
সময়টা ষাটের পাঁচের দশকের শেষ এবং ছয়ের দশকের শুরু। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে তখনও টলিউড নামে ডাকা হয় না। কিন্তু ততদিনে হিরো, ভিলেন, স্টার, সুপারস্টার তকমাগুলোর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে সিনেপাড়া। আর সেই সময় ইন্ডাস্ট্রির, বিশের করে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সুপারস্টার ছিলেন ছবি বিশ্বাস। ব্যারিটন আওয়াজ, সাহেব সুলভ কেতায় গোটা ইন্ডাস্ট্রি তটস্থ হয়ে থাকত। নতুন পরিচালকরা তো নতুন ছবির চিত্রনাট্য, ছবি বিশ্বাসের কাছে নিয়ে যেতেই ভয় পেতেন। আর সেই দাপটের কারণেই, একবার এমন এক কাণ্ড ঘটেছিল, যে সেই সময় সমস্ত ফিল্ম ম্যাগাজিনে বড় বড় করে ছাপানো হয়েছিল। যা আগে কোনওদিনই ঘটাননি, তেমনই কাণ্ড ঘটিয়ে ছিলেন ছবি বিশ্বাস।
কী সেই ব্যাপার? কী ঘটিয়ে ছিলেন ছবি বিশ্বাস?
সেই আমলের এক ফিল্ম ম্যাগাজিন থেকেই পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সবে তখন তিন পরিচালক শচীন মুখোপাধ্যায়, তরুণ মজুমদার ও দিলীপ মুখোপাধ্যায় ‘যাত্রিক’ পরিচালকগোষ্ঠী শুরু করেন। সেই ‘যাত্রিক’ ব্যানারের প্রথম ছবি চাওয়া-পাওয়াতে অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, ছবি বিশ্বাস।
চাওয়া-পাওয়া ছবির অফার নিয়েই যখন ছবি বিশ্বাসের কাছে গিয়েছিলেন তিন পরিচালক, তখন ছবি বিশ্বাসই স্পষ্ট জানিয়ে ছিলেন, দিনে ৫০০ টাকা পারিশ্রমিক দিতে হবে। ছবি বিশ্বাসের মুখে এমন কথা শুনে তো চমকে গিয়েছিলেন তাঁরা। শচীন মুখোপাধ্যায়, তরুণ মজুমদার ও দিলীপ মুখোপাধ্যায় তিন জনই ছবি বিশ্বাসকে জানিয়ে ছিলেন, তাঁরা খুব নতুন পরিচালক। এর উত্তরে ছবি বিশ্বাস অবশ্য পারিশ্রমিক ৫০০ থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকা করেছিলেন। তবে শোনা যায়, কমিয়ে দেওয়ার পরও উত্তম কুমারের থেকেও কিন্তু বেশি পারিশ্রমিক ছিল তাঁর। সময়টা মাথায় রাখা উচিত। তখন উত্তম কুমার, খুবই নতুন ইন্ডাস্ট্রিতে। আর সেই সময় ৫০০ টাকা মানে কিন্তু অনেকটা টাকাই।