
উত্তম কুমার ও সুপ্রিয়া চৌধুরীর সম্পর্ক নিয়ে নানা মুণির নানা কথা। কিন্তু এই দুটি মানুষকে যাঁরা খুব কাছ থেকে চিনতেন, জানতেন, তাঁদের কাছে উত্তম-সুপ্রিয়ার প্রেম সাধারণের ভাবনা থেকে ছিল অনেক উর্ধ্বে। আর তাই তো সুচিত্রা সেন হোক বা মাধবী মুখোপাধ্য়ায়, উত্তম-সুপ্রিয়ার রিয়েল জুটিকে সদা সম্মান করে এসেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
মাধবী তাঁর অটোবায়োগ্রাফিতে লিখেছিলেন, উত্তম, সুপ্রিয়ার সঙ্গে তাঁর মজাদার বন্ধুত্বের কথা। যে বন্ধুত্বের মধ্যে ছিল না কোনও রেষারেষি, ছিল না কোনও লড়াই। আর সেই বন্ধু্ত্বকে সঙ্গে নিয়ে সিনেমার শুটিংয়ের মাঝে আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া চলত, চলত রসিকতাও।
সময়টা ছয়ের দশকে শেষ। একটি ছবির শুটিংয়ে আউটডোরে গিয়েছিলেন উত্তম, সুপ্রিয়া ও মাধবী। সঙ্গে ছিলেন অনুভা ঘোষও। শুটিংয়ের মাঝে হঠাৎই মাধবী লক্ষ্য করলেন, উত্তম-সুপ্রিয়া পাশের ঘরে দরজা আটকে ভিতরে রয়েছেন। আর অন্য ঘরে অনুভা ও মাধবী। মাধবী লক্ষ্য করলেন, যে ঘরে ভিতর উত্তম ও সুপ্রিয়া রয়েছেন, তার দরজা বন্ধ হলেও, জানালা খোলা। ব্যস, মাধবীর মাথায় এল দুষ্টু বুদ্ধি। হাতে একগুচ্ছ নয়নতারা ফুল নিয়ে পৌঁছে গেলেন সেই খোলা জানলার ধারে। ঘরের ভিতর উঁকি দিয়েই মাধবী দেখেন, উত্তম-সুপ্রিয়া নিশ্চিন্তে গল্প করছেন। সুযোগ বুঝেই মাধবী জানালা দিয়ে উত্তম-সুপ্রিয়ার গায়ে ছুঁড়তে শুরু করলেন ফুল। হঠাৎ করে এই পুষ্পবৃষ্টি দেখে চমকে উঠলেন উত্তম-সুপ্রিয়া। তারপরই মাধবীর চিৎকার। মাধবী উচ্চস্বরে বলে উঠলেন, তোমার পতি সেবায় তুষ্ট হয়ে দেবতা পুষ্প বৃষ্টি করছেন! সেদিন মাধবীর এই রসিকায় হেসে কুপোকাত হয়েছিলেন উত্তম ও সুপ্রিয়া দুজনেই।