
পরিচালক প্রভাত রায় এই মুহুর্তে অসুস্থ হাসপাতালে ভর্তি। প্রভাত রায় সত্তরের দশক থেকে বলিউডের তাঁর পরিচালকদের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। সেই সুবাদে তিনি বহু তারকাদের কাছ থেকে দেখেছেন। পরবর্তী সময়ে নিজেও বহু হিট ছবি পরিচালনা করেন। তিনি একটি বই লেখেন নাম ‘ক্ল্যাপস্টিক ‘ সেখানেই তাঁর নানা অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন।
বলিউডের তারকাদের মধ্যে অবশ্যই অন্যতম ছিলেন অভিনেতা সঞ্জীব কুমার। সত্তরের দশকে তারকাদের সিক্সপ্যাক না থাকলেও তাঁদের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। যদিও খাওয়া দাওয়া নিয়ে বিশেষ নিয়ম মানতেন না বেশিরভাগ অভিনেতারা। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন সঞ্জীব কুমার। তাঁকে অনেকেই পেটুক হরিভাই বলতেন। কেন বলতেন সেই বিষয়ে প্রভাত রায় লিখেছেন, সঞ্জীব কুমারের আসল নাম ছিল সরিহর জেঠালাল জরিওলা। তাঁকে বলিউডের অন্দরে সকলে হরিভাই নামেই ডাকতেন। ১৯৭৩ সালে পরিচালক শক্তি সামন্ত করছিলেন ‘চরিত্রহীন ‘ ছবি। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছিলেন সঞ্জীব কুমার ও শর্মিলা ঠাকুর। প্রভাত রায় শক্তি সামন্তর সহায়ক হিসেবে কাজ করছিলেন।
প্রভাত রায়ের কথায়, ”একদিন শ্যুট এ হঠাৎই হরিভাই বললেন, ”কি ব্যাপার প্রভাত তোমাদের খিদে পায়না। এতো কাজ করছো, সেই কখন লাঞ্চ করেছ, এবার তো অসুস্থ হয়ে পড়বে।” এই কথা শক্তি সামন্তের কানে যেতে তিনি বুঝতে পারলেন আসলে সঞ্জীব কুমারের খিদে পেয়ে গেছে, তাই একটা ব্রেক নিয়ে স্পট বয়কে সিঙ্গারা আর কালাকাঁদ আনতে বললেন। প্রায় ১২ টা সিঙ্গারা , ১২ টা কালাকাঁদ প্লেটে দেখে , শক্তি সামন্ত শর্মিলা ঠাকুরকে খেতে বললেন, শর্মিলা জানালেন, তিনি এখন খাবেন না তবে হরিভাই নিশ্চিত খাবে। তাতে হরিভাই ( সঞ্জীব কুমার) জানালেন, তিনি সংযম করছেন, ডায়েট করছেন, তাই তিনি খাবেন না। তাতে শর্মিলা ঠাকুর বললেন দেখা যাক কতক্ষণ না খেয়ে থাকেন হরিভাই। তাতে হরিভাই আমাকে বললেন, “দেখ এখন কটা বাজে ৬.২০। ঠিক ৬. ২৫ হলে জানিও ।” আমি বললাম ৬. ২৫ হয়েছে , সঙ্গে সঙ্গে হরিভাই বললেন, দেখলে আমি চাইলাম, তাই পাঁচ মিনিট খেলামনা। তবে এবার মন বলছে খেতে পারি, বলেই সাতটা সিঙ্গারা, সাতটা কালাকাঁদ খেয়ে ফেললেন। এই জন্য হরিভাইকে পেটুক হরিভাই বলা হত। ভোর রাত পর্যন্ত পার্টি করে বেলা বারোটায় ঘুম থেকে উঠতেন। তাই শ্যুট এ আসতেন বেলা বারোটার পর। এই অনিয়মের কারণেই অকালে হরিভাই মারা গিয়েছিলেন। “