
১৯৬৮ সালে পরিচালক পিনাকীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের চৌরঙ্গী ছবি মুক্তির পর থেকেই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রটে গেল উত্তমকুমার চট্টোপাধ্যায় ও শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় নাকি দুই ভাই! আসলে পর্দার বাইরে উত্তম ও শুভেন্দুর সম্পর্কের রসায়নটা এমনই ছিল, যে এই দুই অভিনেতাকে দাদা-ভাই ছাড়া আর কিছু ভাবাই যেত না। শুভেন্দুও সেটাই বিশ্বাস করতেন, আর তাই শেষদিন পর্যন্ত উত্তমকে দাদা বলেই ডেকেছেন। অন্যদিকে উত্তমও, ভাইয়ের মতোই স্নেহ করতেন শুভেন্দুকে।
বেশ কয়েক বছর আগে শুভেন্দুপুত্র অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, উত্তমের প্রতি তাঁর বাবার ভালবাসার এক অপূর্ব নিদর্শনের কথা তুলে ধরেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে শাশ্বত বলেছিলেন, কীভাবে মহানায়কের মৃত্যুর পর উত্তম পুজোতে মেতে উঠতেন শুভেন্দু ও তাঁর পরিবার।
১৯৮০ সালে ২৪ জুলাই মহানায়ককে হারিয়েছে বাঙালি। তাঁর মৃত্যুর ৪৬ বছর পরেও, বাঙালির ম্যাটিনি আইডল এখনও উত্তমই। সালটা ১৯৮১-র ২৪ জুলাই। মহানায়কের মৃত্যুর ঠিক এক বছর পর। শুভেন্দু তাঁর বাড়িতেই উত্তমের স্মৃতিচারণায় ডুব দিতে শুরু করলেন এক বিশেষ আয়োজন। টলিপাড়া এই আয়োজনকে নাম দিয়েছিল উত্তম পুজো।
সাদা পদ্মফুল খুবই পছন্দ করতেন মহানায়ক। ভাই হিসেবে শুভেন্দু, দাদা মহানায়কের সেই পছন্দের কথা জানতেন। আর সেই কারণেই প্রতিটি বছর, উত্তমকুমারের মৃত্যুদিবসে, তাঁর ছবির সামনে সাদা পদ্ম এনে রাখতেন শুভেন্দু। আর সঙ্গে থাকত এক পেগ হুইস্কি। কারণ, হুইস্কি খেতেও খুব ভালবাসতেন চৌরঙ্গীর স্য়াটা বোস!
এক সাক্ষাৎকারেই শাশ্বত জানিয়ে ছিলেন, বাবার শুরু করা সেই উত্তম পুজোর অংশ তিনিও। কেননা, ছোটবেলা থেকে দেখা উত্তমজ্যেঠুই তথা মহানায়কই তাঁর অভিনয়ের অনুপ্রেরণা। বাবা শুভেন্দুর মতোই তিনি মহানায়কের অন্ধভক্ত।