন, ‘‘২০১৩-র পর থেকে পুরোপুরিই ছবি থেকে সরে আসে অর্পিতা। ছবির দিকে আর কোনও মনোযোগই ছিল না ওর। নিতান্ত সাধারণ জীবনযাত্রার মেয়েটা ধীরে-ধীরে পার্টিতে যাওয়া শুরু করল। শুধুই যেন সোশ্যালাইজ়িংয়ের উপর জোর দিল। তারপর তো এই খবর জানতে পারলাম। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী যে কাণ্ডে যুক্ত হয়েছেন, সেই কাণ্ডে ওর নাম জ্বলজ্বল করছে। এখন সকলে ভাবছে পার্থর টাকা মানে ওরই টাকা। মেয়েটার কেরিয়ারটা ধ্বংস হয়ে গেল।’’
ঘটনাচক্রে এ দিন TV9 বাংলার তরফে বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা অর্পিতার মায়ের কাছে যাওয়া হয়। অর্পিতার মা জানান, মেয়ে সিরিয়ালে, সিনেমায়, প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করত। আর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা? সে ব্যাপারে বেশি কিছু জানতেন না অর্পিতার মা।