
মহানায়িকার এক ঝলক পাওয়া জন্য হন্যে হয়ে বসে থাকতেন তাঁর গুণমুগ্ধরা। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির শিল্পীরা তো বটেই, বলিউড তারকারাও সুচিত্রা সেনের সঙ্গে একটিবার দেখা করার জন্য নানান চেষ্টা করতেন। এই যেমন, মাধুরী দীক্ষিত, হেমা মালিনী কলকাতায় পা দিলেই, একটিবার সুচিত্রার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নানা অনুরোধ করতেন সেন পরিবারকে। তবে এসবের মাঝে মণীষা কৈরালা, সুচিত্রার এক ঝলক পেতে এমন কাজ করেছিলেন যা হতবাক করার মতো।
ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বলা যাক। প্রথম থেকেই সুচিত্রা সেনের ফ্যান গার্ল বলিউডের ‘ইলু ইলু’ গার্ল মণীষা কৈরালা। মণীষা সবে তখন বলিউডে পা দিয়েছেন। তবে প্রথম ছবি থেকেই নজর কেড়েছিলেন তিনি। মণীষা প্রথম থেকেই চেষ্টায় ছিলেন, কীভাবে সুচিত্রা দর্শন হবে। একবার নাকি সিনেমার কাজে কলকাতায় এসে কাউকে না জানিয়েই সুচিত্রার বাড়িতে ঢুঁ মেরেছিলেন মণীষা। তবে সেবার তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তবে সেবার দেখা না হলেও, চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী।
লেখক সুমন গুপ্ত তাঁর ‘যে জন আছেন নির্জনে’ বইয়ে মণীষার এক কীর্তির কথা লেখেন, যা কিনা সত্য়িই অবাক করার মতো। সুচিত্রা কন্যা মুনমুন সেনকে মহানায়িকার সঙ্গে দেখা করানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন মণীষা। মুনমুন তাঁকে জানিয়ে ছিলেন, মা তো বাড়িতে দেখা করেন না, বিকেল বেলা আইনজীবীর বাড়িতে যাবেন। তুমি যদি লিফটে তাঁকে ধরতে পারো, তাহলে দেখা হওয়া সম্ভব।
মুনমুনের থেকে একথা শুনেই সুযোগের সৎব্যবহার করলেন মণীষা। সেদিন বিকেল হতেই পৌঁছে গেলেন সুচিত্রার বাড়িতে। সুচিত্রা সেন যখন লিফটে নামছেন, মণীষাও সেই লিফটে চট করে ঢুকে পড়েন। মণীষা যেন তাঁর চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। সামনেই দাঁড়িয়ে অসংখ্য মানুষের মতো তাঁরও স্বপ্নের নায়িকা সুচিত্রা সেন। এরপর মণীষা ‘ম্যাডাম’ বলে সুচিত্রার সামনে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েন। মহানায়িকার পা দুটো জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘ম্যাডাম, আমি আপনার খুব বড় ফ্যান। আমি হিন্দি ছবিতে একটু আধটু অভিনয় করি। কয়েক দিন হয়ে গেল। আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য খুব চেষ্টা করছি। আপনি আমায় আশীর্বাদ করুন।’
মণীষার এই কাণ্ডে সুচিত্রা একেবারে চমকে গিয়েছিলেন। তবে মুনমুনকে পড়ে বলেছিলেন, ”মেয়েটা সামনে থেকে দেখতে খুব মিষ্টি। ওকে আমার ভাল লেগেছে।”