
জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালকের পাশাপাশি শচীন দেব বর্মন ছিলেন বেশ রসিক মানুষ। কখন যে তাঁর মাথায় কী খেয়াল ঘুরছে, তা আন্দাজ করাও ছিল নাকি কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অন্তত, তাঁর ঘনিষ্ঠরা এমনটিই মনে করতেন। অনেকে তো বলতেন, শচীনকর্তা যদি সুরকার না হতেন, তো নিশ্চয়ই ভাল অভিনেতা হতেন, কেননা, মাঝে মধ্যেই এমন সব কাণ্ড করে ফেলতেন, যা দেখে লোকে হাঁ হতে থাকত। হ্য়াঁ, এমনই এক কাণ্ডের সাক্ষী ছিলেন কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী মান্না দে।
সময়টা পাঁচের দশক। সেই সময় মান্না দে ও শচীন দেব বর্মনের বন্ধুত্বের কিসকা ছিল খুবই জনপ্রিয়। তবে বরাবর শচীনকর্তাকে নিজের দাদার মতো ভালবেসেছিলেন মান্না। এক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শচীন দেব বর্মনের এক মজার কথা তুলে ধরেছিলেন মান্না দে। তিনি জানিয়ে ছিলেন, হুইস্কির বোতল নিয়ে কী কাণ্ড করেছিলেন এসডি বর্মন।
রাত তখন প্রায় ৯ টা। হঠাৎই মান্না দের বাড়ির কর্লিং বেল বেজে ওঠে। গায়ক দরজা খুলতেই দেখেন শচীনকর্তা দাঁড়িয়ে। মান্না দে কিছু বলার আগেই শচীন বলেন, এক বোতল হুইস্কি, একটা গ্লাস আর একটা পাঁপড় ভাজা নিয়ে আয় তো! শচীন বর্মনের মুখে এমন কথা শুনে একটু চমকেই গিয়েছিলেন মান্না দে। তবে মুখে কিছু না বলে, শচীনকর্তার আদেশ পালন করলেন। শচীন দেব বর্মন ঝটপট গ্লাসে মদ ঢেলে চুমুক দিলেন। তারপর সটাং সোফা থেকে উঠে বোতল হাতে বেরিয়ে গেলেন! মান্না তো অবাক! শুধু মদ খেতেই এসেছিলেন শচীন?
আসল গপ্পো ফাঁস হল পরেরদিন। মান্নার সঙ্গে শচীনের দেখা হতেই, সুরকার বললেন, ”দক্ষিণ ভারত থেকে এক প্রযোজক ও পরিচালক এসেছিলেন। তাঁদের ছবিতে সঙ্গীত দেওয়ার জন্য বলছিলেন। নানা বাহানা করেও কিছুতেই ওদের তাড়াতে পারছিলাম না। তাই তোর থেকে মদের বোতল নিয়ে এসে একটু মদ্যপের অভিনয় করি। আমাকে ওরকম নেশায় দেখে আর কথা বাড়ায়নি প্রযোজক ও পরিচালক। দূর যে ভাষা জানি না, সেই ছবিতে আবার সুর দেওয়া যায়! ” শচীন দেব বর্মনের এমন কাণ্ড দেখে সেদিন সত্যিই চমকে গিয়েছিলেন মান্না দে।