
সময়টা পাঁচের দশকের শেষ এবং ছয়ের দশকের শুরু। সেই সময় হিন্দি ছবিতে অভিনয় করার ডাক পেলেন ভানু বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এর আগে তেমনভাবে মুম্বই (তখন বম্বে) যাওয়া হয়নি তাঁর। কিন্ত সেবার প্রায় ১০ দিন মতো আরবসাগরের তীরেই কাটিয়ে ছিলেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তি অভিনেতা। আর সেবার ভানুর সঙ্গে এমন এক কাণ্ড ঘটে, যা আমৃত্য়ু মনে রেখেছিলেন তিনি।
কাণ্ডটা একটু বিশদে বলা যাক। সেবার মুম্বইতে পা রাখার পর শচীন দেব বর্মনের বাড়িতে দুপুরে খাওয়ার নিমন্ত্রণ পেলেন ভানু বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এমনিতেই শচীনকর্তার খুব বড় অনুরাগী ছিলেন ভানু। অন্যদিকে, ভানুকে দারুণ স্নেহ করতেন এসডি বর্মন। কলকাতা এলেই ভানুর বাড়িতে পাত পেড়ে খেতেন। সেই স্নেহের কারণেই ভানু মুম্বইয়ে পা রাখতেই নিমন্ত্রণ পেলেন শচীনকর্তার। আর সেই বাড়িতে পৌঁছে বিশাল এক সারপ্রাইজ পেলেন অভিনেতা।
সেদিন দুপুরের ভোজে ঠিক সময়ই শচীনকর্তার বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন ভানু। খাবার টেবিলে তখন এলাহি আয়োজন। মুম্বইয়ে বসে একেবারে বাঙালি খাবারের সম্ভার। সুক্তো থেকে শুরু করে ডাটা চচ্চড়ি, বাঁধাকপির ঘণ্ট, কচুর শাক, কী কী ছিল না! কিন্তু ভানুর জিভে লেগে থাকল মুরগির মাংসর অসাধারণ স্বাদ। শচীনকর্তার স্ত্রীকে মাংস রান্নার প্রশংসা করতেই গিয়েই ফোড়ন কাটলেন এসডি বর্মন। ভানুকে বলে উঠলেন, এটা আমার স্ত্রী রান্না করেনি। তুমি আসছো জেনে, সকালবেলা রফি (গায়ক মহম্মদ রফি) নিজের হাতে মুরগির মাংস রান্না করেছেন! শচীনকর্তার মুখে এমন কথা শুনে একেবারে হতবাক ভানু। যে মহম্মদ রফির গান তাঁর মন ছুঁয়ে যায়। দেশের এত বড় শিল্পী, সে আমার জন্য নিজে হাতে মাংস রান্না করেছেন!
এরপর রফির সঙ্গে দেখাও করেন ভানু। সেদিন গায়ককে নমস্কার করে একটাই কথা বলেছিলেন অভিনেতা, আপনার কণ্ঠের পাশাপাশি আপনার হাতের রান্নারও ফ্যানও হয়ে গেলাম!