
প্রত্যেকের স্লিপ প্যাটার্ন এক হয় না। কেউ বা আর্লি টু বেড, আর্লি টু রাইজে বিশ্বাসী। আবার অনেকেরই ঘুম ভাঙতে দুপুর হওয়ার পরিস্থিতি। এর কারণও রয়েছে। অনেকেই থাকেন যাঁদের অনেক রাতে ঘুমনোর অভ্যেস। এমন পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছে যে সুযোগ থাকলেও তাড়াতাড়ি ঘুম আসে না। কারও হয়তো কাজের ধরনই এমন যে রাত জাগতে হয়। কেউ বা সিনেমা-ওয়েব সিরিজ কিংবা স্রেফ মোবাইল সার্ফিংয়ের নেশায় পড়ে অনেক রাত করে ঘুমোন। আবার এমন মানুষও আছেন যাঁদের ঘুমোতেই ভোর হয়ে যায়। নিশাচর বললেও যেন কম। কেউ কেউ আবার এই নিশাচর অভ্যেসে গর্ব অনুভব করেন। কিন্তু সত্যিই কি গর্ব করার মতো বিষয়? গবেষণার ফল জানলে অবশ্য গর্ব নয়, আতঙ্ক হবে।
সাইকিয়াট্রি রিসার্চ জার্নালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে স্ট্যানফোর্ড মেডিসিনের গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়েছে। তাঁদের ঘুমের পছন্দের টাইমিং, স্লিপ বিহেভিয়ার নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তার ফল কী হতে পারে সে সব তথ্যও রয়েছে। এরকম অনেকের মধ্যেই ধরা পড়েছে, তাঁরা বেশি রাত করে ঘুমোতেই পছন্দ করেন। বছরের পর বছর এই অভ্যেসেই চলেন।
গবেষণায় ধরা পড়েছে, যাঁরা বেশি রাতে ঘুমোনো পছন্দ করেন, তাঁদের মধ্যে মেন্টাল হেলথ সমস্যা এমনকি অবসাদ, অ্যাংজাটিও বাসা বাঁধে। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত সাইক্রিয়াটিস্ট জেমি জেইৎজারের কথা, ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হয় যারা বেশি রাতে ঘুমোয়।’ জেইৎজারের মতে, এই ধরনের মানুষের মধ্যে ক্ষতিকারক আচরণও ধরা পড়ে। সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। এ ছাড়াও, আত্মহত্যা, অপরাধমূলক কাজ, মদ্যপান, মাদক নেওয়া, অতিরিক্তি খাওয়ার খাবার ভাবনাও আসে। যাঁরা দ্রুত ঘুমোতে যান এবং সকাল সকাল উঠে পড়েন, তাঁরা মানসিক ভাবে অনেক ভালো জায়গায় থাকেন বলেই গবেষণায় ধরা পড়েছে।
অভ্যাস যেমন তৈরি হয়, তেমনই বদলানোও সম্ভব। এর জন্য একটি রুটিন তৈরি করা এবং সেই সময়ের অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগে থেকেই ঘুমনোর চেষ্টা করা, ধীরে ধীরে অভ্যেস বদলাতে সাহায্য করতে পারে। এমনকি ছুটির দিনেও সেই রুটিন মেনে চলতে হবে। একটা সময় গিয়ে লক্ষ্যপূরণ হবেই।
(এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র গবেষণার তথ্য প্রদানের জন্য। এমন সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন)