
সিনেপর্দায় সেই ঐতিহাসিক প্রেমের গান। শিশমহলের কোণায় কোণায় আনারকালি ওরফে মধুবালার সৌন্দর্যের ছটা। আর বার বার উচ্চারিত হচ্ছে, সেই ঐতিহাসিক প্রেমের স্লোগান। পেয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া… পেয়ার কিয়া কোয়ি চোরি নেহি কি… মুঘল-এ-আজম ছবিতে নিজের প্রেমের ডঙ্কা বাজিয়ে ছিলেন মধুবালা। উলটে বাবার ভয়ে চুপ করে ছিলেন দিলীপ কুমার। সিনেমার পর্দায় ১৯৬০ সালে এমনটা ঘটলেও, বাস্তবে কিন্তু অন্য ঘটনাই ঘটে। বাস্তবে দিলীপ নয়, বরং বাবার ভয়ে দিলীপের প্রেম অস্বীকার করেন মধুবালা। কিন্তু দিলীপ দমে যাননি। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েই চিৎকার করে বলেছিলেন, মধুবালা আমি তোমায় ভালোবাসি!
ছয়ের দশকে মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম হইচই ফেলে দিয়েছিল। শোনা যায়, মধুবালার প্রতি দিলীপের প্রেম এতটাই গভীর ছিল যে, মধুবালা তাঁকে ছেড়ে যাওয়ায়, নিজেকে বহুদিন ঘরবন্দি করে রেখেছিলেন। তবে মধুবালাকে ভালোবাসায়, যে আদালতে যেতে হবে তাঁকে, তা ভাবনাতেও আসেনি দিলীপের।
ঠিক কী ঘটেছিল?
১৯৮৮ সালে জোয়ার ভাঁটা ছবির শুটিংয়ে প্রথম দেখা দিলীপ ও মধুবালার। এই ছবির প্রায় সাত বছর পর ফের দুজনের দেখা হয় তারানা ছবির শুটিংয়ে। এই সময় থেকে দুজনের দুজনকে ভালোলাগা শুরু। তবে প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া সংদিল নামে এক ছবি থেকে। কিন্তু সমস্যার সূত্রপাত ১৯৫৬ সালে বি আর চোপড়ার নয়া দৌড় ছবির শুটিং ফ্লোরে। এই ছবিতে মধুবালা ও দিলীপ কুমার একসঙ্গে আউটডোরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎই বেঁকে বসেন মধুবালার বাবা আতাউল্লা খান। তাঁর কড়া নির্দেশ, মধুবালা কিছুতেই শহরের বাইরে যাবে না। দিলীপের সঙ্গে তো একেবারেই নয়। বাধ্য হয়েই নায়িকা বদল। মধুবালার জায়গায় এলেন বৈজন্তীমালা।
এই ঘটনা গড়িয়ে ছিল আদালতেও। কোর্টে সাক্ষী দিতে আসেন দিলীপ কুমার। সবার সামনেই চিৎকার করে বলেন, মধুবালার প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা। সঙ্গে জানান, তাঁদের প্রেমের একমাত্র ভিলেনই হলেন মধুবালার বাবা!
দিলীপের মুখে এমন কথা শুনে চমকে উঠেছিলেন মধুবালা। ভরা আদালতে এভাবে বাবাকে অপমান করায় দিলীপের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন মধুবালা। অগাধ ভালোবাসা সত্ত্বেও , শুধু বাবার জন্য এই সম্পর্ক থেকে সরে এসেছিলেন মধুবালা। এভাবেই ইতি পড়ল হিন্দি চলচ্চিত্রের এক অমর প্রেম কাব্যের।