২০০৩ সাল। ২৪ জুলাই। এদিনে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হারিয়েছে অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেতা সমিত ভঞ্জকে। যার অভিনয়ের ধার। সুঠাম চেহারা নজর কেড়েছিল আপামর বাঙালির। রোমান্টিক হিরো হোক বা প্রতিবাদী চরিত্র সমিত সবেতেই সেরাটা দিয়েছেন। তাই হয়তো, সত্যজিৎ রায়ের মতো কিংবদন্তি পরিচালকরা অবলীলায় তাঁকে বলতে পারতেন, তোমার মতো করে তুমি অভিনয় করতে পারো! তবে সেই সমিত ভঞ্জই একবার এতটাই টেনশনে পড়ে গিয়েছিলেন যে সত্যজিৎ অ্যাকশন বলতেই হাত-পা কেঁপে উঠেছিল তাঁর।
১৯৭০ সালে মুক্তি পায় সত্যজিৎ রায়ের অনবদ্য ছবি অরণ্যের দিন রাত্রি। এই ছবিতে সমিত ভঞ্জ ছাড়াও অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর, রবি ঘোষ, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, সিমি গেরেওয়ালের মতো অভিনেতারা। এই ছবিতেই সমিতের সঙ্গে সিমির এক অন্তরঙ্গ দৃশ্য ছিল। সেটার শুটিং করতে হবে ভেবেই টেনশনে ঘেমে নেয়ে গিয়েছিলেন সমিত। শুধুই ভাবছিলেন, সামনে স্বল্পবসনা বম্বের নামকরা হিরোইন সিমি এসে দাঁড়ালে, কীভাবে সামলাবেন নিজেকে? অভিনয় করতে পারবেন তো! অনেক ভেবে চিন্তে, রবি ঘোষকে এই দুশ্চিন্তার কথা জানান সমিত। সমিতের কথা শুনে রবি ঘোষ বলেন, নিজে থেকে কিছু করবি না, মানিকদা যেভাবে করবে সেটাই করবি। যা দেখাবে একেবারে সেটাই করবি।
পরের দিন সমিত নিজেই এই দুশ্চিন্তার কথা জানান সত্যজিৎ রায়কে। সত্যজিৎ তাঁকে টেনশন করতে বারণ করেছিলেন। শেষমেশ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হল। সমিত কতটা কী পারল, তা জানতে সৌমিত্র, শুভেন্দু, রবি হাজির হলেন সত্যজিতের কাছে, মানিকদা বেশি কথা না বাড়িয়ে বললেন, ছেলে খুব চালু, যা দেখিয়েছি, তার থেকে বেশিই করেছে!