
‘নায়ক’ আর ‘চিড়িয়াখানা’ ছবির পর সত্য়জিৎ আর কোনও ছবিতেই উত্তম কুমারকে বেছে নেননি। তখন সত্যজিতের প্রায় ছবিতেই সুযোগ পাচ্ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ব্য়াপারটাও রাগ না হলেও, উত্তমের একটা অভিমান ছিল। তিনি মহানায়ক হয়েও, সত্যজিতের মাত্র ২ টি ছবি করেছেন, সেটা যেন কোথাও গিয়ে মেনে নিতে কষ্ট হত উত্তমের। তাই একদিন লুকোছাপা না করেই সত্য়জিৎকেই সরাসরি এই অভিমানের কথা বলে ফেললেন উত্তম। কিন্তু তাঁর উত্তরে সত্যজিৎ যেটা বলেছিলেন তা হতবাক করেছিল মহানায়ককে।
সময়টা ১৯৭৮। সেই সময় স্টুডিওপাড়ায় ক্রমাগত লোডশেডিং। এই সমস্য়ার সমাধান থুঁজতে উত্তমকে নিয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাচ্ছিলেন সত্যজিৎ। গাড়িতে বসেই সত্যজিতের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন উত্তম, আচ্ছা মানিকদা, আপনি কিন্তু আমাকে আর কোনও ছবিতে নিচ্ছেন না। কেনও বলুন তো? উত্তমের প্রশ্নে প্রথমে কিছুটা চমকেই উঠেছিলেন সত্যজিৎ। তারপর একটু থেমে পরিচালক বললেন, দ্য়াখো উত্তম, তোমার বয়সটা এখন এমন হয়েছে, যে তুমি না বুড়ো, না যুবক। আরেকটু বুড়ো হয় তুমি, তখন তোমাকে নিয়ে ফের কাজ করব। সত্যজিতের এমন উত্তরে সেদিন চুপ করে থাকেননি উত্তম। বরং পরিচালককে স্পষ্ট জানিয়ে ছিলেন, থাক বুড়োর চরিত্র আমার আর করা হবে না। বরং ওসব সৌমিত্রই করবে!
সত্যজিতের সঙ্গে এই আলাপচারিতার ঠিক দুবছর পরেই মারা যান উত্তম কুমার। অনেকে মনে করেন, উত্তম যেন আগে থেকেই পেয়ে গিয়েছিলেন এই মৃত্যুর খবর। তাই তো সত্যিই বুড়োর চরিত্রে আর অভিনয় করতে হল না মহানায়কের।
তথ্যসূত্র- অচেনা মহানায়ক।