
মা-বাবার সঙ্গে পুরী ঘুরতে গিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। কিন্তু এই পুরী ভ্রমণই যে তাঁর জীবনটা একেবারে পালটে দেবে, তা আন্দাজও করতে পারেননি তিনি। তবে সুচিত্রা তখন, মহানায়িকা নন, বরং বাংলাদেশের মেয়ে রমা দাশগুপ্ত। বয়স তাঁর মেরেকেটে ১৬। আর সেই সুইট সিক্সটিনেই সুচিত্রার সঙ্গে ঘটে গেল এমন ঘটনা, যা রমার জীবনকে একেবারে পালটে দিল।
ব্য়াপারটা একটু খোলসা করে বলা যাক। মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জীবন কাহিনি নিয়ে অনুরাগীদের কৌতুহলের শেষ নেই। কিন্তু অন্যদিকে, বরাবরই সুচিত্রা ছিলেন একেবারে প্রাইভেট পার্সন। ব্যক্তিগত জীবনকে অন্তরালে রাখতেই চাইতেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই নাকি এমনটিই ছিলেন সুচিত্রা। আর তাই তো সুযোগ পেলেই নিজের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতেন।
তখন তিনি রমা দাশগুপ্ত। বাংলাদেশের পাবনা জেলার মেয়ে। শোনা যায়, বাংলাদেশ থেকে সপরিবারে পুরী ঘুরতে এসেছিলেন ১৬ বছরের রমা। মা-বাবা যখন পুরীর হোটেলের রুমে ছিলেন, একাই সমুদ্রের পারে হাঁটছিলেন। সেই সময়ই সুচিত্রার দিকে নজর যায় দিবানাথ সেনের মায়ের। প্রথম দেখাতেই সুচিত্রাকে ছেলের বউ করার জন্য পছন্দ হয়ে যায় তাঁর। তখন দিবানাথ মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। বালিগঞ্জ নিবাসী। পুরীতেই সুচিত্রার বাবাকে দিবানাথের মা, মনের ইচ্ছার কথা জানান। সুচিত্রাকে বেছে নেন পুত্রবধূ হিসেবে। সেদিন সুচিত্রার বাবা করুণাময় দাশগুপ্তও এই প্রস্তাব মেনে নেন। পাকাকথা সেরে তাঁর কয়েকমাস পরেই ধূমধাম করেই বিয়ে হয় রমার।
শোনা যায়, স্ত্রীয়ের গান এবং অভিনয় প্রতিভাকে কাজে লাগাতে দিবানাথই নাকি রমাকে নিয়ে এসেছিলেন টলিপাড়ার স্টুডিওতে৷ ১৯৫২ সালে শেষ কোথায় ছবির মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হলেও, ছবিটি মুক্তি পায়নি। তবে সুচিত্রা থামেননি। নিজের দক্ষতা দিয়ে বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন। এরপরে যা ঘটে তা ইতিহাস। রমা থেকে প্রথমে সুচিত্রা ও পরে মহানায়িকা হয়ে ওঠেন মিসেস সেন।