
শ্যামল মিত্র ও উত্তম কুমারের বন্ধুত্ব কিন্তু বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এক উজ্জ্বল অধ্যায়। উত্তমের লিপে, শ্যামল মিত্রর গান কালজয়ী। শোনা যায়, উত্তম ও শ্যামল মিত্র প্রায় একসঙ্গেই কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। তাদের বন্ধুত্বটা তাঁদের একেবারে স্ট্রাগলের সময় থেকেই। দুজনের বাড়িও ছিল ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে।
তবে উত্তমের সঙ্গে শ্যামল মিত্রর বন্ধুত্ব থাকলেও, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল একেবারেই ভাই-দাদার। গায়কের থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট ছিলেন তিনি। সেই কারণে শ্যামল মিত্র তাঁকে পুলু বলেই ডাকতেন। সেই পুলুর জন্যই একবার মঞ্চ ছেড়ে দিয়েছিলেন শ্য়ামল মিত্র। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কান পাতলে আজও সেই ঘটনার কথা শোনা যায়।
সময়টা ১৯৮৫ সাল। মধ্য়মগ্রামে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পৌঁছলেন শ্য়ামল মিত্র ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের সূচি অনুযায়ী, পর পর শ্যামল মিত্র ও সৌমিত্রর মঞ্চে ওঠার কথা। সৌমিত্র আবৃত্তি করবেন। আর শ্যামল মিত্র তবলা, হারমোনিয়াম সহযোগে গাইবেন। সূচি এরকম হলেও, গ্রিনরুমের ঘটল অন্য ঘটনা।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে খুবই স্নেহ করতেন শ্যামল মিত্র। স্নেহের পুলুকে তিনি বললেন, আমার গান করতে সময় লাগবে, তুই আগে করে নে। আমার আগেই মঞ্চে ওঠ। কিন্তু কোনও সিনিয়র শিল্পীর সঙ্গে এমন করাটা মোটেই ঠিক নয় বলেই মনে করেছিলেন সৌমিত্র। তাই শ্য়ামল মিত্রকে বলেছিলেন, দাদা তুমিই আগে যাও, লাগুক সময়!তবে শ্য়ামল মিত্র, সৌমিত্রের কথা শোনেননি। উল্টে, শ্য়ামল মিত্রর কথাতেই আগে উঠলেন মঞ্চে। সহশিল্পীদের মধ্যে এই শ্রদ্ধা প্রকাশ তখনকার একটা রীতি ছিল। আর সে চিত্রই দেখা গিয়েছিল সেদিন মধ্যমগ্রামের সেই অনুষ্ঠানে।