Myopia: আজকাল শিশুদের মধ্যেও দ্রুত বাড়ছে চোখের সমস্যা, জিন না জীবনযাত্রা কার হাতে নিয়ন্ত্রণ?
Nearsightedness: মায়োপিয়া হল এমন একটি অবস্থা, যেখানে কাছের জিনিস স্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু দূরের জিনিসগুলি ঝাপসা দেখায়। যখন চোখের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়ে যায় বা চোখের কর্নিয়া বেশি বাঁকানো থাকে, তখন আলোকরশ্মি রেটিনার ওপর সঠিকভাবে ফোকাস করতে পারে না, ফলে দূরবর্তী বস্তুগুলি অস্পষ্ট দেখায়।

আজকের দ্রুতগতির ডিজিটাল যুগে চোখের সমস্যা, বিশেষ করে মায়োপিয়া (Myopia) বা দূরদৃষ্টির সমস্যা (Nearsightedness) অনেকের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাচ্চারা থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরী, অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রশ্ন ওঠে এই সমস্যা কি শুধু বংশগত? নাকি আমাদের আধুনিক জীবনযাত্রাই এর জন্য দায়ী? চলুন, বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাক এই চোখের সমস্যা এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে কিছু তথ্য।
মায়োপিয়া কী এবং কেন হয়?
মায়োপিয়া হল এমন একটি অবস্থা, যেখানে কাছের জিনিস স্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু দূরের জিনিসগুলি ঝাপসা দেখায়। যখন চোখের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়ে যায় বা চোখের কর্নিয়া বেশি বাঁকানো থাকে, তখন আলোকরশ্মি রেটিনার ওপর সঠিকভাবে ফোকাস করতে পারে না, ফলে দূরবর্তী বস্তুগুলি অস্পষ্ট দেখায়।
লক্ষণ:
দূরের জিনিস ঝাপসা দেখা। ঘন ঘন চোখ কচলানো বা পলক ফেলা। চোখে চাপ অনুভব করা। মাথাব্যথা এবং পড়ার সময় চোখ কুঁচকে দেখা।
মায়োপিয়া বংশগত না জীবনযাত্রা? বিশেষজ্ঞ কী বলছেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মায়োপিয়া কেবল একটি বংশগত রোগ নয়। বরং আপনার জীবনযাত্রা বা লাইফস্টাইলও এর জন্য সমানভাবে দায়ী।
দিল্লির এভিয়েন্স আই কেয়ার-এর বিশেষজ্ঞ ডঃ স্বপ্না চান্না জানিয়েছেন, যদি বাবা-মা দুজনের মধ্যে একজন বা উভয়েই মায়োপিক হন, তবে সন্তানের মধ্যে এই সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে, বাচ্চাদের মধ্যে যে হারে মায়োপিয়া বাড়ছে, তার প্রধান কারণগুলি আলাদা। নিম্নে তা নিয়ে আলোচনা করা হল।
মায়োপিয়া কি বংশগত রোগ? মোবাইল, ট্যাব বা কম্পিউটারে দীর্ঘক্ষণ চোখ রাখা।
আউটডোর কার্যকলাপের অভাব: ঘরের বাইরে, প্রাকৃতিক আলোতে খেলার সময় কমে যাওয়া।
ভুল ভঙ্গিতে পড়া: খুব কাছ থেকে বই দেখা বা ভুল ভঙ্গিতে বসে পড়াশোনা করা।
ছোটদের চোখ যেহেতু বেড়ে ওঠার পর্যায়ে থাকে, তাই স্ক্রিনের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি চোখের পেশিতে চাপ ফেলে এবং ধীরে ধীরে দূরের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল করে তোলে।
চোখ ভাল রাখতে মেনে চলুন এই সহজ নিয়মগুলি
ভাল অভ্যাস তৈরি করে মায়োপিয়ার বৃদ্ধি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। পারিবারিক ইতিহাস থাকলেও এই নিয়মগুলি অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি।
১. বাইরে খেলার সময় বাড়ান: প্রতিদিন অন্তত ১ থেকে ২ ঘণ্টা সূর্যের আলোতে বা প্রাকৃতিক পরিবেশে বাচ্চা যেন খেলাধুলা করে সেদিকে নজর দিতে হবে।
২. স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন: বাচ্চাদের মোবাইল ও ট্যাবের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করুন এবং ছোট শিশুদের এই ডিভাইসগুলি থেকে দূরে রাখুন।
৩. ২০-২০-২০ নিয়ম: প্রতি ২০ মিনিট স্ক্রিন বা বই দেখার পর, ২০ ফুট দূরে থাকা কোনও বস্তুর দিকে অন্তত ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন। এটি চোখের ক্লান্তি দূর করবে।
৪. সঠিক দূরত্ব বজায় রাখুন: বই পড়া বা স্ক্রিন দেখার সময় চোখ থেকে ৩০-৪০ সেন্টিমিটার দূরত্ব বজায় রাখুন।
৫. পর্যাপ্ত আলো: ঘরে বা পড়ার জায়গায় যেন পর্যাপ্ত আলো থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৬. নিয়মিত চোখের পরীক্ষা: পরিবারের মায়োপিয়ার ইতিহাস থাকলে, নিয়মিত বিরতিতে চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে চোখ পরীক্ষা করান।
