মাথায় উকুন? চুলের ক্ষতি তো হবেই দেখা যাবে এই সব সমস্যাও

উকুন নামক পরজীবী প্রাণীটির মাথায় হঠাৎ আগমন কিন্তু মোটেই লজ্জার বিষয় নয়।

মাথায় উকুন? চুলের ক্ষতি তো হবেই দেখা যাবে এই সব সমস্যাও
অথচ উকুন নামক পরজীবী প্রাণীটির মাথায় হঠাৎ আগমন কিন্তু মোটেই লজ্জার বিষয় নয়।

Nov 30, 2020 | 6:06 AM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: চুল পড়া, রুক্ষ চুল অথবা খুশকি নিয়ে সর্সমক্ষে আলোচনা করলেও মাথায় উকুন (Head Lice)  হয়েছে এ কথা জানাতেই লজ্জায় মুখ লাল হয়ে যায় আট থেকে আশির। অথচ উকুন নামক পরজীবী প্রাণীটির মাথায় হঠাৎ আগমন কিন্তু মোটেই লজ্জার বিষয় নয়। বরং প্রথম অবস্থাতেই এই সমস্যা না সারালে ফল হবে উল্টো। চুল তো নষ্ট হবেই একই সঙ্গে দেখা দেবে অন্য অনেক সমস্যাও।

কীভাবে হতে পারে?
উকুন লাফাতে পারে না। উড়তেও পারে না। একমাত্র ‘হেড টু হেড’ কানেকশনেই ছড়াতে পারে এই প্রাণী। সাধারণও পাব্লিক ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত করলে অথবা স্কুল-কলেজে বন্ধুদের মধ্যে কারও উকুন হলে সেখান থেকে আপনার মাথাতেও চলে আসতে পারে এই পরজীবী প্রাণীটি।

এ ছাড়াও উকুনের সমস্যায় জেরবার এমন কোনও ব্যক্তির ব্যবহৃত চিরুনি, হেয়ার ব্রাশ, তোয়ালে বা গামছা ব্যবহার করলেও সেখান থেকেও ছড়াতে পারে উকুন। কে বলতে পারে হয়তো কিছুক্ষণ আগেই ওই ব্যক্তি ওই তোয়ালে দিয়েই চুল মুছেছেন?


কী কী রোগ হতে পারে?
উকুন নিজে কোনও রোগের বাহক নয়। তবে তা দীর্ঘদিন মস্তিষ্কে বাসা বাঁধার ফলে মানবদেহে আনুষঙ্গিক নানা রোগের সৃষ্টি হতে পারে। যেমন-

⦁ মাথায় র‍্যাশ
উকুন তাঁর স্যালাইভা বা লালা ব্যবহার করে মানুষের মস্তিষ্ককে তাঁর বিচরণ ক্ষেত্র বানিয়ে ফেলে অতি কম সময়েই। উকুন স্ক্যাল্পে হেঁটে চলে বেরালে স্বভাবতই চুলকানোর অনুভূতির সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত চুলকোলে তা থেকে হতে পারে মস্তিষ্কের ত্বকের ইনফেকশান। মাথা ভরে যেতে পারে লাল লাল র‍্যাশে।

⦁ অনিদ্রা
উকুন স্ক্যাল্পে ঘুরে বেরালে শরীরে যে ধারাবাহিক অস্বস্তির সৃষ্টি হয় তা রাতের বেলা আপনার ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, যা থেকে আপনি ইনসমনিয়া বা অনিদ্রাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

⦁ হীনমন্যতা
মাথায় উকুন হয়েছে মানে সমাজের কাছে এখনও হাসির পাত্র বলে বিবেচিত হয় ব্যক্তি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই গ্রাস করে হীনমন্যতা। যা শারীরিক স্বাস্থ্যর অবনতি ঘটানোর পাশপাশি প্রভাব ফেলে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও।

⦁ চুল পড়া এবং রুক্ষ হয়ে যাওয়া
উকুনের কারণে চুলের গোড়া আলগা হয়ে অত্যধিক চুল পড়তে পারে। একই সঙ্গে চুলের স্বাস্থ্যও খারাপ হয়ে গিয়ে চুল রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।

 

কী করবেন?
⦁ বাজার চলতি অনেক ভাল ওষুধ পাওয়া যায়। ডাক্তারের পরামর্শ মতো সেই ওষুধ ব্যবহার করুন। লজ্জা পাবেন না। উকুন হওয়া অপরাধ নয়।
⦁ এ ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ভিনিগার। মনে রাখবেন, অ্যাসেটিক অ্যাসিড উকুনের বিষ। ভিনিগার ও বেবি অয়েল সম পরিমাণে মিশিয়ে নিন। এর পর তা ভাল করে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে আধ ঘণ্টা রেখে দিন। তার পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক বার অন্তত মাস দুই এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
⦁ লেবুর রসের সঙ্গে রসুন মিশিয়ে মাথায় লাগান। তোয়ালে জড়িয়ে আধ ঘণ্টা রাখুন। এর পর শ্যাম্পু করে নিন। উপকার পাবেন।
⦁ মাথায় ভাল করে তেল মাখুন। এর পর সরু চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ান। উকুন ঝরে যাবে। তবে নিট বা উকুনের ডিমের ক্ষেত্রে এই টোটকা খুব একটা কাজে লাগবে না। কারণ তা এতটাই শক্তভাবে চুলের সঙ্গে আটকে থাকে সরু চিরুনিতেও তা বাগে আনা সম্ভব হবে না।