
‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ ছবির টিম যেমনটি আশঙ্কা করেছিল, তেমনটিই ঘটল। বাংলার সিনেমা হলে ব্রাত্য় হল দ্য বেঙ্গল ফাইলস। পরিচালর বিবেক অগ্নিহোত্রীর এই ছবি নিয়ে বহুদিন ঘরেই বিতর্ক চলছিল। বিশেষ করে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের এক মন্তব্য সেই বিতর্কের বারুদে আগুন দিয়েছিল। যেখানে অভিনেতা বলেছিলেন, এই ছবির নাম ‘দ্য দিল্লি ফাইলস’ থেকে কেন দ্য বেঙ্গল ফাইলস হয়েছে, তার কাছে কোনও ধারণাই দেওয়া হয়নি। এমনকী, শাশ্বত জানিয়ে ছিলেন, তাঁর অভিনীত অংশ ছাড়া, পুরো ছবিটির গল্প সম্পর্কেও তাঁর কোনও ধারণা ছিল না। শাশ্বত এমন মন্তব্য করায়, তাঁকে ভীতু বলেও কটাক্ষ করেন বিবেক ও পল্লবী যোশী। আর এবার বাংলার সিনেমা হল মালিকদের ভয়ের কথা জানালেন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী।
বিবেক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ”বাংলার বহু সিনেমা হলের মালিকদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়েছে, তাঁরা জানিয়েছেন, বাংলা প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁদের কাছে চাপ এসেছে, যাতে ছবিটি না দেখানো হয়। যদিও তাঁরা স্পষ্ট কারও বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। ” বিবেকের দাবি, ” নিজেদের সম্পত্তি বাঁচাতেই সিনেমা হলের মালিকরা দ্য বেঙ্গল ফাইলস দেখাচ্ছেন না।” বিবেক আরও জানিয়েছেন, বাংলার প্রশাসনের এমন আচরণের বিরুদ্ধে তিনি আইনি পথেও হাঁটবেন।
কয়েকদিন আগেই সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই ছবির মুক্তি না আটকানোর অনুরোধ করেছিলেন বিবেক। এই ভিডিয়োতে মমতাকে বিবেক জানালেন, প্রথমত, “আপনি ভারতীয় সংবিধান শপথ নিয়েছেন। ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত রাখারও শপথ নিয়েছেন। এই ছবি ইতিমধ্যেই সিবিএফসি (সেন্সর বোর্ড) থেকে পাস সার্টিফিকেট পেয়েছে, এই সিবিএফসি সাংবিধানিক সংগঠন। সুতরাং এই ছবি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে মুক্তি পায়, তাঁর দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।” বিবেক এই ভিডিয়োতে আরও জানান, ভারতবর্ষ প্রথম থেকেই প্রতারিত। বহু বছর ধরে এই দেশের আত্মা, শিল্প, সাহিত্যকে বেঁধে রাখা হয়েছে। শাস্তি পেয়েছে গোটা দেশ। বিশেষ করে, ডিরেক্ট অ্য়াকশন প্ল্যান ও নোয়াখালিতে হিন্দু গণহত্যার মতো ঘটনা এই দেশকে বিভাজিত করেছে। এই ঘটনা না ঘটলে হয়তো দেশ ভাগ হত না। এই ঘটনা ভুলে গিয়েছে বহু মানুষ, হয়তো বা ধামাচাপা ওদেওয়া হয়েছে।
বিবেকের কথায়, “বাংলা শুধুই ব্যথার ইতিহাস বহন করে তা তো নয়, বাংলা সভ্যতার মুকুট। এই বাংলা এমন একটা প্রদেশ, যেখানে ভারতের নবজাগরণের শুরু। বাংলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, সুভাষচন্দ্র বোস উঠে এসেছেন। এরাঁ সবাই বাংলার সন্তান। বাংলা গোটা দেশকে প্রাণ সঞ্চার করে। জাতীয়তাবাদের শিক্ষা দেয়। কিন্তু এটাও সত্যি, বাংলা এমন এক রাজ্য যা দু’বার বিভাজিত হয়েছে। একবার ১৯০৫ সালে, একবার ১৯৪৭ সালে। বাংলা যতটা আহুতি দিয়েছে, তা হয়তো আর কোনও রাজ্য দেয়নি। কিন্তু নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা কি এই ইতিহাস সম্পর্কে অবগত?” এমনকী, অভিনেত্রী পল্লবী যোশীও সম্প্রতি রাষ্ট্রপতিকেও এই বিষয়ে অবগত করেছেন।