
তিনি সুচিত্রা সেন। তিনি মহানায়িকা। সেই সময় শোনা যেত, ইন্ডাস্ট্রিতে সুচিত্রার নাকি দারুণ দাপট ছিল। সুচিত্রাকে নিয়ে লেখা নানা প্রতিবেদনেও তাঁর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এমনকী, জানা যায় সুচিত্রার জেদও ছিল দেখার মতো। তাই পরিচালকরা একটু সতর্কই থাকতেন, মহানায়িকার সঙ্গে কাজ করার সময়। এমনই এক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় পরিচালক হরিসাধন দাশগুপ্ত। কমললতা ছবির শুটিংয়ের সময় এমন কাণ্ড ঘটেছিল, যে কারণেই প্রায় তিনমাস বন্ধ থাকে শুটিং। সুচিত্রার জেদের কাছে শেষমেশ হার মানতে হয় পরিচালককেই।
ঘটনাটি একটু বিশদে বলা যাক। সময়টা ছয়ের দশকের শেষ। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কমল-লতাকে সিনেমার পর্দায় নিয়ে আসার প্ল্যান করছিলেন পরিচালক হরিসাধন দাশগুপ্ত। ছবির নায়ক-নায়িকা উত্তম-সুচিত্রা। কিন্তু ছবির শুটিংয়ের আগেই পরিচালকের সঙ্গে মতবিরোধ শুরু হয় মহানায়িকার।
পরিচালক সুচিত্রাকে স্পষ্ট বলেছিলেন চড়া মেকআপ আর বড় নখ রাখা যাবে না। ছবিতে কমললতা হতে হলে, নখ কাটতে হবে এবং চড়া মেকআপ ছাড়তে হবে। পরিচালকের এই নির্দেশকে নাকচ করে দিয়েছিলেন সুচিত্রা। তারপরই প্রায় তিনমাস বন্ধ থাকে শুটিং। জানা যায়, এই মতবিরোধ ছাড়াও অন্যকিছু সমস্য়ার মুখেও পড়েছিল কমললতা ছবির শুটিং। কিন্তু সুচিত্রা কিন্তু নিজের জেদে অনড় ছিলেন। নখও কাটেননি। মেক আপ করেছিলেন চড়া। তর্ক-বিতর্ক থামাতে এবং ছবির স্বার্থে সেই ভাবেই ছবির শুটিং শুরু করলেন পরিচালক হরিসাধন দাশগুপ্ত। কারণ, কোন ছবির শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়া, যেকোনও পরিচালকের কাছে বেদনাদায়ক ঘটনা।
পরিচালক হরিসাধন দাশগুপ্তর ছেলে রাজা দাশগুপ্তকে বিয়ে করেন জনপ্রিয় সঞ্চালিকা, অভিনেত্রী চৈতালী দাশগুপ্ত। দ্য ওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেই তিনি এই ঘটনার উল্লেখ করেছেন।