Yash Dasgupta Controversy: ‘আমার সবকিছু তালগোল পাকিয়ে গেছে’, ছবি মুক্তির ৫দিন আগে যশের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় রীতিমতো আতঙ্কে এনা সাহা
Ena Saha-Chine Badam Controversy: এই ঘটনায় মারাত্মক হতাশ ও আতঙ্কিত ছবির প্রযোজক ও নায়িকা এনা সাহা। TV9 বাংলাকে তিনি কী বললেন, দেখুন:
‘বাংলা ছবির সঙ্গে দাঁড়ান, পাশে দাঁড়ান’… এই ধরনের কিছু কথা এখন প্রায়ই শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। দর্শককে হলে আনার চেষ্টা চলছে খুব। বাঙালি দর্শকের চোখের তারা হয়ে উঠতে চাইছেন বাংলার শিল্পীরা। দক্ষিণকে দেখে অনুপ্রাণিত বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও চায়, সকলে বাংলা ছবি, বাংলা গান, বাংলা সংস্কৃতিকে আঁকড়ে বাঁচতে শুরু করুক। কিন্তু এ কী নিদর্শন তৈরি হচ্ছে, যেখানে একটি বাংলা ছবির মুক্তির ৪-৫দিন আগেই ‘পাশে না দাঁড়িয়ে’ সরে গেলেন খোদ নায়ক!
ছবির নাম ‘চিনে বাদাম’। ১০ জুন মুক্তি পাওয়ার কথা। সেই ছবির নায়কের নাম যশ দাশগুপ্ত। ছবি মুক্তির ৪-৫ দিন আগেই টুইট করে তিনি জানিয়ে দিলেন ‘চিনে বাদাম’-এর সঙ্গে তাঁর আর কোনও সম্পর্কই নেই। শৈল্পিক মতপার্থক্য, অর্থাৎ ক্রিয়েটিভ ডিফারেন্স হয়েছে নাকি তাঁর। ফলে তিনি ছবিটিকে প্রায় খাদের ধারে ঠেলে দিয়ে উল্টো দিকে হাঁটা দিয়েছেন। কী ভাগ্যিস শুটিংয়ের মাঝ পথে ছেড়ে বেরিয়ে যাননি। না হলে গাড্ডায় পড়তেন ছবির প্রযোজক ও ছবির নায়িকা এনা সাহা। এই ঘটনায় মারাত্মক হতাশ ও আতঙ্কিত এনা TV9 বাংলাকে কী বললেন, দেখুন:
প্রযোজক ও অভিনেত্রী এনা সাহা যা বললেন TV9 বাংলাকে:
“আপনারা যেখানে আছেন, আমিও কিন্তু ঠিক সেই জায়গাতেই আছি। গতকাল (রবিবার ০৫.০৬.২০২২) ওই টুইটটা আসার পরে আমি অনেকবার যশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ফোনে যোগাযোগ করতে পারিনি। টুইট করার আগে কিংবা পরে কোনওভাবে যশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি। দুম করে একটা টুইট করেছে, ব্যাস…
আমি কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমাদের ছবি ‘চিনে বাদাম’ মুক্তির আর মোটে চারদিন বাকি। ওকে না জানিয়ে তো আমরা কিছুই করিনি। তাই খুবই অবাক লাগছে সবটা। আমাদের প্রযোজনা সংস্থা জারেকের সঙ্গে পরপর তিনটে ছবিতে ও কাজ করেছে। একই পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিকের সঙ্গে ও দুটি ছবিতে কাজ করেছে। ‘ক্রিয়েটিভ ডিফারেন্স’-এর ব্যাপারটাও আমাদের খুবই অদ্ভুত লাগছে। গোটা ব্যাপারটায় আমি খুব হতাশ হয়েছি।
পূর্বনির্ধারিতভাবে আমাদের ছবি ১০ জুনই মুক্তি পাবে প্রেক্ষাগৃহে। সেখানে আমরা কোনও পরিবর্তনই আনছি না। কারণ, এই ছবিটা তৈরি করতে অনেকগুলো টাকা আমাদের খরচ হয়ে গিয়েছে। এটা প্রচুর টাকার প্রজেক্ট। অনেকগুলো টাকা লগ্নি করা হয়েছে। কথাটা আমি কাউকেই ছোট-বড় করে বলছি না। আমি এই ছবি প্রযোজক। দিনের শেষে আমাকে তো ব্যবসাটা বুঝে নিতেই হবে। যশের প্রতি আমার কোনও রাগ নেই। আমি ওকে খুবই সম্মান করি। আমি সকলকেই সম্মান করি। আপনারা সেটা সকলেই জানেন। মানুষ হিসেবে কাউকেই ছোট-বড় হিসেবে দেখি না।
কিন্তু এই গোটা ঘটনায় আমি খুব ধাক্কা খেয়েছি। মারাত্মক শকড হয়েছি। গতকাল আমি দুর্গাপুরে গিয়েছিলাম। যশের সঙ্গে আমার ৩ জুন দেখা হয়েছিল। এই ছবিটারই প্রচার করছিলাম। শেষ প্রচারের দিন যশ আসেনি। আমি আর শিলাদা (শিলাদিত্য মৌলিক) মিলেই প্রচার করেছিলাম। তারপর আমার সঙ্গে যশের দেখাও হয়নি। আমিও প্রচারের ব্যস্ত ছিলাম।
আমার সবকিছু তালগোল পাকিয়ে গেছে। খালি ভাবছি যে, কী ভুল করলাম যার কারণে যশ বেরিয়ে গেল। আমার প্রযোজনা সংস্থা ও যশের মধ্যে টাকা পয়সারও কোনও গোলমাল ছিল না। প্রচারের আগেই মিটিয়ে দিয়েছিলাম। আর একটা কথা কিছুতেই বুঝতে পারছি না। তা হল, ছবি মুক্তির চারদিন আগে ছবি কেন্দ্রিক মতপার্থক্য থাকতে পারে না। ছবির সবকিছুই ও জানে।
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে একটা কথা বলতে চাইব, আগে থেকে ঘোষিত তারিখ, অর্থাৎ ১০ জুনই ছবি মুক্তি পাচ্ছে। সেখানে কোনও পরিবর্তন থাকছে না।
তবে হ্যাঁ একটা কথাই বলব, যশ একটাই মেসেজ করেছে আমাকে – ‘বেস্ট অফ লাক টু ইউ অ্যান্ড ইওর টিম’… এরকমভাবে বেরিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাওয়াতেও কোনও উত্তর আসেনি।”
এর আগেই শিলাদিত্য TV9 বাংলাকে বলেছেন, “যশ তো আগেই জানত আমি কী ধরনের ছবি বানাই। সব জেনেই ও সই করেছিল। এমনকী, শুটের সময়ও দারুণ কাজ হয়েছিল বলেছিল। আমার আগামী ছবিও ওকে আর নুসরতকে নিয়ে। শেষ মুহূর্তে ও কেন এমন বলছে? ওর তো ট্রেলারটাও পছন্দ হয়নি।”
পরিচালকের সংযোজন, “ঝাঁ চকচকে লোক নিইনি বলে প্রথম থেকেই ওর একটা আপত্তি ছিল। ২০২২ সালে এসে পিছন দিয়ে ধোঁয়া উড়বে, শ্যাম্পু করা চুল উড়বে এমন ছবি বানানো আমার স্টাইল নয়। সেটা ও জানতই। এমনকী, ট্রেলার বের হওয়ার পরও যশকে একটু অন্যভাবে দেখে সবাই প্রশংসাও করেছিল। কালো ছেলেকে কেন আমি সিনে নাচ করাব এ সব নিয়ে যদি কারও প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে তো আমার কিছু বলার নেই।””