
বলিউডের স্বজনপোষণ থেকে ব্যক্তিগত সমস্যার নানা গল্প ঘুরে বেড়ায় । তবে এমন অনেক কাহিনিও রয়েছে, যা বলিউডের এক অন্য ছবি তুলে ধরে।
সময়টা ছয়ের দশক। সেই সময় পরিচালক এস এ আকবর একটি ছবি তৈরির পরিকল্পনা করেন। ছবির নাম ছিল ‘ছোটে নবাব’। এই ছবির মুখ্য চরিত্র ছিল মেহমুদ, হেলেন ও জনি ওয়াকার। প্রসঙ্গত এই ছবির প্রযোজক ছিলেন মেহমুদ। এই ছবির সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে এস ডি বর্মনকে চাইছিলেন পরিচালক। তবে সময় না থাকার জন্য এস ডি বর্মন কাজটি করতে রাজি হননি। সেই সময় স্টুডিওতে রিহার্স করছিলেন আর ডি বর্মন। আরডি বর্মন তাঁর বাবাকে বেশ কিছু ছবিতে সহকারী সঙ্গীত শিল্পী হিসেবেও কাজ করে ফেলেছেন, সেই সবটাই জানতেন মেহমুদ। যেহেতু তিনি এই ছবির প্রযোজকও ছিলেন, তাই আর বিলম্ব না করে আরডি কেই এই ছবির সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করেন। আরডি বর্মন তাঁর প্রথম ছবির প্রথম গানের সঙ্গীত তৈরি করেই ঠিক করেন লতা মঙ্গেশকরকে শিল্পী হিসেবে নেবেন। কিন্তু সমস্যা হল সেই সময় এস ডি বর্মন ও লতা মঙ্গেশকরের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল না। এমনকী, তাঁরা একে অপরের সঙ্গে কাজ করতেন না। এই অবস্থা বেশকিছু বছর চলে।
এই সমস্যার কথা আর ডি বর্মনেরও জানা ছিল, তবুও তাঁর প্রথম ছবির প্রথম গান লতাজিকে দিয়েই করাতে চাইলেন। সেইমত এস ডি বর্মনের আর এক সহায়ক জয়দেবের সাহায্য নিয়ে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আর ডি বর্মন। লতা মঙ্গেশকর আরডিকে অনেক ছোট থেকেই চিনতেন। একবার ছোট বেলায় আরডি বর্মন মহালক্ষ্মী স্টুডিওতে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখা করে অটোগ্রাফ নিতে পৌঁছে ছিলেন এবং লতাজিও মজা করে আরডি বর্মনকে অটোগ্রাফের সঙ্গে লিখে দেন দুষ্টমি বন্ধ করো আরডি। কারণ লতাজি জানতেন আরডি খুব দুষ্টমি করেন। এর ঠিক পাঁচ বছর পর আরডি বর্মন তাঁর জীবনের প্রথম ছবির প্রথম গানের জন্য লতা মঙ্গেশকরকে ভাবেন। লতা মঙ্গেশকর আরডির বাবা সুরকার এস ডি বর্মনের সঙ্গে ঝামেলা থাকলেও আর ডি বর্মনের সুরে গান গেয়েছিলেন। সেই গানের কথা ছিল ‘ ঘর আয়ে ঘির আয়ে সাওয়ান…’। এই ঘটনাই উদাহরণ রাখে বলিউডের অন্দর মহলে শিল্পীদের মধ্যেকার সমস্যা সৃষ্টির কাজে বাধা হয় না।