বিয়ের আগে বহু মহিলাই রোগা, পাতলা গঠনের থাকে। বিয়ে করার পরই মহিলারা মোটা হলে অধিকাংশই বিশ্বাস করেন, স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের কারণেই মেয়েরা মোটা হতে শুরু করে। নিয়মিত সহবাস করলে উভয়ের স্বাস্থ্য ভাল থাকে, তা নিঃসন্দেহেই বলা যায়। কিন্তু মহিলাদের মোটা হওয়ার পিছনে এটিই প্রধান কারণ নয়। বিশেষজ্ঞদের কথায়, বিয়ের পর বেশিরভাগ মহিলার জীবনযাপন পরিবর্তন হওয়ার কারণে এই শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায়।
বিয়ের পর মেয়েদের স্থূল হয়ে যাওয়া ও ওজন বৃদ্ধির জন্য কতকগুলি কারণ রয়েছে, সেগুলি এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হল…
১. বিয়ের পর সব মেয়েদেরেই জীবনযাত্রা পাল্টে যায়। এক পরিবেশ থেকে অন্য পরিবেশে নিজের জীবনধারা প্রবাহিত করতে গিয়ে শরীরে হরমোনের নিঃসরণের পরিবর্তন ঘটে দ্রুত। ফলে শরীরে মেদ জমতে থাকে। সমীক্ষা বলছে, ৮২ শতাংশ মহিলার বিয়ের পাঁচ বছরের বৈবাহিক জীবনে অনেকটাই ওজন বৃদ্ধি ঘটে।
২. বিয়ের আগে বহু মহিলাই কড়া ডায়েট, যোগব্যায়ামের উপর নজর রাখতেন। কিন্তু বিয়ের পর অন্য পরিবেশে গিয়ে সেই অভ্যাসে ঘাটতি পড়ে। শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়ার ঘাটতি হলে মেদ বৃদ্ধি হতে থাকে ক্রমশ। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর খাবার, শ্বশুরবাড়িতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার নিরন্তর চেষ্টার ফাঁকে নিজের জন্য সময় বের করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
আরও পড়ুন: ত্বক ভাল রাখবেন কীভাবে? কিছু বাজে খাদ্যাভাসের বদল ঘটলেই মিলবে সুফল
৩. বিয়ের আগে বাবার বাড়িতে যে অভ্যাসে অভ্যস্ত ছিল, সেই অভ্যাস ও রীতি শ্বশুরবাড়িতে খাটে না। সংসারের কাজের জন্য রাতে ঘুম কম হওয়ায় শরীরে অপ্রয়োজনীয় মেদ জমতে থাকে। রাতের পর রাত না ঘুমানো, ঘুমতে যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট না হওয়ায় স্থূলতার দিকে এগোতে থাকে বিবাহিত মহিলারা। শুরু হয় বদহজমের সমস্যাও।
৪. জীবনসঙ্গীর সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে বা স্বামীর পরিবারের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে খাদ্যাভাসে পরিবর্তন ও খাওয়ার রুচি বদলের কারণে শরীরে বাড়তে থাকে মেদ।
৫. এছাড়া নববিবাহিত জীবনে বাড়ির বাইরে রেস্তোরাঁ বা জাঙ্ক ফুডের প্রতি আসক্তি জন্মায়। অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মশলাদার খাবার খাওয়ার ফলে বিয়ের পর মেয়েদের অতিরিক্ত মেদ জমতে শুরু করে।
৬. কাজ সেরে বাড়িতে ঘন্টার পর ঘন্টা টিভি বা ল্যাপটপের সামনে বসে থাকলে কোমর ও পেটে চর্বি জমতে থাকে। বাড়িতে গৃহিনীর কাজ সেরে টিভির সামনে বসে পর পর সিরিয়াল, সিনেমা দেখার অভ্যেস তৈরি হলে এই ওজন বৃদ্ধির ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাই বেশি।
৭. বিয়ের ২-৪ বছরের মধ্যে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করেন ভারতীয় নবদম্পতিরা। ফলে বিয়ের পর যে হারে মেদজমতে শুরু করে, সন্তানসম্ভবা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই মেদ কিছুটা চিরস্থায়ী হয়ে জমা থাকে শরীরে।