মাঝরাতে সুচিত্রা সেন বাড়িতে ডাকলেন ঋত্বিক ঘটককে, পরিচালক ঘরে ঢুকতেই…
সুচিত্রা সেন চোখের সামনে যখন দেখছেন, সুপ্রিয়া, মাধবীরা ঋত্বিক ঘটকের একের পর এক ছবি নায়িকা হয়ে উঠছেন। দেশ-বিদেশের প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছেন, কিন্তু ঋত্বিক তাঁর কাছেও ঘেঁষছেন না! কিন্তু ঋত্বিকের সঙ্গে তো তাঁর কোনও ঝগড়া নেই!

সুচিত্রা সেন মহানায়িকা। সিনেপ্রেমীদের কাছে তিনি ছিলেন চোখের মণি। আর তাই তো বক্স অফিসের অঙ্ক নিজেদের হাতের মুঠোয় রাখতে, সেই সময় প্রযোজকদের লম্বা লাইন পড়ত সুচিত্রা সেনের বাড়ির সামনে। কিন্তু মহানায়িকা হয়েও তাঁর একটা খেদ ছিল। চোখের সামনে যখন দেখছেন, সুপ্রিয়া, মাধবীরা ঋত্বিক ঘটকের একের পর এক ছবির নায়িকা হয়ে উঠছেন। দেশ-বিদেশের প্রশংসা, পুরস্কার কুড়িয়ে নিচ্ছেন, কিন্তু ঋত্বিক তাঁর কাছেও ঘেঁষছেন না! ঋত্বিকের সঙ্গে তো মহানায়িকার তেমন কোনও ঝগড়াও ছিল না। উলটে বন্ধুত্বই ছিল! তাহলে কেন মহানায়িকাকে নিয়ে কোনও ছবি করেননি ঋত্বিক?
ঋত্বিকের ছবিতে সুপ্রিয়া, মাধবীরা সুযোগ পেলেও, মহানায়িকা কেন সুযোগ পাননি, তা নিয়ে নানান প্রশ্ন ঘোরে টলিউডের আনাচকানাচে। অনেকে বলেন, মহানায়িকার দাম্ভিক ও নায়িকা সুলভ আচরণ নাকি মোটেই পছন্দ ছিল না ঋত্বিকের। আর সেই কারণেই নাকি ঋত্বিক চাইতেন না, তাঁর ছবিতে অভিনয় করুক সুচিত্রা।
সেই সময়ের এক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়, ঋত্বিক ও সুচিত্রাকে নিয়ে এক দীর্ঘ প্রবন্ধ। যেখানে উল্লেখ করা হয়, সুচিত্রার সঙ্গে নাকি দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ঋত্বিকের। সিনেমায় অভিনয় না করলেও, দুজনেই দুজনের বাড়িতে যেতেন, শুধুই আড্ডার জন্য। আর সেই বন্ধুত্বের খাতিরেই, মাঝরাতে ঋত্বিককে ফোন করে বসেন সুচিত্রা। সেই রাতেই বাড়িতে আসতে বলেন পরিচালককে। ঋত্বিকও মহানায়িকার ডাক এড়িয়ে যাননি।
সেই প্রবন্ধ অনুযায়ী, হাতে চিত্রনাট্যের খাতা নিয়েই সুচিত্রার বাড়িতে গিয়েছিলেন ঋত্বিক। ছবির নাম ‘রঙের গোলাম’। স্ক্রিপ্ট শুনে সুচিত্রা রাজিও হন। এমনকী, ছবির শুটিং শুরুও হয়। কিন্তু অজানা কারণে ছবির শুটিং বন্ধ হয়ে যায়। হারিয়ে যায় সেই প্রিন্ট। তারপর আর ঋত্বিকের ছবিতে অভিনয় করা হয়নি সুচিত্রা। এই আক্ষেপ নিয়েই বাদবাকি জীবন কাটে মহানায়িকার।





