স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার পর হোটেলে গিয়ে উঠলেন সুপ্রিয়া, বেয়ারা সেজে সেখানেই হাজির উত্তম! তারপর…

যখনই কোনও কারণে বা কারও উপর রেগে যেতেন, দুম করে বাড়ি ছেড়ে দিতেন। আর উঠতেন গিয়ে মধ্যকলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে। সেখানে এক-দুদিন থেকে রাগ কমলে তবেই ফিরতেন বাড়ি।

স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার পর হোটেলে গিয়ে উঠলেন সুপ্রিয়া, বেয়ারা সেজে সেখানেই হাজির উত্তম! তারপর...

|

Aug 19, 2025 | 6:00 PM

লোকে বলে সুচিত্রা সেনেরই নাকি দারুণ মেজাজ ছিল। ইন্ডাস্ট্রিতে ছিল নাকি তাঁর দাপট। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, সুপ্রিয়া চৌধুরীর রাগও ছিল মারাত্মক। এক সময় শুটিং ফ্লোর কেঁপে উঠত তাঁর রাগে। তবে সেই রাগ যে শুধুই ফিল্ম ইউনিটের লোক টের পেত, তা কিন্তু একেবারেই নয়। সেই রাগ টের পেতেন সুপ্রিয়া দেবীর স্বামী সাংবাদিক বিশ্বনাথ চৌধুরীও। সেই রাগ টের পেতেন মহানায়ক উত্তম কুমার। সুপ্রিয়ার অগ্নিরূপ দেখেছিলেন তাঁর কাছে মানুষরা। তবে হ্যাঁ, সুপ্রিয়ার একটা অভ্যাস ছিল। যখনই কোনও কারণে বা কারও উপর রেগে যেতেন, দুম করে বাড়ি ছেড়ে দিতেন। আর উঠতেন গিয়ে মধ্যকলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে। সেখানে এক-দুদিন থেকে রাগ কমলে তবেই ফিরতেন বাড়ি। এমনই এক মুহূর্তে সুপ্রিয়ার সঙ্গে এক মজার কাণ্ড ঘটিয়ে ছিলেন উত্তম কুমার। যা কিনা সারাজীবন মনে রেখে দিয়েছিলেন সুপ্রিয়া। আর তা লিখেছিলেন নিজের আত্মজীবনীতে।

তা ঠিক কী ঘটেছিল?

সময়টা ছয়ের দশক। তখন সাংবাদিক বিশ্বনাথ চৌধুরীর সংসারেই ছিলেন সুপ্রিয়া চৌধুরী। ততদিনে মেঘে ঢাকা তারা, আম্রপালি, শুন বরনারী ছবির কল্যাণে সুপ্রিয়া যথেষ্ট জনপ্রিয় ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই সময়ই উত্তমের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব জমে উঠেছে। আর অন্যদিকে স্বামী বিশ্বনাথ চৌধুরীর সঙ্গে নিত্য অশান্তি। একদিন অশান্তি এতটাই বাড়ল যে সুপ্রিয়া ঠিক করে ফেললেন, বিশ্বনাথের সংসারে তিনি আর ফিরবেন না। আর তারপর ছাড়লেন বাড়ি। স্বামীর সঙ্গে অশান্তি করে মধ্য কলকাতার এক জনপ্রিয় হোটেলে গিয়ে উঠলেন সুপ্রিয়া। ঠিক করলেন, কারও সঙ্গে দেখা, সাক্ষাৎ করবেন না। এমনকী, হোটেল কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করলেন, তাঁকে কেউ খুঁজতে এলে যেন, খোঁজ না দেওয়া হয়। এভাবেই প্রায় একসপ্তাহ কেটে গেল সুপ্রিয়ার। শান্তিতেই দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু একদিন বিকেলে হঠাৎই হোটেল রুমের কলিং বেল বেজে উঠল। বিছানা থেকে উঠে গিয়ে রুমের দরজা খুলতেই সুপ্রিয়ার চক্ষু চড়কগাছ!

সুপ্রিয়া দেখলেন, সাদা পোশাক, মাথায় সাদা টুপি পরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন উত্তম কুমার। সঙ্গে তাঁর চায়ের ট্রলি! ভ্রুঁ কুঁচকে সুপ্রিয়া জিজ্ঞাসা করে বসলেন, তুমি এখানে কেন? কীভাবে জানলে আমি এখানে? আর বেয়ারা সেজে এসেছ কেন? সুপ্রিয়ার পর পর প্রশ্নবাণে বিপর্যস্ত উত্তম কুমার, শুধু হাসলেন। আর বললেন, ”বেণু আগে এককাপ চা খাও। তারপর বলছি। ” এরপরই সুপ্রিয়ার জন্য চা বানালেন উত্তম, তারপর বললেন, ”তোমার বাড়িতে ফোন করে জানতে পারলাম, স্বামীর সঙ্গে তোমার অশান্তি হয়েছে। আর তুমি বেশ কিছুদিন ধরে বাড়ি ফিরছ না। ড্রাইভারকে বললাম, তোমার গাড়ির খোঁজ নিতে। জানতে পারলাম তুমি এখানে! আর বেয়ারার পোশাক? সেটা একেবারেই তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে। ”