
উত্তম-সুচিত্রা। এই জুটির ম্যাজিককে টেক্কা আজও দিতে পারেন না কেউই। সেই ‘হারানো সুর’ ছবির অলোক মুখোপাধ্যায় ও রমা মুখোপাধ্য়ায়ের প্রেম হোক, কিংবা ‘সপ্তপদী’র রিনা ব্রাউনের সঙ্গে কৃষ্ণেন্দু। বাংলা চলচ্চিত্র তথা বাঙালিদের কাছে উত্তম-সুচিত্রা প্রেমের অনুপ্রেরণা। এমনকী, সেই সময় রটেই গিয়েছিল, শুধু পর্দায় নয়, সুচিত্রা নাকি সত্যিই মন দিয়েছিলেন উত্তমকে। কিন্তু সেই প্রেমকে গোপনেই রেখেই অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন তিনি।
তবে উত্তম-সুচিত্রার প্রেম নিয়ে টলিপাড়ায় নানা গুঞ্জন শোনা গেলেও, আসলে তাঁরা দুজন ছিলেন দারুণ বন্ধু। এমনকী, উত্তমকে তুই বলে ডাকতেন সুচিত্রা। উত্তম ও সুচিত্রার মধ্য়ে মাঝে মধ্যেই নাকি চলত রাগ-অভিমান। উত্তম যেহেতু ছিলেন রসিক মেজাজের আর সুচিত্রা শুটিং ফ্লোরে গুরুগম্ভীর, তাই নাকি অনেক সময়ই উত্তম ছোটখাটো রসিকতা করলেও, সুচিত্রার মুখ ভারী হয়ে যেত। পরে অবশ্য শুটিং শেষে মেকআপ রুমে সুচিত্রার রাগ ভাঙাতেন উত্তম। আর তার বদলে সুচিত্রা এগিয়ে দিতেন এক কাপ স্পেশাল চা!
ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বলা যাক। জানা যায়, চা খেতে খুবই ভালবাসতেন মহানায়িকা। তবে বাইরের চায়ে একদম না ছিল তাঁর। বরং সুচিত্রার বাড়ি থেকে আসত চায়ের সরঞ্জাম। সাদা ধবধবে চায়ের কাপ, প্লেট, সিলভার ছাকনি, টিপট। সুচিত্রার মেকআপ রুমেই সাজিয়ে রাখা হত সেই চায়ের পাত্র।
জানা যায়, মুড ঠিক করতে সুচিত্রা এক স্পেশাল চা খেতেন। যেখানে চিনির পরিবর্তে থাকত মধু। আর চায়ে থাকত আদা, এলাচ। এক কাপ এমন চায়ে চুমুক দিলেই মহানায়িকার মেজাজ ফুরফুরে হয়ে উঠত।
উত্তমের সঙ্গে কোনও ঝগড়াঝাটি, রাগ অভিমান হলে নাকি, তা মেটাতে উত্তমকেও এই চা খাওয়াতেন সুচিত্রা। আর তা বানাতেন নিজের হাতেই। সেই চা পছন্দ না হলেও, উত্তম চুপটি করে থাকতেন। কারণ মহানায়ক জানতেন, অপছন্দের কথা জানালে সুচিত্রা দুঃখ পাবেন। তবে মাঝে মধ্যে রসিকতা করে নাকি উত্তম বলতেন, এই চা মুখে দেওয়া যায় না! মহানায়কের মুখে একথা শুনে নাকি রেগে মেগে বেশ কয়েকবার শুটিং ফ্লোর মাথায় তুলেছিলেন সুচিত্রা। উত্তম-সুচিত্রার সম্পর্কের এই দিকটা অনেকের কাছেই অজানা ছিল অজানা।
তথ্যসূত্র- আমার দাদা উত্তম কুমার, লেখক তরুণ কুমার